অভিষিক্ত বার্টলেটের বোলিং ঝলকের পর তিন ফিফটিতে জিতল অস্ট্রেলিয়া
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে থাকল পেসার জাভিয়ের বার্টলেটের জন্য। ওয়ানডে অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্বিতীয় সেরা বোলিং পারফরম্যান্স উপহার দিলেন তিনি। তার তোপে পাওয়া সাদামাটা লক্ষ্য জশ ইংলিস, ক্যামেরিন গ্রিন ও স্টিভেন স্মিথের ব্যাটে অনায়াসে পেরিয়ে জিতল স্বাগতিকরা।
মেলবোর্নে শুক্রবার সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে জিতেছে অজিরা। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ২৩১ রানে গুটিয়ে যায় ক্যারিবিয়ানরা। জবাবে ৬৯ বল হাতে রেখে ২ উইকেট খুইয়ে শেষ হাসি হাসে অধিনায়ক স্মিথের দল। ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে তারা।
২৫ বছর বয়সী বার্টলেট স্রেফ ১৭ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট। ৯ ওভার হাত ঘুরিয়ে একটি মেডেনও নেন তিনি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে দুটি করে শিকার করেন শন অ্যাবট ও গ্রিন।
ওয়ানডে অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সেরা বোলিং ফিগার দলটির বর্তমান নির্বাচক টনি ডোডমেইডের দখলে। তিনি ১৯৮৮ সালের জানুয়ারিতে পার্থে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন ২১ রানে। সেদিন প্রতিপক্ষ ছিল শ্রীলঙ্কা। ডোডমেইডের সেই কীর্তির ৩৬ বছরের ব্যবধানে তার পরের অবস্থানেই বসেছেন ২৫ বছর বয়সী বার্টলেট।
রান তাড়ায় চার ব্যাটারের তিনজনই পান হাফসেঞ্চুরি। ওপেনার ইংলিস ৪৩ বলে ১০ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে খেলেন ৬৫ রানের ঝড়ো ইনিংস। গ্রিনের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৭৭ রান। তিনি ১০৪ বল মোকাবিলায় মারেন ৪ চার ও ২ ছক্কা। স্মিথ ৭৯ বলে ৭৯ রানেই অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল ৮ চার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তৃতীয় ডেলিভারিতেই উইকেটের স্বাদ নেন বার্টলেট। তার আউটসুইং বলে বোল্ড হন জাস্টিন গ্রিভস। আলিক আথানেজকেও টিকতে দেননি তিনি। উইকেটের পেছনে ক্যাচ গ্লাভসে জমা করেন ইংলিস। ১৭ রানে দুই ওপেনারকে হারানো ক্যারিবিয়ানদেড় বিপদ আরও বাড়ে দশম ওভারে। আরেকটি আউটসুইং ডেলিভারিতে প্রতিপক্ষের অধিনায়ক শেই হোপকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান বার্টলেট।
কাভিম হজকে থিতু হতে দেননি গ্রিন। ফলে ৫৯ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে বিপাকে পড়ে সফরকারীরা। এরপর প্রতিরোধ গড়ে দলকে টানেন কেসি কার্টি ও রোস্টন চেজ। শুরুতে কার্টি খোলসবন্দি ছিলেন। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে দুজনই চালিয়ে খেলতে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে ১২৭ বলে তার যোগ করেন ১১০ রান।
৩৭তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা। সুইপ করার চেষ্টায় স্টাম্প হারান চেজ। ৬১ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর ৬৭ বলে ৫৯ করে বিদায় নেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৭ চার।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরাইশর বেশ আগেই থামায় অস্ট্রেলিয়া। তিনে নামা কার্টি দুর্ভাগ্যজনকভাবে হন রানআউট। ফলে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি অধরা থেকে যায় তার। ৮২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণের পর হাত খুললেও হেইডেন ওয়ালশের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে সাজঘরে ফেরেন। ১০৮ বলে ৮৮ রানের ইনিংসে তিনি মারেন ৬ চার ও ২ ছয়।
জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারেই ট্রাভিস হেডকে হারায় অজিরা। তবে ইংলিস ঝড় তুলে চাপ জেঁকে বসতে দেননি। মাত্র ২৮ বলে ফিফটিতে পৌঁছান তিনি। তার নৈপুণ্যে প্রথম পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে দলের স্কোরবোর্ডে জমা হয় ১ উইকেটে ৭৯ রান।
দ্বাদশ ওভারে রিভার্স সুইপের চেষ্টায় আউট হন ইংলিস। ভাঙে গ্রিনের সঙ্গে তার ৬৪ বলে ৭৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। এরপর আর কোনো সাফল্য পাননি ক্যারিবিয়ান বোলাররা। গ্রিন ক্রিজে কিছুটা সময় কাটানোর পর স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে থাকেন। স্মিথ শুরু থেকেই ছিলেন সাবলীল। তাদের ১৬২ বলে অবিছিন্ন ১৪৯ রানের জুটিতে নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার জয়।
Comments