ইতিহাস গড়া ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা র্যাঙ্কিংয়ে মুল্ডার

কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার চারশ রানের রেকর্ডকে হুমকিতে ফেলে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার ভিয়ান মুল্ডার। যদিও শেষ পর্যন্ত সে রেকর্ড ভাঙার চেষ্টাই করেননি। তবে টেস্ট ক্রিকেটে ইতিহাস গড়ে নিজেকে নতুন উচ্চতায় তুলে ধরেছেন এই অলরাউন্ডার। একই সঙ্গে ক্যারিয়ার সেরা র্যাঙ্কিংয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ফিরেছেন ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুক।
বুলাওয়েও টেস্টে মুল্ডারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬৭ রানের অপরাজিত এক মহাকাব্যিক ইনিংস, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। বল হাতে নিয়েছেন আরও ৩ উইকেট। দুই ম্যাচের সিরিজে তার মোট রান ৫৩১ এবং উইকেট ৭টি। এই পারফরম্যান্সের পর আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে মুল্ডার ব্যাটিংয়ে উঠে এসেছেন ৩৪ ধাপ এগিয়ে ২২তম স্থানে। আর বোলিংয়ে তিনি এখন ৪৮তম। আর অলরাউন্ডারদের মধ্যে উঠে এসেছেন তৃতীয় স্থানে। তার ওপরে কেবল রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ।
ব্রুক ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে ১৫৮ রানের ইনিংস খেলে আইসিসি টেস্ট ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে এসেছেন। তিনি ৮৮৬ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে নিজেরই দেশের সাবেক অধিনায়ক জো রুটকে পেছনে ফেলেছেন, যিনি টানা ছয় মাস শীর্ষে ছিলেন। ব্রুক এর আগে একবার মাত্র এক সপ্তাহের জন্য শীর্ষস্থানে ছিলেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে।
তবে এই টেস্টের মূল নায়ক ছিলেন ভারত অধিনায়ক শুবমান গিল। টেস্ট ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে তিনি দুই ইনিংসে ১৫০-এর বেশি রান করেছেন (২৬৯ ও ১৬১), আর ৪৩০ রানের এই রেকর্ড গড়া ইনিংস তাকে এক লাফে ১৫ ধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছে ক্যারিয়ার সেরা ৬ষ্ঠ স্থানে। সিরিজ শুরুর আগে গিল ছিলেন ২৩তম অবস্থানে, আর তার আগের সেরা র্যাঙ্কিং ছিল ১৪।
এই ম্যাচে ভারতের অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাও ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ৮৯ ও ৬৯ রানের দুটি ইনিংস তাকে ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে এনে দিয়েছে ছয় ধাপ অগ্রগতি, বর্তমানে তিনি ৩৯তম। ইংল্যান্ডের তরুণ ব্যাটার জেমি স্মিথ প্রথম ইনিংসে ১৮৪ রানে অপরাজিত থাকার পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ৮৮ রান, ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে বিশাল লাফ দিয়ে প্রথমবারের মতো শীর্ষ ১০-এ প্রবেশ করেছেন।
ভারতের দুই পেসারও এই টেস্টের পর র্যাঙ্কিংয়ে বড় উন্নতি করেছেন। মোহাম্মদ সিরাজ, যিনি ম্যাচে নেন সাত উইকেট, উঠে এসেছেন ২২তম স্থানে। আর অভিষেকে ১০ উইকেট নেওয়া আকাশ দীপ এক লাফে ৩৯ ধাপ এগিয়ে পৌঁছেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৪৫তম স্থানে।
এদিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার গ্রেনাডা টেস্ট থেকেও র্যাঙ্কিংয়ে কিছু পরিবর্তন এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার ক্যামেরন গ্রিন ও বো ওয়েবস্টার ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে যথাক্রমে ৪৫ ও ৫০তম স্থানে উঠেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রস্টন চেজ চার ধাপ এগিয়ে ৮১তম এবং ব্র্যান্ডন কিং বিশাল ৬০ ধাপ লাফিয়ে এখন ৮৩তম। বোলারদের মধ্যে শামার জোসেফ ও আলজারী জোসেফ দুজনই এগিয়েছেন ছয় ধাপ করে—তাদের বর্তমান অবস্থান যথাক্রমে ২৯তম ও ৩১তম।
টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়েও এসেছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের পর শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কা ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে বড় অগ্রগতি করেছেন। প্রথম ম্যাচে ১০৬ রান করে আসালাঙ্কা উঠে এসেছেন ষষ্ঠ স্থানে, আর সিরিজের শেষ ম্যাচে ১২৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে কুশল মেন্ডিস প্রথমবারের মতো শীর্ষ ১০-এ প্রবেশ করেছেন।
এছাড়া শ্রীলঙ্কার জনিত লিয়ানাগে ৭ ধাপ এগিয়ে ৪৪তম এবং বাংলাদেশের তৌহিদ হৃদয় ৭ ধাপ এগিয়ে ৫১তম স্থানে এসেছেন। বোলারদের মধ্যে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ১১ ধাপ এগিয়ে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে অষ্টম স্থানে ফিরেছেন। দীর্ঘদিন পর আবারও শীর্ষ ১০-এ জায়গা করে নিয়েছেন এই লেগ-স্পিনার।
Comments