এলিটার 'পরবর্তী স্বপ্ন' বাংলাদেশের হয়ে যত বেশি সম্ভব গোল করা

ছবি: শেখ নাসির

অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এসেছে বহুল প্রতীক্ষিত অভিষেক। গত শনিবার প্রীতি ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে প্রথমবার মাঠে নেমে ইতিহাস গড়েছেন নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত স্ট্রাইকার এলিটা কিংসলে। স্বপ্ন পূরণ করার রোমাঞ্চে পরের রাতে ভালো ঘুমও হয়নি তার। কারণটা সহজেই অনুমেয়। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে তোলার অনির্বচনীয় স্বাদ যে পেয়েছেন এলিটা! তবে আরও মধুর হতে পারত তার অভিজ্ঞতা। যদি না সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিশেলসের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে পাওয়া সুবর্ণ সুযোগটি তিনি হাতছাড়া করতেন! তবে অভিষেকে গোল না পাওয়ার পেছনে নিজের ব্যর্থতার চেয়ে মাঠের বেহাল দশাকে দায়ী করেছেন তিনি।

বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার স্বপ্ন পূরণের পরদিন রোববার দ্য ডেইলি স্টারের আনিসুর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন এলিটা। আলাপের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য:

দ্য ডেইলি স্টার: লাল-সবুজ জার্সিতে খেলার স্বপ্ন পূরণ হওয়ার পর আপনার কি ঘুম ভালো হয়েছিল?

এলিটা কিংসলে: আমি ঘুমাতে পারিনি কারণ, আমি অনেক কিছু নিয়ে ভাবছিলাম। সাধারণত যখন আপনি সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটান, পরবর্তী রাতে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে।

স্টার: বহুল প্রতীক্ষিত অভিষেকের পর এখন কেমন লাগছে?

এলিটা: অবশেষে, আমি এটা পেরেছি। জাতীয় দলে পাওয়া এই সুযোগ নিয়ে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। স্বপ্ন পুরোপুরি সার্থক হতো যদি আমি (গোল করার) প্রথম সুযোগটা কাজে লাগাতে পারতাম। 

স্টার: আপনার একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন সামনে কী রয়েছে?

এলিটা: (বাংলাদেশ) জাতীয় দলের হয়ে যত বেশি সম্ভব গোল করা আমার পরবর্তী স্বপ্ন কারণ, (এক পর্যায়ে গিয়ে) ফিরে তাকিয়ে গুণতে চাই যে একজন স্ট্রাইকার হিসেবে আমার দেশের হয়ে আমি কত গোল করেছি।

স্টার: অভিষেক ম্যাচে মাঠে নামার পর গোলের প্রথম সুযোগ পেয়ে আপনি কি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন?

এলিটা: আমি দুর্ভাগা ছিলাম, কারণ বলটি মাটিতে পড়ে লাফিয়ে উঠেছিল। আমি মাঠকে দায়ী করব যেটি প্রত্যাশিত আন্তর্জাতিক মানের ছিল না। আমি কিছুটা নার্ভাসও ছিলাম কারণ, প্রথমবারের মতো (জাতীয় দলের) জার্সি পরা এবং একইসঙ্গে একটি গোল করা খুব চাপের। তবে আপনি যদি আমাকে (এসব না ভেবে) স্রেফ খেলতে বলেন, আমি গোল করব।

স্টার: আপনার পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে নাইজেরিয়াতে আপনার মায়ের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

এলিটা: আমার স্ত্রী ও মেয়ে এখানে আমার প্রথম ম্যাচ দেখতে এসেছে এবং আমার স্বপ্ন পূরণ করেছে। আমি আমার মা ও ভাইদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সবাই খুশি।

স্টার: যখন ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন, তখন কি আপনি নাইজেরিয়া জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখেছিলেন?

এলিটা: হ্যাঁ, আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম। একজন নাইজেরিয়ান হিসেবে আমার সেখানকার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ ছিল, কিন্তু (খেলোয়াড়) বাছাইয়ে আমি বাদ পড়ে যাই। আমি খুব হতাশ হয়ে পড়ি এবং (নাইজেরিয়ার) বাইরে গিয়ে ফুটবল খেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।

স্টার: আপনি কি কখনো একজন বাংলাদেশিকে বিয়ে করে এখানকার নাগরিক হওয়ার এবং জাতীয় দলে খেলার কথা ভেবেছিলেন?

এলিটা: ২০১২ সালে বিয়ে করলেও আমি ২০১৫ সালের আগে কখনোই ভাবিনি যে আমি বাংলাদেশি নাগরিক হব। যাই হোক, যখন আমি শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ (চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে) জিতেছিলাম, তখন আমি বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে মাঠের চারপাশে দৌড়েছিলাম ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে। সেই মুহূর্তে আমার স্ত্রী (লিজা জাফর) আমাকে বলছিল যে আমি হয়তো সত্যি সত্যি (একজন বাংলাদেশি হিসেবে) এমনটি করতে চাই এবং এভাবেই আমার যাত্রা শুরু হয়।

স্টার: ৩৩ বছর বয়সে ফুটবল খেলা কতটা চ্যালেঞ্জিং?

এলিটা: হ্যাঁ, (চ্যালেঞ্জিং)। তবে আমার ক্ষেত্রে, আমাকে নিজের অভিজ্ঞতার ওপর উপর নির্ভর করতে হবে। কোচ (হাভিয়ের কাবরেরা) যতক্ষণ আমাকে বলবেন যে আমি বলসহ ও বল ছাড়া দলকে সমর্থন করছি, আমি মনে করি, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট।

স্টার: গত পাঁচটি সংস্করণে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার পর বাংলাদেশ কি আসন্ন সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে কিছু আশা করতে পারে?

এলিটা: কোচের সঙ্গে আমার প্রথম সাক্ষাতে আমরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে অনেক কথা বলেছিলাম। আমরা এবার শুধু সাফে অংশ নেওয়া এবং গ্রুপ পর্ব পার হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে চাই না, আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে চাই।

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB buys $313m more from 22 banks

The cut-off rate was Tk 121.5 per US dollar

1h ago