প্রথম টি-টোয়েন্টি

বিজয় দিবসের দিনে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে জিতল বাংলাদেশ

৬১ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিলো বাংলাদেশ, মনে হচ্ছিলো আসতে যাচ্ছে অনায়াসে জয়।  এরপর বদলে যায় ম্যাচের ছবি, বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে খাদের কিনার থেকে দলকে টেনে তুলে উল্টো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেন রভম্যান পাওয়েল। তবে শেষ ওভারে আবার ঘুরে যায় মোড়, দারুণ রোমাঞ্চ জাগিয়ে ম্যাচ জিতে নিল বাংলাদেশ। 

সেন্ট ভিনসেন্টের আর্নস ভেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার বাংলাদেশ সময় সকালে শুরু হওয়া ম্যাচে আগে ব্যাট করে ১৪৭ রান করে লিটন দাসের দল। রান তাড়ায় শেষ ওভারে ১৪০ রানে অলআউট হয় ক্যারিবিয়ানরা। 

শেষ ওভারে ম্যাচ জিততে ১০ রান দরকার ছিলো ক্যারিবিয়ানদের। পাওয়েল ক্রিজে থাকায় মনে হচ্ছিল পাল্লা ভারি স্বাগতিক দলের দিকে। তবে হাসান মাহমুদ বদলে দেন হিসাব। তার প্রথম বলে আলজেরি জোসেফ সিঙ্গেল নেওয়ার পর পাওয়েল একটা ডট খেলে কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন, পঞ্চম বলে আলজেরিকে বোল্ড করে ইনিংস মুড়ে দেন ডানহাতি পেসার। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চরম বিপদ থেকে তুলেও তীরে ভেড়াতে না পারা অধিনায়ক পাওয়েল ৩৫ বলে করে হন ট্র্যাজেডির নায়ক। 

এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। ক্যারিবিয়ান দ্বিপপুঞ্জে টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালো বাংলাদেশ। এর আগে দলটির বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজে জিতেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়।

দারুণ এই জয়ে অবদান কয়েকজনের। বড় অবদান শেখ মেহেদী হাসানের। ব্যাট হাতে ২৬ করার পর বল করতে এসে ক্যারিয়ার সেরা নৈপুণ্য দেখান তিনি। ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট।  দলকে ১৪৭ রানের পুঁজি এনে দিতে  ৩২ বলে সর্বোচ্চ ৪৩ করেন সৌম্য সরকার। জাকের আলি অনিক ২৭ বলে করেন ২৭। ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। মাত্র ১৩ বলে তিনি করেন ২৭ রান।

মাঝারি পুঁজি নিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই ব্র্যান্ডন কিংকে আউট করেন তাসকিন আহমেদ। তাসকিনকে উড়াতে গিয়ে টপ এজড হয়ে উঠা তার ক্যাচ মিড অফে লুফেন তানজিদ হাসান তামিম। তৃতীয় ওভারে নিকোলাস পুরানকে তুলে নেন শেখ মেহেদী হাসান। এগিয়ে এসে উড়াতে গিয়ে সহজ স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন বাঁহাতি বিস্ফোরক ব্যাটার। ২ রানে ২ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এরপর জেগে উঠেন জনসন চার্লস। তানজিম হাসান সাকিবকে তার প্রথম ওভারে মারেন দুই ছয়, এক চার। অতিরিক্ত মিলিয়ে ওই ওভারে আসে ২৫ রান। পরের ওভারে শেখ মেহেদীকেও বাউন্ডারি মেরেছিলেন, তবে মেহেদীর বলেই সহজ ক্যাচে বিদায় হয় তার। ৩৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ক্যারিবিয়ানরা। মেহেদী খানিক পর আন্দ্রে ফ্লেচারকেও উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান। ৩৭ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়ে ফেলে ৪ উইকেট।

এক বল পরই রোস্টন চেজকে একইভাবে বিদায় করেন এই অফ স্পিনার। ৩৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় স্বাগতিক দল।

অধিনায়ক পাওয়েলকে দলের চরম বিপদে সঙ্গ দিতে পারেননি গুডাকেশ মোটি। প্রথম ওভারে ২৫ রান দেওয়া তানজিম সাকিব দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আউট করেন তাকে। ৫৮ রানে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৬ উইকেট। আকিল হোসেনকে রিশাদ হোসেন তুলে নিলে ৬১ রানে তাদের ৭ উইকেট পড়ে যায়। তখন বাংলাদেশের জয় মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। তবে এরপর পুরো ম্যাচের ছবি বদলে দেওয়া জুটি গড়েন শেফার্ড-পাওয়েল। পাল্টা আক্রমণের নীতি নেন পাওয়েল। শেফার্ড তাকে দেন সঙ্গ। দ্রুত সমীকরণ হতে থাকে সহজ। ৮ম উইকেটে ৩২ বলে ৬৭ রানের জুটি আনেন তারা।  ১৮তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। ১৬ বলে ২২ রান করে ফেরেন শেফার্ড।

শেফার্ডের বিদায়ের পরও ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে ছিলো, আলজেরি জোসেফ একদম আনকোরা নন ব্যাটিংয়ে। তবে স্লগ ওভার দারুণ বল করে বিজয় দিবসের সকালে বাংলাদেশকে জয় উপহার দিতে পেরেছেন হাসান।

 

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

1d ago