হ্যাটট্রিকসহ সুমনের ৭ উইকেট, ৪২ রানেই শেষ রাজশাহী
সানজামুল ইসলাম ও মোহর শেখকে পরপর ক্যাচ দিলেন উইকেটরক্ষক আশিকুর রহমানের গ্লাভসে। শেষ ব্যাটার হিসেবে নামা আসাদুজ্জামান পায়েল এরপর যেন বল ব্যাটেই লাগাতে চাইলেন না! মিডল স্টাম্পে পড়ে সোজা যাওয়া ডেলিভারি ছেড়ে দিলেন। প্যাডে লাগতেই জোরালো আবেদনে সাড়া দিলেন আম্পায়ার। হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতলেন ডানহাতি পেসার সুমন খান।
শনিবার জাতীয় ক্রিকেট লিগের ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে ঢাকা বিভাগের সুমনের বোলিং তোপে নাকাল হয়েছে রাজশাহী বিভাগ। বগুড়ার শহিদ চান্দু স্টেডিয়ামে হ্যাটট্রিকসহ তিনি ৭ উইকেট নেন ১৮ রান খরচায়। কোনো জবাব খুঁজে না পেয়ে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২০.৫ ওভারে ৪২ রানে গুটিয়ে যায় রাজশাহী। বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটিই সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড।
বিব্রতকর এই রেকর্ডের আগের মালিক ছিল বরিশাল বিভাগ। গত মৌসুমের জাতীয় লিগে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে ৪৬ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল তারা। এর আগে ২০১৪ সালে রংপুর বিভাগের বিপক্ষে জাতীয় লিগেই ঢাকা মেট্রো থেমেছিল ৪৮ রানে।
প্রথম শ্রেণিতে দেশের ১৭তম বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের স্বাদ পেলেন সুমন। দুটি করে হ্যাটট্রিক রয়েছে তিন স্পিনার ইলিয়াস সানি, সোহাগ গাজী ও মোহাম্মদ আশরাফুলের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৪ বছর বয়সী পেসারের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংও এটি। তার আগের সেরা ছিল ৫০ রানে ৬ উইকেট। ৩৯ ম্যাচে এই নিয়ে ষষ্ঠবার অন্তত ৫ উইকেট নিলেন তিনি।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত দিয়ে উইকেট উৎসবের শুরু করেন সুমন। ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম ও রহমতউল্লাহ আলী। দুজনের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি। নিজের পঞ্চম ওভারে ফের দুই শিকার ধরেন সুমন। এবারও ক্যাচ তুলে সাজঘরের পথ ধরেন সাব্বির হোসেন ও প্রিতম কুমার। এরপর ২১তম ওভারে আক্রমণে ফিরে হ্যাটট্রিক করার পাশাপাশি রাজশাহীর দুর্দশার ইতি টানেন সুমন।
ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া রাজশাহীর স্রেফ দুই ব্যাটার পৌঁছান দুই অঙ্কে। সর্বোচ্চ ১৮ রান আসে মেহেরব হোসেনের ব্যাট থেকে। পাঁচজন আউট হন শূন্য রানে। ঢাকার হয়ে উইকেটের পেছনে আস্থার পরিচয় দিয়ে ছয়টি ক্যাচ নেন আশিকুর।
প্রতিপক্ষকে মামুলি পুঁজিতে বেঁধে ফেলার পর নিজেদের প্রথম ইনিংসে সুবিধা করতে পারেনি ঢাকাও। ৪২.২ ওভারে তারা সবকটি উইকেট হারায় ১৮১ রান করতে। অথচ তাদের উদ্বোধনী জুটি ছিল ৮৫ রানের। দুই ওপেনার জিশান আলম ও রনি তালুকদার যথাক্রমে ৪৪ ও ৪০ রান করেন। রাজশাহীর পক্ষে পায়েল ৩১ রানে ৪ ও মোহর ৬৮ রানে ৩ উইকেট পান।
বোলারদের দাপটে ২১ উইকেট পড়ার দিনে ঢাকা এগিয়ে আছে ১২১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেও শুরুতে স্বস্তিতে নেই রাজশাহী। ৬ ওভারে ১ উইকেটে ১৮ রান করেছে তারা। সাব্বির ২ ও তানজিদ ৯ রানে ক্রিজে আছেন।
Comments