বাজেট প্রতিক্রিয়া

আয়হীন ব্যক্তির ন্যূনতম কর প্রত্যাহারের দাবি ঢাকা চেম্বারের

বাজেট প্রতিক্রিয়া: ঢাকা চেম্বার
সামির সাত্তার | ছবি: টেলিভিশন থেকে নেওয়া

প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে আরোপিত করযোগ্য আয় না থাকলেও ব্যক্তির ন্যূনতম কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংগঠনটির সভাপতি সামির সাত্তার এ দাবি জানান।

সামির বলেন, 'ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে আমরা পুরোপুরি সাধুবাদ জানাতে পারছি না। মূল্যস্ফীতি এখন চরম পর্যায়ে আছে। ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে জনসাধারণ ও নিম্ন আয়ের ব্যক্তিদের জন্য আমরা দাবি জানিয়ে আসছি করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা যেন করে দেয় সরকার। ‍এই সীমা বাড়িয়ে দেওয়া হলে মূল্যস্ফীতির চাপে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও রেহাই পাবে।'

তিনি বলেন, 'করযোগ্য আয় না থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তির ওপর ন্যূনতম ২ হাজার টাকা কর ধার্য করার প্রস্তাবে—আমরা মনে করি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর করের বোঝা তৈরি হয়ে যাবে। তাই এই প্রস্তাব প্রত্যাহার করার দাবি আমরা জানাচ্ছি।'

'আমরা মনে করি, করারোপের কিছু প্রিন্সিপাল আছে; নো ইনকাম, নো ট্যাক্স। আমার যদি ইনকাম না থাকে তাহলে আমি কেন ট্যাক্স দিতে যাব! আমি সরকারকে অনুরোধ করব, এই ২ হাজার টাকা যে কর ধার্য করা হয়েছে সেটা যেন প্রত্যাহার করা হয়,' বলেন সামির।

তিনি বলেন, 'দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত ইনকাম ট্যাক্স আইন বাস্তবায়ন করা একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। এর মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা সহজভাবে ট্যাক্স দিতে পারবে।'

এই বাজেট ব্যবসাবান্ধব কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রতিটি খাতে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হলে সেই বাজেট ব্যবসাবান্ধব কি না জানতে চাইলে আমি বলবো—না, প্রতিটি খাতে ভর্তুকি দেওয়া ব্যবসাবান্ধব কি না আমি বলবো—না। আমি মনে করি, সরকার এখন যেটা নিয়ে এসেছে, আমরা যদি ঠিক মতো ইনকাম ট্যাক্স অ্যাক্ট বাস্তবায়ন করতে পারি এবং যে অটোমেশন প্রক্রিয়া সরকার হাতে নিচ্ছে বা নিতে যাচ্ছে সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যবসাবান্ধব পলিসি এই বাজেটে। যখন আমার ইনকাম ট্যাক্স আইন বাস্তবায়ন হয়ে যাবে তখন আইনগতভাবে অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে।'

'আমি মনে করি এই বাজেটটা হাইব্রিড বাজেট, যেখানে ব্যবসার দিকে খেয়াল করা হচ্ছে এবং দেশের অর্থনীতির দিকেও খেয়াল করা হচ্ছে। আমরা একটা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যেটা একা সরকারের পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব না। এটা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মধ্য দিয়ে এগিয়ে এসে এই ক্রাইসিস আমাদের সবাইকে মোকাবিলা করতে হবে,' বলেন সামির।

অর্থমন্ত্রী আজ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন। জাতীয় সংসদে 'দেড় দশকের উন্নয়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রগতি' শীর্ষক বাজেট বক্তৃতা দেন তিনি।

এটি দেশের ৫২তম, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের ২৪তম ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পঞ্চম বাজেট।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার এর আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বড়। বাজেটটি ৫০ লাখ ৬ হাজার ৬৭২ কোটি টাকার প্রাক্কলিত জিডিপির ১৫ দশমিক ২১ শতাংশ।

এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে সার্বিক ঘাটতি ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে সরকার ব্যাংকসহ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা এবং বিদেশি উৎস থেকে ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার ৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকা বেশি।

Comments

The Daily Star  | English

Drug sales growth slows amid high inflation

Sales growth of drugs slowed down in fiscal year 2023-24 ending last June, which could be an effect of high inflationary pressure prevailing in the country over the last two years.

16h ago