রশিদ ঘূর্ণিতে নাজেহাল হয়ে সিরিজ হার
শেষ দুই ওভারে জেতার জন্য আফগানিস্তানের দরকার ছিল ২০ রান। ঠিক জায়গায় বল ফেললে মন্থর উইকেটে হাঁসফাঁস করা ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা কঠিনই হতো । তবে রুবেল হোসেন সেটা করে দিলেন সহজ। তার পাঁচ বলেই খেলা শেষ করেন দেন মোহাম্মদ নবী। বাংলাদেশকে ৬ উইকেটে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নিয়েছে আফগানিস্তান।
ভারতের দেরাদুনে সিরিজ বাঁচানোর লড়াইয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে বাজে হারের হতাশা থেকে বেরুতে একাদশে দুই বদল এনেও কাজের কাজ হয়নি। ৭ বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে বাংলাদেশের হতাশা দ্বিগুণ করেছে আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচ ৪৫ রানের হারের পর এবার ৬ উইকেটে নাস্তানাবুদ। বাংলাদেশের সামনে বাকি এখন হোয়াইটওয়াশের বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।
দুই ম্যাচে ২৫ রান দিয়ে বাংলাদেশের ৭ উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান। সিরিজ শুরুর আগে থেকেই ভয়ের কারণ হওয়া এই লেগ স্পিনারের কোন জবাব দিতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল।
১৩৫ রানের ছোট লক্ষ্য দিয়েও অবশ্য খেলা জমিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশ। দ্রুত রান করার জন্য কঠিন উইকেটে দুদলের স্পিনাররাই দেখিয়েছেন দাপট। এই জায়গায় এগিয়ে থাকায় হাসিটা চওড়া রশিদ খানদের।
এবারও আফগানদের বোলিং হিরো রশিদ খান। অলরাউন্ড নৈপুণ্যে নায়ক বনেছেন মোহাম্মদ নবীও। বোলিংয়ে ১৯ রানে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ১৫ বলে ম্যাচ জেতানো ৩১ রান করেছেন। তবে ১২ রানে ৪ উইকেট নেওয়া রশিদই হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
১৩৫ রানের ভেতর আফগানদের আটকে রাখতে দারুণ শুরু এনে দেন নাজমুল ইসলাম অপু। এই বাঁহাতি স্পিনার প্রথম দুই ওভারই করেন মেডেন। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই পেতে পারতেন মোহাম্মদ শেহজাদের উইকেটও। তবে উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো মুশফিকের হাত ফস্কে বেরিয়ে যাওয়া শেহজাদ থেমেছেন ১৭ বলে ২৪ রান করে।
জীবন পাওয়া শেহজাদের ব্যাটেই শুরুতে কিছু রান পেয়েছে আফগানরা। বাকিরা হাঁসফাঁস করায় ১০ ওভারে এসেছে মাত্র ৫৬ রান। এরমধ্যে শেহজাদকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রো এনেছিলেন আবু হায়দার রনি। উসমান গনিকে ফিরিয়ে দ্বিতীয় উইকেট ফেলেছিলেন শেষে মার খাওয়া রুবেলও।
সাকিবের বিবর্ণ দিনে হাত ঘুরিয়ে সাফল্য পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন। এসবের মধ্যে আফগানদের ম্যাচে রেখেছেন ওয়ানডাউনে নামা সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। তার ৪১ বলে ৪৯ রানের ইনিংস শেষ অবধি ধরে রাখে তাদের আশা। যাতে ভর করে ম্যাচ জেতান নবী।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ইনিংস ছিল দুই ভাগে বিভক্ত। রশিদ খান বল করতে আসার আগে ও পরে। প্রথম ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৮১ তোলা সাকিবরা পরের ১০ ওভারে ৫৩ তুলতে হারিয়েছে ৫ উইকেট। ওই সময়েই বল করেছেন রশিদ। তার ঘুর্ণির যেন কোন জবাব নেই সাকিব, তামিমদের কাছে।
১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১০১। পরের ওভারে স্কোরবোর্ডের চেহারা ১০৩/৭! নিজের দ্বিতীয় ওভারে তিন উইকেট নেন রশিদ। প্রথম বলে সাকিবকে দিয়ে শুরু। চতুর্থ ও পঞ্চম বলে তামিম আর মোসাদ্দেককে আউট করে তৈরি করেছিলেন হ্যাটট্রিকের সুযোগ। হ্যাটট্রিক না হলেও শেষ ওভারে আউট করেছেন সৌম্য সরকারকেও।
বিপর্যস্ত বাংলাদেশ ইনিংসের সেরা স্কোরার তামিম ইকবাল। ৪৩ রান করতে অবশ্য তার লেগে যায় ৪৮ বল। দ্বিতীয় সেরা মুশফিকের ২২। শেষ দিকে আবু হায়দারের ১৪ বলে ২১ রান এনেছিল লড়াইয়ের পূঁজি। লড়াই জমিয়েও হতাশায় মাঠ ছাড়ার পর সাকিব বলেছেন আরও ১৫ রানের আক্ষেপের কথা।
সিরিজ হেরে যাওয়ায় এখন বৃহস্পতিবার শেষ ম্যাচে কেবল বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়ানোর চেষ্টা করতে পারে বাংলাদেশ।
Comments