বোলারদের ব্যাটিংয়ে বিব্রত হতে পারেন ব্যাটাররা
বাংলাদেশের স্কোরকার্ড উল্টো করে ধরলে বরং ভদ্রস্থ দেখাচ্ছে। যে কাজটা করা দরকার ছিলো ব্যাটারদের, সেটা তারা পারলেন না। বোলাররা নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্যের ছাপ রেখে বুঝালেন উইকেটে ছিলো না বড় কোন জুজু।
শ্রীলঙ্কাকে তিনশোর নিচে আটকে কোথায় ম্যাচের লাগাম নিবেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। তারা তার ধারেকাছে দিয়েও যেতে পারলেন না। গুটিয়ে গেলেন ১৮৮ রানে। সফরকারীরা লিড নিয়ে নিল ৯২ রানের। বাংলাদেশের স্কোরকার্ড উল্টো করে দেখতে বলার কারণ দিবে এই পরিসংখ্যান। তিন বোলার তাইজুল-খালেদ-শরিফুল মিলে করলেন ৮৪ রান। বাংলাদেশের ছয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটার মিলে করতে পেরেছেন ৭৪ রান।
বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান তাইজুল ইসলামের, ৪৭! যিনি আগের দিন বিকেলে মূলত নেমেছিলেন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে। ব্যাটারদের সুরক্ষিত রাখতে শেষ বিকেলের আলোয় তাকে পাঠিয়েছিলো টিম ম্যানেজমেন্ট। শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিনে নেমে তিনিই দলের সেরা ব্যাটার! তাকে রেখেই প্রথম সেশনে একে একে বিদায় নেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটাররা।
তাইজুল বরং নিজের সামর্থ্য বুঝে খেলেছেন, টিকে থাকার নিবেদন দেখিয়েছেন প্রবলভাবে। মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন দিপুরা সেটা করতে পারেননি।
দুজকেই কাবু করেন লাহিরু কুমারা। তবে জয় ও দিপু থিতু হয়ে যেভাবে খোঁচা মেরে বিদায় নিয়েছেন তা দৃষ্টিকটু। বল ভালো হবে, কিন্তু ছাড়ার মতন হলে তা ছেড়ে দেওয়াই প্রত্যাশিত। তারা তা করতে পারেননি।
সাতে নেমে কিপার-ব্যাটার লিটন দাস শুরু করেন ঝলমলে। বেশ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলছিলেন তিনি। তার বিদায় অবশ্য বেশ ভালো ডেলিভারিতে। লাহিরুর অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে পড়া বল তীব্রভাবে ভেতরে ঢোকে কেড়ে নেয় লিটনের স্টাম্প । ৪৩ বলে ২৫ রান করেন তিনি।
লাঞ্চের পর ফিফটির কাছে গিয়ে তাইজুল ধরা দেন কিপারের গ্লাভসে। মেহেদী হাসান মিরাজ বেশ কিছুটা সময় টিকলে রান করতে পারেননি। ৩৪ বলে ১১ রান করে তার বিদায় কাসুন রাজিতার বলে।
নবম উইকেট জুটিতে খালেদ আহমেদ-শরিফুল ইসলাম মিলে যোগ করেন ৩৫ বলে ৪০ রান। এটিই বাংলাদেশের ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি! লিটনের ২৫ রানের পর দশে নামা খালেদের ২২ রান দলের তৃতীয় সর্বোচ। এতেই বোঝা যায় কতটা বিবর্ণ ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং।
বিবর্ণতার শুরু অবশ্য আগের দিন। শ্রীলঙ্কাকে ২৮০ রানে আটকে শেষ বিকেলে নেমে দ্রুত ফিরে যান জাকির হাসান, শান্ত আর মুমিনুল হক। দ্বিতীয় দিনে ঘুরে দাঁড়ানোর যে তীব্রতা, প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে ম্যাচে ফেরার যে তাড়না তা দেখা গেল না।
শ্রীলঙ্কার বোলিংও হয়েছে দারুণ। আগের দিন দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশ যেমন আলগা বল দিয়ে উড়তে দিয়েছে কামিন্দু মেন্ডিস-ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। লঙ্কানরা তা করতে দেয়নি। লাহিরু, বিশ্ব, কাসুন তিন পেসার পরিকল্পনা করে জায়গায় বল করে গেছেন সারাক্ষণ। ব্যাটারদের ভুল করতে করেছেন প্রলুব্ধ।
এই টেস্টের এখন যা পরিস্থিতি, বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরতে করতে হবে দারুণ কিছু। দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে অল্প রানে আটকে রান তাড়ার সমীকরণ রাখতে হবে নাগালের ভেতর।
Comments