বিসিবি সভাপতি পদে আবার বদল আসছে?

ফারুক আহমেদ আর বিসিবি সভাপতি থাকছেন কিনা এই আলোচনা এখনো তুঙ্গে। এই গুঞ্জন স্রেফ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়ার অবস্থা নেই। মাত্র ৯ মাসের মাথায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)'র শীর্ষ পদে আবার বদল আসার জোরালো সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে ফারুককে সরে যেতে বলা হয়েছে, তার জায়গায় দায়িত্ব নেওয়ার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের পছন্দ সাবেক অধিনায়ক ও আইসিসি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

গত বছর ৫ অগাস্ট দেশের ক্ষমতার পালাবদলের স্রোতে বিসিবিতে আসে বদল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাউন্সিলর হয়ে বিসিবিতে পরিচালক হয়ে ২১ অগাস্ট সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক, শেষ হয় নাজমুল হাসান পাপনের অধ্যায়। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এই পদে ফারুকেরই থাকার কথা। তবে নির্বাচনে লড়াই করার ঘোষণার পাশাপাশি সম্প্রতি নানা বিষয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে তার।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) সফলভাবে আয়োজন করতে না পেরে অনেকগুলো বিতর্কের জন্ম দেয় ফারুকের বোর্ড। তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়েও খবর বের হয়। জাতীয় দলের পারফরম্যান্সও খারাপ হওয়ায় প্রবল চাপে পড়ে গেছেন তিনি।

একটি সূত্রের খবর, বুধবার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ফারুককে বিসিবির শীর্ষে পদে তারা আর চান না। এক্ষেত্রে ফারুক যদি স্বেচ্ছায় পদ ছেড়ে দেন তাহলে সহজেই বদল হয়ে যাবে। যেহেতু তিনি ক্রীড়া পরিষদের কাউন্সিলর মনোনীত হয়ে বিসিবিতে এসেছেন, ক্রীড়া পরিষদ চাইলে তার কাউন্সিলরশিপ বাতিল করতে পারে। এর আগে আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববির বেলাতেও দেখা গেছে তেমনটি।

ফারুক সরে গেলে ক্রীড়া পরিষদই আবার তার জায়গায় আমিনুলকে মনোনীত করে বিসিবিতে নিয়ে আসতে পারে, সরকারের ইশারা থাকলে পরিচালনা পর্ষদের সভায় আমিনুলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়াও বাংলাদেশের বাস্তবতায় সহজ সমীকরণ। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান। তার বিসিবিতে আসা প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে দুদিন আগে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলছিলেন, 'আমি আইসিসিতে চাকরি করি, সেখানে আমার একটা কমিটমেন্ট আছে। আমাকে কেউ বিসিবির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। আমি পারিবারিক কাজে ঢাকায় এসেছি'। তবে গত রাতে আবার তার সঙ্গে একই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি চলমান রটনা এবার আর উড়িয়ে দেননি। এবার আর কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

বুলবুল সভাপতি নির্বাচিত হলে তিনি আইসিসির চাকরি ছেড়ে আসবেন নাকি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত সভাপতি থাকতে ছুটি নেবেন তা নিয়েও আছে জল্পনা।

ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনায় ফারুক অবশ্য নির্বাচন না করার শর্তে নির্বাচন পর্যন্ত সভাপতি থাকতে চাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। ৩১ মে বিসিবির জরুরি সভার আগেই বিষয়গুলোর জট খুলে যেতে পারে। ঈদের আগেই বিসিবিতে আরেকটা পালাবদল এখন আর অসম্ভব কিছু নয়।

তবে, আরেকবার এমন পালাবদল হলে সরকারি হস্তক্ষেপের বিষয়টিও সামনে আসবে। আইসিসির গাইডলাইন অনুযায়ী কোন সরকার নির্বাচিত কোন বোর্ডে বদল আনতে পারে না। সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়েকে ক্রিকেট বোর্ড আইসিসির সাময়িক নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলো। তবে কৌশলে ফাঁকফোকর গলিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপের বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে। যেমনটা অগাস্ট মাসেও করতে দেখা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Made with US cotton? Pay less at US customs

US customs will apply a tariff rate only to the non-American portion of a product's value

10h ago