শান্তর রেকর্ডে মোড়ানো সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের দিন
দ্বিতীয় দিনের চেয়ে তৃতীয় দিনের উইকেট হয়ে উঠল ব্যাটিংয়ের জন্য আরও ভালো। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের স্পিন আক্রমণের চাপ হালকা হয়ে পড়ল। উইকেটের ফায়দা তুলে দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এতেই হয়ে গেল নতুন রেকর্ড। টেস্টে অধিনায়কত্বের অভিষেকে শতক হাঁকানো প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড় তিনি। মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে শান্তর দুটি ভালো জুটিতে দিনটা হলো বাংলাদেশের।
বৃহস্পতিবার সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২১২ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের লিড দাঁড়িয়েছে ২০৫ রান। হাতে রয়েছে আরও ৭ উইকেট। অর্থাৎ ম্যাচে চালকের আসনে রয়েছে বাংলাদেশ।
শান্ত ১৯৩ বলে ১০৪ ও মুশফিক ৭১ বলে ৪৩ রানে অপরাজিত আছেন। তাদের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটির রান ১৬২ বলে ৯৬। এর আগে মুমিনুলের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ১৬১ বলে ৯০ রান যোগ করেন সেঞ্চুরিয়ান শান্ত।
নিউজিল্যান্ডকে গুটিয়ে দেওয়ার পর বিনা উইকেটে ১৯ রান নিয়ে দিনের প্রথম সেশন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই জোড়া ধাক্কা। পরপর দুই ওভারে ফেরত যান দুই ওপেনার জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়। সেই বিপর্যয় সামলে দলকে সঠিক পথের দিশা দেন শান্ত ও মুমিনুল। বাংলাদেশ চা বিরতিতে যায় ২ উইকেটে ১১১ রান নিয়ে। এরপর শেষ সেশনে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে আরও ১০১ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে তারা। সেশনের তৃতীয় ওভারে মুমিনুল রানআউটে বিদায় নেওয়ার পর দৃঢ়তা দেখান শান্ত ও মুশফিক। তাদের আলাদা করার কোনো উপায় পায়নি কিউইরা।
বাংলাদেশের ইনিংসের ৬৮তম ও দিনের শেষ ওভারের প্রথম বলে শান্ত স্পর্শ করেন তিন অঙ্ক। সিঙ্গেল পূর্ণ করে অনন্য অর্জনের উল্লাসে লাফ দিয়ে করেন উদযাপন। এরপর বরাবরের মতো চুমু আঁকেন ব্যাটে। ৯৫ বলে ফিফটি করার পর সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে তার লাগে ১৯২ বল। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি। সবশেষ চার ইনিংসে তৃতীয়।
বাংলাদেশের আগের ১২ টেস্ট অধিনায়কের মধ্যে মাত্র চারজন ফিফটি স্পর্শ করেছিলেন। তবে কেউই সেঞ্চুরিতে যেতে পারেননি। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সাকিব আল হাসানের অপরাজিত ৯৬ রানই ছিল এতদিন সর্বোচ্চ। ১৪ বছর পর অসাধারণ ইনিংসে তাকে পেছনে ফেললেন শান্ত। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ পাঁচটি (টেস্টে তিনটি, ওয়ানডেতে দুটি) সেঞ্চুরিও হয়ে গেল তার। এর আগে শাহরিয়ার নাফিস, তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হকের ছিল চারটি করে সেঞ্চুরি।
এর আগে সকালের সেশনে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস থামে ৩১৭ রানে। নবম উইকেটে ৫২ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটিতে তারা নেয় ৭ রানের লিড। আগের দিনের ৮ উইকেটে ২৬৬ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল দলটি।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার কাইল জেমিসন ও টিম সাউদি কাটিয়ে দেন দিনের প্রথম ঘণ্টা। এতে দায় ছিল বাংলাদেশের আলগা বোলিং ও রক্ষণাত্মক ফিল্ডিংয়ের। পানি পানের বিরতির পর আসে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। একই ওভারে জেমিসন-সাউদিকে ফিরিয়ে কিউইদের অলআউট করে দেন মুমিনুল। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে অনিয়মিত এই স্পিনার সব মিলিয়ে ৩ উইকেট পান স্রেফ ৪ রানে।
Comments