শাকিলের সেঞ্চুরি ও সাজিদ-নোমানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে চাপে ইংল্যান্ড
স্পিন সহায়ক উইকেটে বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন সৌদ শাকিল। দক্ষতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তিনি তুলে নিলেন অসাধারণ সেঞ্চুরি। পাকিস্তানকে গুরুত্বপূর্ণ লিড পাইয়ে দেওয়ার পথে নোমান আলী ও সাজিদ খানের সঙ্গে দারুণ দুটি জুটিও হলো তার। এরপর আলোক স্বল্পতায় খেলা থামার আগে টপ অর্ডার হারিয়ে ফেলা ইংল্যান্ড পড়েছে বিপাকে।
শুক্রবার রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে চালকের আসনে রয়েছে পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসে ৩৪৪ রান করে ৭৭ রানের মূল্যবান লিড নেয় তারা। এরপর ইংলিশরা ৩ উইকেট খুইয়ে করেছে ২৪ রান। এখনও তারা পিছিয়ে আছে ৫৩ রানে। ক্রিজে আছেন জো রুট ৫ ও হ্যারি ব্রুক ৩ রানে।
স্বাগতিক দলের মূল ব্যাটারদের ব্যর্থতার মাঝে একমাত্র উজ্জ্বল ব্যতিক্রম ছিলেন শাকিল। টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনি। ২২৩ বল মোকাবিলায় ১৩৪ রানে তিনি আউট হন নবম ব্যাটার হিসেবে। শর্ট বলে পরাস্ত হওয়ার আগে মারেন পাঁচটি চার।
পাকিস্তানের সপ্তম উইকেটের পতন হয় ১৭৭ রানে। তখন ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের পুঁজির চেয়ে ৯০ রান পিছিয়ে ছিল তারা। এরপর অষ্টম উইকেটে নোমানের সঙ্গে ৮৮ ও নবম উইকেটে সাজিদের সঙ্গে ৭২ রানের জুটি গড়েন শাকিল।
মূল কাজ বোলিং হলেও এদিন নোমান ও সাজিদ যেন অলরাউন্ডারে পরিণত হন। বিপদে পড়া দলকে বাঁচাতে ব্যাট হাতেও দারুণ অবদান রাখেন তারা। নোমান ৮৪ বলে দুটি চার ও একটি ছয়ে করেন ৪৫ রান। সাজিদ ৪৮ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ব্যাট থেকে আসে দুটি চার ও চারটি ছক্কা।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ৭৩ রান নিয়ে খেলতে নামে পাকিস্তান। শোয়েব বশিরের শিকার হয়ে অধিনায়ক শান মাসুদ ফিরে যান প্রথম ঘণ্টায়। ক্রিজে থিতু হওয়া মোহাম্মদ রিজওয়ানকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন রেহান আহমেদ। ভেঙে যায় শাকিলের সঙ্গে রিজওয়ানের ৫২ রানের জুটি। এরপর আগা সালমানকেও টিকতে দেননি রেহান।
আমির জামালও রেহানের স্পিনে বিদায় নিলে পাকিস্তানের দুইশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। কিন্তু ইংলিশদের আশা ভেস্তে যায়। প্রথম সেশনে ৪ উইকেট হারানো পাকিস্তান দ্বিতীয় সেশনে কেবল নোমানের উইকেট খোয়ায়। এর আগেই ১৮১ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন শাকিল।
নোমানকে এলবিডব্লিউ করেন বশির। শাকিলকে থামান অ্যাটকিনসন। সাজিদ এগিয়ে যাচ্ছিলেন ফিফটির দিকে। তার প্রত্যাশা পূর্ণ হয়নি। জাহিদ মাহমুদ বোল্ড হলে থেমে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। সফরকারীদের পক্ষে ৬৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সফলতম বোলার লেগ স্পিনার রেহান। তিনি টেস্ট খেলতে নেমেছেন আট মাস পর। অফ স্পিনার বশির ৩ উইকেট নেন ১২৯ রানে।
দিনের শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে আবারও সাজিদ ও নোমানের তোপের মুখে পড়ে ইংল্যান্ড। মুলতানে গত টেস্টে এই দুই স্পিনার মিলে নিয়েছিলেন ২০ উইকেটের সবকটি। চলতি ম্যাচের প্রথম ইনিংসেও ছড়ি ঘোরান তারা। অফ স্পিনার সাজিদ ৬ ও বাঁহাতি স্পিনার নোমান ৩ উইকেট নেন।
সেই ধারায় দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়ে দেন দুজন। রিভিউ নিয়ে বেন ডাকেটকে সাজঘরে পাঠান সাজিদ। আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রলি এলবিডব্লিউ হন নোমানের বলে। নোমানের পরের ওভারে স্লিপে ধরা পড়েন ওলি পোপ। বাকি দুই ওভার কাটিয়ে দেন রুট ও ব্রুক। তাদের কাঁধে রয়েছে দলকে উদ্ধারের বড় দায়িত্ব।
Comments