কুসল-রাজার উত্তাল ব্যাটে চ্যাম্পিয়ন সাকিব-রিশাদ-মিরাজদের লাহোর

ছবি: এএফপি

শেষ ২০ বলে জয়ের জন্য ৫৭ রান দরকার ছিল লাহোর কালান্দার্সের। কুসল পেরেরা ও সিকান্দার রাজার উত্তাল ব্যাটে চড়ে ১ বল বাকি থাকতে সেই কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে ফেলল তারা। কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের দুইশ ছাড়ানো পুঁজি পেরিয়ে পিএসএলের শিরোপা জিতল দলটি।

রোববার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের জমজমাট ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে ৬ উইকেটে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে লাহোর। পিএসএলের সবশেষ চার মৌসুমে এটি তাদের তৃতীয় শিরোপা। এর আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালের আসরে টানা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দলটি।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ২০১ রান তোলে কোয়েটা। জবাবে ১৯.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৪ রান করে জয় নিশ্চিত করে লাহোর। ২ বলে ২ রানের সমীকরণ থাকা অবস্থায় ডিপমিডউইকেট দিয়ে চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দেন রাজা। আগের বলেই তিনি ছক্কা হাঁকিয়ে খেলা লাহোরের মুঠোয় নিয়ে এসেছিলেন।

সফলভাবে বড় লক্ষ্য তাড়ার মূল নায়ক অবশ্য চারে নামা লঙ্কান ব্যাটার কুসল। আগ্রাসী ইনিংস খেলে তিনি অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। ২৮ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ৩১ বল মোকাবিলায় মারেন পাঁচটি চার ও চারটি ছক্কা। অন্যদিকে, আগের দিন জিম্বাবুয়ের হয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট খেলে বিমানে চেপে এদিন টসের স্রেফ ১০ মিনিট আগে পাকিস্তানে পৌঁছান রাজা। এরপর পিএসএলের ফাইনালেও নেমে পড়ে ব্যাটিংয়ে তাণ্ডব চালান তিনি। ৭ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় করেন অপরাজিত ২২ রান। তাদের অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে মাত্র ১৯ বলে ৫৯ রান।

লাহোরের রোমাঞ্চকর জয়ের ফলে বিদেশের মাটিতে প্রথমবার ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে গিয়েই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ মিলল রিশাদ হোসেনের। যদিও ফাইনালে বল হাতে খরুচে ছিলেন বাংলাদেশের লেগ স্পিনার। ৪ ওভারে ৪২ রান খরচায় তার শিকার ১ উইকেট। সব মিলিয়ে অবশ্য টুর্নামেন্টটি ভালো কেটেছে তার। ৭ ম্যাচে ওভারপ্রতি ৯.৩৩ গড়ে রান দিয়ে পেয়েছেন ১৩ উইকেট।

লাহোরের স্কোয়াডে ছিলেন বাংলাদেশের আরও দুজন ক্রিকেটার। তবে রিশাদ খেললেও সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ের একাদশে সুযোগ পাননি।

খুররম শাহজাদের করা ১৮তম ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকান কুসল। সব মিলিয়ে ওই ওভারে আসে ১৬ রান। কোয়েটার অভিজ্ঞ পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আমির ১৯তম ওভারে প্রায় সামলেই নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ দুটি ডেলিভারিতে লাগাম ধরে রাখতে পারেননি। চারের পর ছক্কা মেরে কুসল ৬ বলে ১৩ রানের সমীকরণ বানিয়ে ফেলেন।

শেষ ওভার করেন নিজের আগের ৩ ওভারে ১ উইকেট নিতে ৩৪ রান দেওয়া ফাহিম আশরাফ। প্রথমেই হয় ওয়াইড। তবে পরের ৩ বলে ওঠে কেবল ৪ রান। ফলে লাহোরের চাহিদা দাঁড়ায় শেষ ৩ বলে ৮ রানের। তা মেটানোর দায়িত্ব পড়ে রাজার কাঁধে, যিনি ১৭তম ওভারে ক্রিজে গিয়ে মুখোমুখি হওয়া প্রথম দুই বলেই আমিরকে হাঁকিয়েছিলেন যথাক্রমে চার ও ছক্কা। এবার তিনি করেন উল্টোটা। ছক্কার পর চার মেরে উল্লাসে মাতান দলকে।

লাহোরের হয়ে ব্যাটিংয়ে আরও দুজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ২৭ বলে একটি চার ও ছয়টি ছক্কায় করেন ৪৬ রান। তিনে নেমে আবদুল্লাহ শফিক চারটি চার ও একটি ছক্কায় খেলেন ২৮ বলে ৪১ রানের ইনিংস।

এর আগে কোয়েটাকে লড়াইয়ের পুঁজি দিতে চারে নামা হাসান নাওয়াজ করেন ৭৬ রান। ৪৩ বল খেলে তিনি মারেন আটটি চার ও চারটি ছক্কা। ফাহিম আশরাফ সাতে নেমে ৮ বলে ২৮ রান করেন। ইনিংসের শেষ ডেলিভারিতে আউট হওয়ার আগে মারেন দুটি চার ও তিনটি ছক্কা। তার কল্যাণে ২০তম ওভারে ২৩ রান আসায় দুইশ স্পর্শ করে দলের সংগ্রহ। যদিও শেষমেশ তা যথেষ্ট হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh RMG sector

RMG sector on edge as tariff talks make no headway

The diverging outcomes threaten to create a multi-tiered tariff landscape in Asia, placing nations like Bangladesh at a serious disadvantage in the US market.

12h ago