শ্রীলঙ্কাকে গুঁড়িয়ে রেকর্ড জয়ে সমতা টানল বাংলাদেশ

অধিনায়ক লিটন দাসের নজরকাড়া ফিফটি ও শামীম হোসেনের আগ্রাসী ইনিংসে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি মিলল বাংলাদেশের। লক্ষ্য তাড়ায় পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট খুইয়ে ফেলা শ্রীলঙ্কাকে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো পথ খুঁজে নিতে দিল না তারা। রিশাদ হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে টাইগাররা তুলে নিল রেকর্ড জয়।
রোববার ডাম্বুলায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটে-বলে দাপট দেখিয়ে ৮৩ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৭ রান তোলে তারা। জবাব দিতে নামা স্বাগতিকরা ১৫.২ ওভারে মাত্র ৯৪ রানে অলআউট হয়। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা টেনেছে সফরকারীরা।
রানের হিসাবে কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। আগের কীর্তিটি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। গত বছররের ডিসেম্বরে কিংসটাউনে ক্যারিবিয়ানদের ৮০ রানে হারিয়েছিল তারা।
সব মিলিয়ে এই সংস্করণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়ের নজির এটি। রানের হিসাবে তাদের সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ডটি হয়েছিল ২০২১ সালের অক্টোবরে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আল আমেরাতে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ৮৪ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।
শুধু তাই নয়। দেশের বাইরে এই প্রথম কোনো টেস্ট খেলুড়ে দলকে টি-টোয়েন্টিতে একশর নিচে অলআউট করতে পারল টাইগাররা। অতীতে নিউজিল্যান্ড (দুবার), অস্ট্রেলিয়া (একবার) ও আফগানিস্তানকে (দুবার) তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই থামিয়েছিল তারা। সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঘরের মাঠে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে।
লঙ্কানদের মাত্র দুই ব্যাট দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেন। ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন ২৯ বল খেলে। ছয়ে নামা দাসুন শানাকার ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ২০ রান। ৩০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর পঞ্চম উইকেটে তারা দুজন যোগ করেন ৩১ বলে ৪১ রান।
নিসাঙ্কাকে স্টাম্পড করিয়ে ওই জুটি ভাঙা রিশাদ এদিন বাংলাদেশের সফলতম বোলার। এই লেগ স্পিনার ৩.২ ওভারে ১৮ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। একাদশে ফেরা বাঁহাতি পেসার শরিফুল ১২ রানে পান ২ উইকেট। পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন সমান সংখ্যক উইকেট শিকার করেন ২১ রানে। এছাড়া, মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট দখল করেন। বাকিটি রানআউট।
রান তাড়ায় আক্রমণাত্মক শুরু করে শ্রীলঙ্কা। ১১ বলে ১৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে কুসল মেন্ডিসের বিদায়ে। পয়েন্টে ঠেলে সিঙ্গেল নেওয়ার চেষ্টায় শামীমের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে পাওয়া এই ব্রেক থ্রু কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষকে চেপে ধরে বাংলাদেশ।
পরের ওভারে বিপজ্জনক কুসল পেরেরাকে সাজঘরে পাঠান শরিফুল। পয়েন্টে রিশাদের তালুবন্দি হওয়া পেরেরা পারেননি ৪ বল খেলে রানের খাতা খুলতে। চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ তুলে বেঁচে যাওয়া আভিশকা ফার্নান্দোকে পরের ওভারে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান শরিফুল। ডিপ স্কয়ার লেগে সীমানার কাছে ক্যাচ নেন শামীম।
ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে ফিরে সাফল্যের দেখা পান সাইফউদ্দিন। তার বলে উইকেটের পেছনে লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কা তালুবন্দি হন লিটনের। শুরুতে অবশ্য আউটের সিদ্ধান্ত দেননি মাঠের আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে সফলতা মেলে বাংলাদেশের।
বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টায় ছিলেন নিসাঙ্কা ও শানাকা। কিন্তু রিশাদের ঘূর্ণিতে মাত্র ২৩ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। একাদশ ওভারে নিসাঙ্কার পর ফিরতি ক্যাচে চামিকা করুনারত্নেকে সাজঘরে পাঠান তিনি। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজকে ছক্কা মারার চেষ্টায় সীমানার কাছে তানজিদ হাসান তামিমের হাতে ধরা পড়েন শানাকা।
সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হন জেফ্রি ভ্যান্ডারসে। মোস্তাফিজ পান মাহিশ থিকশানার উইকেট। আর ১৬তম ওভারে বিনুরা ফার্নান্দোকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন রিশাদ। ফলে দলীয় একশ স্পর্শ করার আগেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
ম্যাচের প্রথম অংশের রিপোর্ট পড়ুন এখানে:
Comments