আফসোস আমারও আছে: তাইজুল

ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সিলেট টেস্টের পঞ্চম দিনে নিউজিল্যান্ডের শেষ ৩ উইকেটে আরও দরকার ২১৯ রান। এই সমীকরণ মেলানো যে দারুণ চ্যালেঞ্জিং, তা ঘটা করে না বললেও চলে। জয়ের তীব্র সুঘ্রাণ তাই বাংলাদেশ পেয়েই গেছে। দেশের মাটিতে স্মরণীয় মুহূর্তের নাগাল পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনার পথে দুই ইনিংসে তাইজুল ইসলামের শিকার ৮ উইকেট। প্রতি ইনিংসে চারটি করে। ম্যাচসেরা হওয়ার ভীষণ সম্ভাবনা বাঁহাতি এই স্পিনারের। কিন্তু শুক্রবার চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে সেই তাইজুল শোনালেন একটা আফসোসের কথা!

যদিও সে আফসোসের সম্পূর্ণটাই সিলেট টেস্টের বাইরের ঘটনায়। নিউজিল্যান্ড সফরে আসন্ন সাদা বলের দুই সিরিজে জায়গা হয়নি এই বাঁহাতির। লাল বলে দুর্দান্ত ফর্মে থাকলেও সাদা বলের দলে সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। অথচ ওয়ানডেতে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ইতিবাচক। গত দুই বছরে ৯ ম্যাচে ২০.৬১ গড়ে তার শিকার ১৮ উইকেট। সীমিত ওভারের সংস্করণে বিবেচনায় না থাকার কারণে আফসোস আছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে তাইজুলের মনে লুকিয়ে থাকা বেদনা, 'আফসোস তো সবারই থাকে। আমারও আফসোস আছে। (গত) কাল তো দল দিয়েছে, হয়তো দেখেছেন। আমি আসলে এটা নিয়ে কথা বলতে চাই না।'

সবশেষ এশিয়া কাপের পর থেকেই বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের বাইরে তিনি। অবশ্য এর আগের সিরিজগুলোতে রঙিন পোশাকের বাংলাদেশ দলের দৃশ্যপটে ভালোভাবেই ছিলেন এই স্পিনার। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে বাংলাদেশ এশিয়া কাপের আগে যে চারটি সিরিজ খেলেছিল, তাতে তিনটিতেই ছিলেন তাইজুল। যদিও ক্যারিয়ারের দুটি টি-টোয়েন্টি ২০১৯ সালে খেলার পর এই সংস্করণে আর সুযোগই পাননি।

লাল বলের বাংলাদেশ দলে অবশ্য তাইজুল অপরিহার্য এক সদস্য। রঙ্গনা হেরাথের মুখেও তো দ্বিতীয় দিন শেষে ঝরেছিল তাইজুলের প্রশংসা। চলতি টেস্টেই সাবেক হয়ে যাওয়া স্পিন কোচ বলেছিলেন যে, সাকিব আল হাসান খেলুন কিংবা না খেলুন, তাইজুল দলে বড় ভূমিকা পালন করেন।

২০১৪ থেকে তাইজুল খেলে আসছেন টেস্ট। নয় বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই ক্রিকেটার দলের পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পান যতটুকু, তাতে তিনি খুশি কিনা, এমন প্রশ্ন করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। উত্তরে তাইজুল বল ঠেলে দেন অন্য কোর্টে, 'খুশি-অখুশির কিছু নাই। অবশ্যই একজন খেলোয়াড় যখন ৮-১০-১২ বছর খেলে, অবশ্যই অভিজ্ঞতা থাকে। ক্রিকেটে এই অভিজ্ঞতা অনেক কাজে লাগে। আমাকে কতটা প্রায়োরিটি দিচ্ছে তা নির্ভর করে অধিনায়ক ও কোচের উপর।'

দরকার পড়লে তাইজুলের দরজা সবসময় খোলা জানিয়ে আরও বলেন, 'প্রায়োরিটি দিলে অবশ্যই চেষ্টা করব সাহায্য করার। সব সময় আমার দরজা খোলা। যে কোনো দরকার হলে আমি করব। প্রায়োরিটি পাই না তা না, পাই। অনেকে অনেক সময় বলে কী করা যায়। আমি পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করি।'

প্রথমবারের মতো টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে প্রয়োজনে সাহায্য করতে দ্বিধা করেন না, শান্তর নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তাইজুল শোনান সে কথা, 'অধিনায়ক হিসেবে সে ভালো, অনেক সিদ্ধান্তই নেয়। যেখানে আটকে যায়, আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটার যারা আছে... মুশফিক ভাই, (মুমিনুল) সৌরভ আছে, এমনকি আমাকেও বলে। যেখানে আটকে যায়, সেখানে আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করি। আর তার তো একটা জ্ঞান আছেই। ৫-৬ বছর ধরে খেলছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। আমার মনে হয় সে খারাপ না, ভালো আছে।'

সংবাদ সম্মেলনের শেষটা তাইজুল করেন মজার ছলে। সাকিব না থাকায় অভিজ্ঞ তাইজুল দলের বোলিং আক্রমণের নেতা, কেমন লাগে ব্যাপারটা? তার উত্তর, 'আলহামদুলিল্লাহ, ভালো লাগে। কিন্তু বুড়া বানায়ে দিয়েন না আবার!'

Comments

The Daily Star  | English

Is the govt backing the wrongdoers?

BNP acting Chairman Tarique Rahman yesterday questioned whether the government is being lenient on the killers of a scrap trader in front of Mitford hospital due to what he said its silent support for such incidents of mob violence.

3h ago