ইউএস বাংলার পাইলট মানসিক চাপে বেপরোয়া ছিলেন: নেপালের তদন্ত রিপোর্ট

ত্রিভুবন বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজে ইউএস বাংলার বিমান দুর্ঘটনা। ছবি: কাঠমান্ডু পোস্ট

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নেপাল সরকারের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবতরণের সময় উড়োজাহাজটির পাইলট কনট্রোল টাওয়ারের কাছে অসত্য তথ্য দিয়েছিলেন এবং পুরো এক ঘণ্টার যাত্রাতেই ককপিটে বসে তিনি ক্রমাগত ধূমপান করেছিলেন। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, পাইলট আবিদ সুলতান প্রচণ্ড রকম ব্যক্তিগত মানসিক চাপে ছিলেন। এ কারণেই তিনি বার বার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যার ফলাফল হিসেবে বিমানটি অবতরণের মুহূর্তে বিধ্বস্ত হয়।

গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস২১১, ৭১ জন আরোহী নিয়ে ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে নিহত ৫১ জনের মধ্যে ২২ জন নেপালি ও একজন চীনের নাগরিক। অন্যরা সবাই বাংলাদেশি।

কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়, এই দুর্ঘটনা নিয়ে নেপাল সরকার যে তদন্ত চালিয়েছে তার প্রতিবেদনের একটি কপি তাদের হাতে এসেছে। এই প্রতিবেদনে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটি বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের ভুল নির্দেশনার কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। দুর্ঘটনার জন্য পুরোপুরিভাবে পাইলটকেই দায়ী করেছেন তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অবতরণের ছয় মিনিট আগে আবিদ সুলতান নিশ্চিত করে বলেন যে উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ার নেমে গেছে। ককপিটে এর সবুজ সংকেত দেখতে পাওয়ার কথাও বলেন তিনি। তবে কো-পাইলট প্রিথুলা রশিদ অবতরণের প্রস্তুতি নিরীক্ষা করে দেখেন তখনও ল্যান্ডিং গিয়ার নামেনি। এর মাত্র কয়েক মিনিট পরই দুই দফায় অবতরণের চেষ্টা করে দুর্ঘটনায় পড়ে উড়োজাহাজটি।

নেপালের তদন্তকারীরা প্রতিবেদনে বলেন, ‘ককপিটের ভয়েস রেকর্ডারের কথোপকথন বিশ্লেষণ করে আমরা যা পেয়েছি তাতে এটা স্পষ্ট যে পাইলট প্রচণ্ড রকম মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। এছাড়াও কম ঘুমের কারণে তাকে অবসাদগ্রস্ত ও ক্লান্ত বলে মনে হয়েছে।’ ককপিটে বসে তিনি একাধিক বার কান্নাকাটি করেছিলেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ককপিটে পাইলট ও কো-পাইলটের প্রায় এক ঘণ্টার কথোপকথনের বিষয়বস্তু থেকে তারা আরও মনে করেন, ফ্লাইটের পুরো সময় ধরেই পাইলট আবিদ সুলতানের মানসিক চাপ ও পূর্ণ অসতর্কতার বিষয়টি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, কথোপকথনের এক পর্যায়ে কো-পাইলটকে তিনি প্রকাশ অযোগ্য শব্দ ব্যবহার করে বলেন, ‘ফ্লাইটের নিরাপত্তা নিয়ে আমি পরোয়া করি না, তুমি তোমার কাজ নিয়ে চিন্তা কর।’

Comments

The Daily Star  | English

Eid meat: Stories of sacrifice, sharing and struggle

While the well-off fulfilled their religious duty by sacrificing cows and goats, crowds of people -- less fortunate and often overlooked -- stood patiently outside gates, waiting for a small share of meat they could take home to their families

4h ago