দায়িত্বের কারণে নাহিদাদের ঈদ এবার ভিন্ন 

Nahida AKter
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

কদিন পরই নারী বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে অংশ নিতে হবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে। কঠিন সেই লড়াইয়ে নামার আগে তাই ফুরসত খুব একটা নেই। ঈদের সময়ও মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চালু আছে ক্যাম্প। ঈদের আগের দিনও অনুশীলন করছেন নাহিদা আক্তাররা। দ্য ডেইলি স্টারকে এই ক্রিকেটার জানালেন দায়িত্ববোধের কারণেই এবার পরিবার থেকে দূরে ভিন্নরকম ঈদ করতে হচ্ছে তাদের 

নারী ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডব্লিউডিপিএল) মিস করার পর আপনার চোট থেকে সেরে উঠার প্রক্রিয়া কেমন চলছে?

নাহিদা আক্তার: আলহামদুলিল্লাহ, এখন ভালো বোধ করছি। বাছাইপর্বে খেলার জন্য ডব্লিউডিপিএল মিস করেছি, তাই সুস্থ হওয়াটা খুবই জরুরি ছিল।

ক্যাম্পের কারণে পরিবারের সাথে ঈদ মিস করা নিশ্চয়ই কঠিন।

নাহিদা আক্তার: অবশ্যই, একটা দুঃখবোধ কাজ করে। কিন্তু একজন পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে, এটা মেনে নিতে হবে। কোথায় থাকা উচিত, তা আমি ঠিক করতে পারি না। মনে আছে, ২০১৫ সালে যখন আমরা পাকিস্তানে গিয়েছিলাম, তখন আমাদের সাথে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল। ঈদের পরের দিনই আমাদের পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হয়েছিল, তাই আমরা এখানে একসাথে ঈদ উদযাপন করেছিলাম। ঈদের দিনগুলোতে পরিবারের সাথে না থাকতে পারাটা অবশ্যই দুঃখের বিষয়, তবে দলও আমাদের জন্য একটি পরিবার, তাই সেই দুঃখবোধটা বেশি দিন থাকে না।

Nahida Akter

দলের সঙ্গে থাকলে আপনারা কীভাবে ঈদ উদযাপন করেন?

নাহিদা আক্তার: সাধারণত, সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা পরিবারের সাথে ফোনে কথা বলি। তারপর এখানে সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করি। সাধারণত, আমরা সকালটা এভাবেই কাটাই। বিসিবিও এই বিশেষ দিনে আমাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করে, যাতে আমরা পরিবারের থেকে দূরে আছি বলে মনে না হয়। আমরা বেশিরভাগ সময় একসাথে ঈদ কাটাই এবং সন্ধ্যায় বাইরেও যেতে পারি।

দলে এমন কেউ আছেন যিনি আপনাদের জন্য রান্নাও করেন?

নাহিদা আক্তার: আগে, কিছু সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলেন যারা ঈদের দিন আমাদের জন্য রান্না করতেন। ২০১৫ সালে, সিনিয়র আপুরা আমাদের জন্য রান্না করে এমনভাবে আপ্যায়ন করেছিলেন যে আমাদের মনে হয়নি আমরা পরিবারের থেকে দূরে আছি।

জুনিয়ররা সম্ভবত আপনার কাছ থেকেও একই প্রত্যাশা করবে।

নাহিদা আক্তার: আগে, সিনিয়রদের আমাদের সালামি দিতে হতো (ঈদের সময় দেওয়া একটি ঐতিহ্যবাহী উপহার, বিশেষ করে বড়দের কাছ থেকে ছোট সদস্যদের), কিন্তু এখন আমাদের জুনিয়রদের দিতে হয়। সালামি পেতে ভালো লাগে, তবে দিতে আরও বেশি ভালো লাগে। যেহেতু আমরা এখন ভালো আয় করছি, তাই আমার পরিবারের সদস্য এবং সতীর্থদের ঈদের উপহার ও সালামি দিতে পেরে আমি বেশি খুশি হই।

এখন যেহেতু আপনি একজন তারকা হয়ে উঠেছেন, আপনার শৈশবের ঈদের দিনের থেকে এখনকার ঈদ কতটা আলাদা?

নাহিদা আক্তার: আগে, আমার কোনো কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হতো না। আমি বেশিরভাগ সময় পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের বাড়িতে গিয়ে এবং তাদের কাছ থেকে সালামি নিয়ে ঈদ উদযাপন করতাম। বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরিও করতাম। কিন্তু এখন, এই পেশায় থাকার কারণে, আমি প্রায়ই একই কাজ করার সুযোগ পাই না। ঈদ মাত্র দুই দিনের জন্য হয়, কিন্তু আমরা বাড়িতে যেতে পারি না। তাই, পেশাদার পরিবেশে, ইচ্ছা থাকলেও আমরা এটা করতে পারি না। কিছুটা দুঃখ আছে, তবে এটা আমাদের জন্য স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এখন আমরা সবাই বড় হয়েছি এবং আমাদের পরিবার, বন্ধু এবং দলের জন্য আমাদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।

আপনার প্রিয় ঈদের ঐতিহ্য কী?

নাহিদা আক্তার: ঈদের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো, যখন আমার বাবা ও দুই ভাই ঈদের নামাজে যান, এবং আমি তাদের গোসলের পর পাঞ্জাবি ও টুপি গুছিয়ে রাখি। তারা নতুন জামাকাপড় ও জুতা পরে ঈদের নামাজে যান, এবং আমার মা, বোনেরা ও আমি তাদের ঈদগাহে যেতে দেখি। ঈদের এটাই আমার সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক অংশ। যখন আমি পরিবারের সঙ্গে থাকি না, তখন সেই মুহূর্তটা খুব মিস করি।

Comments

The Daily Star  | English
govt employees punishment rule

Govt employees can now be punished for infractions within 14 working days

Law ministry issues ordinance amending the Public Service Act, 2018

2h ago