অবসরে যাচ্ছেন ভারতের কিংবদন্তি ফুটবলার সুনীল ছেত্রি

সুনীল ছেত্রির উত্থান কলকাতা শহর থেকেই। সেই শহরেই নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি খেলবেন এই ফরোয়ার্ড। কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার এবং ২০২৭ সালের এশিয়ান কাপের বাছাই-পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে কুয়েতের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটিই এই কিংবদন্তির শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

সামাজিকমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে বৃহস্পতিবার সকালে বিদায়ের কথা জানিয়েছেন সুনীল। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে ভারতের হয়ে ১৪৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখানে গোল করেছেন ৯৪টি। বর্তমানে যে সকল ফুটবলাররা এখনও খেলছেন, তাদের মধ্যে গোলের তালিকায় তার সামনে রয়েছেন কেবল ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এবং লিওনেল মেসি।

সামাজিকমাধ্যমে সুনীল লিখেছেন, 'একটা দিন জীবনে কোনও দিন ভুলতে পারব না। যে দিন দেশের জার্সি গায়ে প্রথম বার ভারতের হয়ে খেলতে নেমেছিলাম। অবিশ্বাস্য অনুভূতি। তবে তার আগের দিন সকালে জাতীয় দলে আমার প্রথম কোচ সুখী স্যর (সুখবিন্দর সিংহ) এসে আমাকে জানিয়েছিলেন, প্রথম একাদশে আমি রয়েছি। বলে বোঝাতে পারব না সেই অনুভূতি কেমন ছিল।'

'জার্সি প্রথম হাতে পাওয়ার পর তাতে কিছুটা সুগন্ধি ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। জানি না কেন। সেই দিন যা যা হয়েছিল, প্রাতরাশ থেকে মধ্যাহ্নভোজের টেবিলের কথাবার্তা, ম্যাচে আমার মাঠে নামা এবং অভিষেক ম্যাচেই গোল, তার পরে ৮০ মিনিটে গোল হজম করা, জাতীয় দলে আমার যাত্রা শুরুর প্রথম দিনের এই ঘটনাগুলোর কথা কোনও দিন ভুলতে পারব না,' যোগ করেন সুনীল।

একই সঙ্গে দেশের হয়ে খেলায় আনন্দের সঙ্গে চাপের কথাও উল্লেখ করেন এই ফরোয়ার্ড, 'গত ১৯ বছরে অসহ্য চাপ এবং দেশের হয়ে খেলার আনন্দ, দুটোই আমার সঙ্গে সব সময় ছিল। ব্যক্তিগত ভাবে আমি কোনো দিন ভাবতে পারিনি দেশের হয়ে এত গুলো ম্যাচ খেলব, ভাল হোক বা খারাপ, এত কিছু করতে পারব। এখন আমি সেটা পেরেছি। গত এক-দেড় মাসে আমি সেটা পেরেছি এবং খুব অদ্ভুত লেগেছে। হয়তো করতে পেরেছি কারণ, আমি বুঝতে পেরেছিলাম পরের ম্যাচটা আমার শেষ ম্যাচ হতে চলেছে।'

২০০৫ সালে ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় সুনীলের। পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচেই গোল আন। ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন তিনিই। ২০১১ সালে অর্জুন এবং ২০১৯ সালে পদ্মশ্রী পান এই তারকা ফুটবলার। ২০২১ সালে প্রথম ভারতীয় ফুটবলার হিসেবে খেলরত্ন পুরস্কার তিনি। যা ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া পুরস্কার।

Comments