সোমবার বিসিবির বোর্ড সভায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে তিন ইস্যু

nazmul hasan papon
ফাইল ছবি: বিসিবি

জাতীয় নির্বাচনের কারণে পিছিয়ে যাওয়া বিসিবির কার্য নির্বাহী পরিষদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সোমবার। লম্বা সময় পর হতে যাওয়া এই সভায় আলোচনায় আছে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। তারমধ্যে সবচেয়ে আগ্রহে বিশ্বকাপ ব্যর্থতার তদন্ত প্রতিবেদন, জাতীয় দলের নেতৃত্ব ও নির্বাচক প্যানেল।

গত বছর জুন মাসে সর্বশেষ সাধারণ সভা করেছিল বিসিবি। মাঝখানে জাতীয় নির্বাচনের কারণে ব্যস্ত ছিলেন বিসিবি সংশ্লিষ্ট অনেকেই। নির্বাচনের পর কিছু বাস্তবতার ছবিও বদলেছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নতুন সরকারে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।

প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন শীর্ষ ক্রিকেটার ও এখন পর্যন্ত অধিনায়ক থাকা সাকিব আল হাসান। বিসিবির আরেক পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলও প্রথমবার সাংসদ হয়েছেন।

জানা গেছে, সোমবার দুপুরে বোর্ড পরিচালকরা বসবেন আলোচনায়। তাদের এই সভায় উপস্থাপনা করা হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর্যালোচনা রিপোর্ট। এছাড়া এজেন্ডাতে থাকবে জাতীয় দলের বোলিং, ব্যাটিং কোচ নিয়োগ, শেখ হাসিনা স্টেডিয়াম নির্মাণ কাজের অগ্রগতি, ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তি ও জাতীয় নির্বাচক প্যানেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত। এছাড়াও চলতি বছর হতে যাওয়া নারী বিশ্বকাপ নিয়ে প্রস্তুতি এবং জাতীয় দলের নেতৃত্ব বিষয়েও আলোচনা থাকতে পারে।

বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর্যালোচনা রিপোর্ট

গত অক্টোবর-নভেম্বরে ভারতে হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ দল। বিশ্বকাপের আগে নাটকীয়ভাবে তামিম ইকবালের না থাকা, সাকিব আল হাসানের বিস্ফোরক সাক্ষাতকার এবং বিশ্বকাপে দলের পারফর্ম না করার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি করে বিসিবি। তিন সদস্যের সেই কমিটি সংশ্লিষ্ট সভার সঙ্গে কথা বলে তাদের প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেই প্রতিবেদন বোর্ড সভায় জমা দেওয়ার পর তা নিয়ে হবে আলোচনা।

জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল

মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নান্নু, হাবিবুল বাশার সুমন আর আব্দুর রাজ্জাক। তাদের মেয়াদ বাড়ানো হবে নাকি নতুন নির্বাচক প্যানেল নিয়োগ দেওয়া হবে তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বোর্ড সভায়। একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে বর্তমান নির্বাচক প্যানেলের মেয়াদ। দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে থাকা প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু নানান কারণে সমালোচিত হলেও তার জায়গায় অন্য কেউই তেমন আলোচনায় নেই। তবে মিনহাজুলকে সরিয়ে হাবিবুল বাশারকে প্রধান নির্বাচক করার সম্ভাবনাও আছে। সেক্ষেত্রে নির্বাচক প্যানেলে নতুন একজনকে যুক্ত করতে হবে। সেই একজন হিসেবে আসতে পারেন হান্নান সরকার।

জাতীয় দলের নেতৃত্ব

জাতীয় দলের নেতৃত্ব বোর্ড সভায় আনুষ্ঠানিক এজেন্ডায় না থাকলেও এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বাস্তবতা আছে। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে সাকিব একটি সাক্ষাতকারে জানিয়ে যান, বিশ্বকাপ শেষে আর একদিনও নেতৃত্ব দিতে চান না তিনি। এই অবস্থান থেকে সাকিব সরে এসেছেন কিনা তা স্পষ্ট করেননি। তিনি বল ঠেলে দিয়েছেন বোর্ডের দিকে। সাকিবের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে তার ফিটনেস ইস্যুও। আঙুলের চোটে বিশ্বকাপের শেষ দিকে ছিটকে যাওয়া এই ক্রিকেটার বিশ্বকাপের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই সিরিজে ছিলেন না। ওই সময় অবশ্য নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত দেখা যায় তাকে। বিপিএলের আগে তার চোখের সমস্যা আসে নতুন করে আলোচনায়।

চোখের সমস্যায় বিপিএলের আগে এবং মাঝেও চিকিৎসা নিতে দেশের বাইরে যান তিনি। পরে কেবল বোলার হিসেবে কিছু ম্যাচ খেলতে দেখা গেছে তাকে। বিপিএল খেলতে পারলেও সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তীব্রতা নেওয়ার মতন অবস্থায় আছেন কিনা তা দেখার বিষয়। সব সংস্করণেই তাকে খেলানো যাবে কিনা এটাও অনিশ্চিত। বিপিএলের পর পরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন সংস্করণের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজ পুরোটাই সাকিব খেলতে পারবেন কিনা, না পারলে কে নেতৃত্ব দেবে তা ঠিক করার বিষয় আছে। নেতৃত্বের ইস্যু ঝুলিয়ে না রেখে তরুণ কাউকে লম্বা সময়ের জন্য দায়িত্বে দেওয়া নিয়ে বিশ্বকাপের পর থেকেই আলোচনা জারি আছে। যদিও বিসিবির নীতি নির্ধারকরা এখনো সাকিবের দিকেই তাকিয়ে আছেন। 

নতুন বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে কোন ক্রিকেটাররা আছেন তাও এখনো প্রকাশ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তাকে না রাখতে বছর শেষের আগেই জানিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। তিনি থাকছেন না নিশ্চিত। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন কিনা তা বিপিএলের মাঝেও জানানোর কথা বলেছিলেন তামিম (ফেরার প্রায় নেই বললেই চলে)। এছাড়া মাহমুদউল্লাহকে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি দুই সংস্করণে চুক্তিতে রাখা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্তও আনুষ্ঠানিক রূপ পাবে এই সভায়।  

Comments

The Daily Star  | English

20 non-banks on BB red list

As of December last year, they disbursed Tk 25,808 crore in loans against collateral worth Tk 6,899 crore, according to the BB report

10h ago