‘মিসগাইডেড’ সাকিবকে ‘দলের স্বার্থে’ এবারও ছাড় দিচ্ছে বিসিবি
শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য সাকিব আল হাসান শাস্তিও পেতে পারতেন। কিন্তু পরিস্থিতিই এমন যে শাস্তির বদলে উল্টো টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব পেলেন তিনি। এছাড়া নাকি বিসিবি ছিল অনেকটা 'উপায়হীন।' বোর্ড প্রধানের বাসায় সভা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় 'ফ্লাইং কিস' দিয়ে সাকিব বুঝিয়ে দেন সবকিছুতে কতটা খুশি তিনি।
বেটউইনার নিউজের সঙ্গে বেআইনি চুক্তি থেকে সরে আসাতেই খুশি বিসিবি। তাকে ফের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ঘোষণার পর ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস জানান, সাকিব 'মিসগাইডেড' হয়ে চুক্তি করেছিলেন। নিজের ভুল বুঝতে পারায় দলের স্বার্থে সব নমনীয়ভাবে দেখা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটাররা কোন পণ্যের দূত হতে হলে নিতে হবে বিসিবির অনুমতি। অনুমতি নেওয়া দূরে থাক বেটউইনার নিউজের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে কোন কিছু জানতই না বিসিবি।
বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, তাদের না জানিয়ে এসব করেছেন সাকিব। জুয়া বাংলাদেশে নিষিদ্ধ থাকায় এই চুক্তি নিয়ে বিসিবির কঠোর অবস্থানে পিছু হটেন সাকিব। চুক্তি থেকে সরে আসার চিঠি দেন।
কিন্তু বিসিবিকে না জানিয়ে তার চুক্তি করা, এবং বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বেআইনি সম্পৃক্ত হওয়ার দুটি নিয়মভঙ্গ হয়েছে। তবু কোন শাস্তি পেতে হচ্ছে না তাকে।
শনিবার বোর্ড প্রধানের বাসায় সাকিবের সঙ্গে আলোচনার পর বিষয়টি 'মিটমাট' হয়ে গেছে বলে জানান জালাল, 'এটা নিয়ে অনেক আলাপ আলোচনা হয়েছে। সাকিব তার ভুল বুঝতে পেরেছে। তার আসলে এটার সঙ্গে যুক্ত হওয়া ঠিক হয়নি। নিশ্চিতভাবে সাকিব আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একজন ক্রিকেটার। বোর্ডের আগের মিটিংয়ে সাকিবকে অধিনায়ক করার চিন্তা ভাবনা ছিল। এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা সেই পরিকল্পনায় স্থির থাকবো।'
'এখানে সভাপতি ছিলেন। সে বলেছে, কোনো ভুল কারণে একটা অনলাইন নিউজ মনে করে এনডোরসমেন্ট করেছিল। এটা ঠিক হয়নি। তাকে বুঝিয়ে বলার পর সে বলেছে, আমি সেখান থেকে সরে এসেছি। এটাই শেষ। তার কাছে মনে হয়েছে মিস গাইডেড।'
এই তো গেল বেটিং সাইটের ইস্যু। কিন্তু অনুমতি না নেওয়ার বিষয়টিও বিসিবি দেখছেন একদম হালকাভাবে, 'এটাও তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা পরবর্তীতে…যেহেতু সে আমাদের অনুমতি ছাড়া একটা এনডোরসমেন্ট নিয়েছে সে জিনিসটা আমরা আগে আলাপ করেছি এবং আমাদের পরবর্তী বোর্ড মিটিংয়ে এটা নিয়ে আলাপ হবে।'
'যুক্তিটা তো বললাম, সাকিব স্টিল আমাদের সেরা খেলোয়াড়। আমরা তাকে ওউন করি। সে আমাদের বোর্ডের বা দেশের বাইরের কেউ না। সে যখন বলেছে, হি হ্যাড মেইড আ মিসটেক আমরা ধরে নিয়েছি পরবর্তীতে…তাকে বলা হয়েছে এই রকম ভুল যেন সে আর পুনরায় না করে। এবং সেও আবার বলেছে, হ্যাঁ ঠিক আছে। সেখানে আমরা বিষয়টি শেষ করে দিয়েছি।'
কিন্তু সেরা খেলোয়াড় হলেই একের পর এক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা যায় কিনা, এই ব্যাপারে জানতে চাইলে দলের স্বার্থের কথা বলেন ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান,'বেস্ট প্লেয়ার হলেই, শৃঙ্খলা বা কোড অব কডাক্ট ভাঙলে কম্প্রোমাইজ করা ঠিক না। হয়তো এটা কম্প্রোমাইজ করা উচিত না। দলের স্বার্থে…যেহেতু সে বলেছে সামনে এরকম কোনো সমস্যা হবে না আমরা আশা করি সামনে এটা আর সে রিপিট করবে না। এই চিন্তা মাথায় রেখে আমাদের এই সিদ্ধান্ত।'
Comments