পিএসজি থেকে মাস্তানতুয়োনোকে 'হাইজ্যাক' করছে রিয়াল!

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আর্জেন্টাইন তরুণ তারকা ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনোকে দলে নেওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিল পিএসজি। আর্জেন্টিনায় সরাসরি আলোচনায় বসে বেশ ভালো অগ্রগতিও করেছিল তারা। তবে পরিস্থিতি হঠাৎ বদলে গেছে—পেছন থেকে এবার জোরালোভাবে ফিরে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ।

বছরখানেক আগে তরুণ এই আর্জেন্টাইনকে দলে নেওয়ার পথ প্রায় পরিষ্কার করে ফেলেছিল রিয়াল। কিন্তু হঠাৎই বদলে গিয়েছিল পুরো চিত্র। মাস্তানতুয়োনো তখন নতুন এক চুক্তিতে সই করেন, যার ফলে তার রিলিজ ক্লজ বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫ মিলিয়ন ইউরোতে। তাতে পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, রিয়াল কর্তৃপক্ষ কার্যত মুখ ফিরিয়ে নেয় এই প্রতিভাবান তরুণের কাছ থেকে।

এরপর অনেক মাস কেটে গেছে। মাঝে গুঞ্জন ওঠে—রিয়াল আবারও আগ্রহ দেখাচ্ছে মাস্তানতুয়োনোকে ঘিরে। কিন্তু ভালদেবেবাস (রিয়ালের ট্রেনিং কমপ্লেক্স) থেকে বারবার সেই দাবি নাকচ করে বলা হয়, 'আমরা তখনই ওকে দলে নেব, যখন ও আসলেই এই ক্লজের যোগ্য হয়ে উঠবে।' এই মন্তব্য এক মাস আগেও শোনা গেছে।

অন্যদিকে মাস্তানতুয়োনো নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন। বলের সঙ্গে তার দারুণ বন্ধুত্ব, আর খেলার মান তাকে করে তোলে আরও পরিপক্ব ও নজরকাড়া। ফলে তার উপর নজর পড়ে ইউরোপের জায়ান্ট ক্লাবদের। তার এজেন্টরা ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজির প্রস্তাব শোনেন। এমনকি অনেকেই ভাবতে শুরু করেন, মাস্তান্তুওনোর পরবর্তী গন্তব্য হয়তো প্যারিসই।

ঠিক তখনই পাল্টে গেছে পাশা। ফিরে এসেছে রিয়াল। তাতে স্বাভাবিকভাবেই এই তরুণ তারকাকে ঘিরে ইউরোপের এই দুই জায়ান্টের মধ্যে চলছে উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই। ১৭ বছর বয়সী এই প্রতিভাবান মিডফিল্ডারকে দলে ভেড়াতে দুটি ক্লাবই উঠে পড়ে লেগেছে, তবে এখনো কোনো চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি।

আর বিশ্বসেরা তরুণ প্রতিভাদের দলে ভেড়ানোর ক্ষেত্রে রিয়ালের ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ, আর মাস্তানতুয়োনোকে ঘিরেও তারা সেই নীতিতেই এগোচ্ছে। সম্প্রতি ক্লাবটির পক্ষ থেকে ফের যোগাযোগ শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে আগ্রহী ক্লাবটি।

দুই বছর আগে যেমনটা হয়েছিল আর্দা গুলারের ক্ষেত্রে—যখন সবাই ভাবছিলেন, তিনি বার্সায় যাচ্ছেন, তখনই রিয়াল মাদ্রিদের স্কাউটিং প্রধান জুনি কালাফাত মাঠে নামেন এবং পুরো পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেন। এবারও তিনি একইভাবে এগিয়ে এসেছেন এবং ইতোমধ্যেই খেলোয়াড়ের সম্মতি আদায় করে নিয়েছেন।

তবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে মাস্তানতুয়োনোর বর্তমান রিলিজ ক্লজ নির্ধারিত আছে ৪৫ মিলিয়ন ডলার। যেকোনো আগ্রহী ক্লাবকে এই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে তাকে দলে নিতে হবে—আর এই মূল্য পরিশোধের মতো সামর্থ্য দুই ক্লাবেরই রয়েছে।

পিএসজি যখন মনে করছিল প্রতিযোগিতা প্রায় জিতেই নিয়েছে, তখন রিয়ালের হঠাৎ আগমন পুরো দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, এই আর্জেন্টাইন তরুণের ভবিষ্যৎ গন্তব্য নিয়ে লড়াইটা হতে যাচ্ছে রীতিমতো নাটকীয়।

Comments