হংকংয়ে মেসি না খেলায় চীনে আর্জেন্টিনার দুটি প্রীতি ম্যাচই বাতিল
ইন্টার মায়ামির হয়ে হংকংয়ের নির্বাচিত একাদশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে খেলেননি লিওনেল মেসি। সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে আলোড়ন। জল এতটা দূরেই গড়িয়েছে যে, আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের দুটি প্রীতি ম্যাচ বাতিল করেছে চীন। সেখানে নাইজেরিয়া ও আইভরিকোস্টের বিপক্ষে খেলার কথা ছিল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
আগামী ১৮ মার্চ হাংঝুতে নাইজেরিয়া ও ২৬ মার্চ বেইজিংয়ে আইভরিকোস্টের মুখোমুখি হওয়ার সূচি ছিল আলবিসেলেস্তেদের। কিন্তু পরিবর্তিত অবস্থার প্রেক্ষিতে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। শনিবার বেইজিং ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, 'লিওনেল মেসির যে ম্যাচটিতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল, সেই ম্যাচটি এই মুহূর্তে আয়োজনের পরিকল্পনা নেই বেইজিংয়ের।'
অন্য ম্যাচটি বাতিলের ঘোষণা আসে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যাতেই। হাংঝু স্পোর্টস ব্যুরো জানায়, 'বর্তমান পরিস্থিতিতে (যা সবাই জানে) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতে, প্রীতি ম্যাচটি আয়োজনের জন্য যথাযথ পরিবেশ নেই। সেকারণে ম্যাচটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।'
গত রোববার হংকংয়ে একটি প্রাক-মৌসুম প্রীতি ম্যাচ খেলে মায়ামি। সেখানকার নির্বাচিত একাদশকে তারা ৪-১ গোলে হারালেও মেসি মাঠে নামেননি। পরবর্তীতে আর্জেন্টাইন অধিনায়কের না খেলার কারণ হিসেবে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কথা জানায় মায়ামি কর্তৃপক্ষ। তিনদিন পরই জাপানে আরেকটি প্রীতি ম্যাচে ভিসেল কোবেকে মোকাবিলা করে মায়ামি। সেদিন এমএলএসে ক্লাবটির পক্ষে শেষ ৩০ মিনিট খেলেন ৩৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
এতে আগে থেকেই তেতে থাকা হংকংয়ের ফুটবলপ্রেমীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। কারণ মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে তারা গিয়েছিলেন মাঠে। ৩৯ হাজার ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট হংকং স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য ছিল এক হাজার হংকং ডলার (১২৫ আমেরিকান ডলার বা ১৩ হাজার ৭২২ টাকা)।
মেসি খেলতে নামবেন না বুঝতে পেরে ম্যাচ চলাকালীনই হংকংয়ের ভক্ত-সমর্থকরা তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। হতাশ ও ক্ষিপ্ত হয়ে তারা দুয়ো দেন মেসি ও মায়ামির অন্যতম মালিক ডেভিড বেকহ্যামকে। শেষ বাঁশি বাজার পর দুয়োর আওয়াজে কান পাতা দায় হয়ে যায়। সেসময় মাঠে ঢুকে সাবেক ইংলিশ তারকা ফুটবলার বেকহ্যাম দর্শকদের স্টেডিয়ামে আসার জন্য ধন্যবাদ জানালে শোরগোলের পারদ আরও উঁচুতে ওঠে। বৃদ্ধাঙ্গুলি নিচের দিকে ধরার অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নিজেদের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটান তারা।
এরপর চোটের জন্য হংকংয়ে খেলতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন মেসি। মায়ামিও একই পথে হাঁটে। এছাড়া, প্রীতি ম্যাচটির আয়োজক ট্যাটলার এশিয়ার কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায় হংকং সরকার। ট্যাটলার টিকিটের দামের ৫০ শতাংশ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। কিন্তু উত্তপ্ত পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। সেটারই প্রভাব পড়েছে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচগুলোর ওপর।
আগামী জুন-জুলাইতে অনুষ্ঠেয় কোপা আমেরিকাকে সামনে রেখে প্রস্তুতির জন্য দুটি প্রীতি ম্যাচ দুটি খেলার কথা ছিল আর্জেন্টিনার। সেগুলো বাতিল হওয়া নিঃসন্দেহে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য।
Comments