৯৪ রানের লিড নিয়ে গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ
পঞ্চম দিনে ব্যাটিং করতে নামলেও পিচ এখনও ব্যাটিং করার মতো উপযোগী। আহামরি কোনো ফাটল নেই। বলও ব্যাটে আসছিল ঠিকঠাকই। কিন্তু সেই পিচকে রীতিমতো ভয়ঙ্কর বানিয়ে ছাড়লেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। একের পর এক ব্যাটারদের কাণ্ডজ্ঞানহীন শটে প্রথম সেশনেই হারের পথ খুঁজে নিয়েছে টাইগাররা।
মঙ্গলবার কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনের প্রথম সেশন শেষে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় টাইগাররা। ফলে ৯৪ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। জয় তুলে নিতে পুরো দুইটি সেশন হাতে রয়েছে স্বাগতিকদের।
আড়াই দিন বেশি বৃষ্টির পেটে যাওয়ায় নাটকীয় কিছু করতে বড় ঝুঁকি নিয়েছিল ভারত। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ৫২ রানের লিড নিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে দলটি। এরপর বাকিটা ছেড়ে দিয়েছিল বোলারদের হাতে। তবে বোলারদের কাজ সহজ করে দিয়েছেন টাইগার ব্যাটাররা। উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার মিছিলে নামেন তারা।
সকালে আগের ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হকের উইকেট দিয়ে শুরু। অশ্বিনের লেগ স্টাম্পে রাখা বলে সুইপ করতে গিয়ে ঠিকভাবে সংযোগ করতে না পেরে ক্যাচ তুলে দেন লেগ স্লিপে দাঁড়ানো লোকেশ রাহুলের হাতে। ৮ বলে ২ রান করেন আগের ইনিংসে ১০৭ রানে অপরাজিত থাকা এই ব্যাটার।
এরপর সাদমান ইসলামের সঙ্গে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৫৫ রানের জুটিও গড়েছিলেন তারা। তবে এই জুটির আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংই যেন কাল হয়। রবীন্দ্র জাদেজার লেগ স্টাম্পে রাখা বলে গেলেন রিভার্স সুইপ করতে। ফলাফল, লাইন মিস করে হলেন বোল্ড। ১৯ রান আসে শান্তর ব্যাট থেকে।
শুরু থেকেই ধৈর্যশীল ব্যাটিং করা সাদমানও গেলেন অফস্টাম্পের বাইরের বল খেলতে। চতুর্থ স্লিপে অনেকটা শর্ট গ্যালিতে ক্যাচ তুলে দেন জশস্বি জয়সওয়ালের হাতে। এর আগে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটি তুলে ৫০ রান করেন সাদমান।
লিটনও (১) গেলেন বাইরের বল খেলতে। টার্নের মুখে ব্যাটের কানায় লেগে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক রিশাভ পান্তের হাতে। আর ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য শেষ ইনিংস খেলতে নেমে বোলার জাদেজাকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব আল হাসান। আলতো করে যেন জাদেজার হাতে তুলে দেন এই অলরাউন্ডার। ফলে মাত্র ৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে জাসপ্রিত বুমরাহ বোলিংয়ে ফিরতেই আউট হয়েছেন মিরাজ। অবশ্য অফস্টাম্পের সামান্য বাইরে রাখা বলে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু কিছুটা এক্সট্রা বাউন্সে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক পান্তের হাতে। ১৭ বলে ৯ রান করেন এই অলরাউন্ডার।
এরপর নয় নম্বর ব্যাটার তাইজুল ইসলামকে নিয়ে লড়াই চালান মুশফিকুর রহিম। দারুণ কিছু শটে লিড বাড়াচ্ছিলেন। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাইজুল। বুমরাহর স্লোয়ার ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে লাইন মিস করে পড়েন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। ১৩ খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেনি তিনি।
এর পরপরই জাদেজার বলে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন মুশফিক। তবে রিভিউ নিয়ে বাঁচেন তিনি। রিপ্লেতে দেখা যায় বল মিস করছে স্টাম্প। এরপর এক প্রান্ত আগলে দলকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন মুশফিক। স্কোরবোর্ডে ১৬ রান যোগ করার পর বুমরাহর স্লোয়ার অফকাটারে বোল্ড হয়ে যান তিনি। ৬৩ বলে ৩৭ রান করেন এই ব্যাটার।
ভারতের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ, জাদেজা ও অশ্বিন। অপর উইকেটটি নেন আকাশ দিপ।
Comments