কেমন করে উৎক্ষেপণ করা হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট

বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট
বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট। ছবি: ফাইল ফটো

দেশের জাতীয় জীবনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে আজ। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে স্থানীয় সময় বিকাল সোয়া চারটার দিকে উৎক্ষেপণ করা হবে বঙ্গবন্ধু ১ স্যাটেলাইট।

স্পেসএক্সের উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে স্পেসএক্স ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ করা হবে। উৎক্ষেপণের দৃশ্য সরাসরি দেখানো হবে ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১২ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিট পর্যন্ত।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ মেজবাহুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “গত বছর এই উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকেই কোরিয়ার একটি স্যাটেলাইট কক্ষপথে পাঠানো হয়েছিল।”

এখান থেকেই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি করা বাংলাদেশের প্রথম ন্যানো স্যাটেলাইট ‘ব্র্যাক অন্বেষা’-ও উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।

ফ্লোরিডার পথে রওনা দেওয়ার আগে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ এবং প্রকল্প পরিচালক মেজবাহুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের বিষয়টি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মাহমুদ বলেন, উৎক্ষেপণ প্যাড থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে থেকে দর্শকরা দেখতে পারবেন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের দৃশ্যটি। সাত মিনিটের মতো এটি আকাশে দেখা যাবে।

প্রকল্প পরিচালক মেজবাহুজ্জামান বলেন, “প্রায় সাত টন ওজনের এই স্যাটেলাইটটির বহনকারী রকেট সোজা আকাশে উঠে যাবে। কক্ষপথে যাওয়ার আগে এটিকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার যেতে হবে। এ জন্যে সময় লাগবে ১০ দিন।”

উৎক্ষেপণের দুইটি পর্যায় উল্লেখ করে জানানো হয়, প্রথম পর্যায়ে রয়েছে উৎক্ষেপণ এবং প্রাক কক্ষপথ (এলইওপি) এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে কক্ষপথে স্যাটেলাইটটিকে বসানোর কাজ। প্রথম পর্যায়টি সম্পন্ন হতে সময় লাগবে ১০ দিন এবং দ্বিতীয় পর্যায়টি সম্পন্ন হতে সময় লাগবে ২০ দিনের মতো।

মেজবাহুজ্জামান জানান, স্যাটেলাইটটি কার্যকর হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ যাবে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি এবং কোরিয়ায় অবস্থিত তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশনে। “এই তিনটি গ্রাউন্ড স্টেশন স্যাটেলাইটটি নিয়ন্ত্রণ করে একে ৩০০ কিলোমিটার দূরে কক্ষপথের ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমায় নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করবে।”

স্যাটেলাইটটিকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে ২০ দিন সময় লাগবে উল্লেখ করে মাহমুদ বলেন, যখন এটি সম্পূর্ণভাবে কার্যকর হবে তখন এর নিয়ন্ত্রণ ভার হস্তান্তর করা হবে বাংলাদেশে অবস্থিত গ্রাউন্ড স্টেশনগুলোতে।

ফ্যালকন রকেটের চারটি অংশ রয়েছে উল্লেখ করে জানানো হয়, প্রথম অংশে থাকবে স্যাটেলাইট এবং এরপর অ্যাডাপটর। অ্যাডাপটরের নিচের অংশটিকে বলা হয় স্টেজ-২ এবং শেষের অংশকে বলা হয় স্টেজ-১।

“উৎক্ষেপণের প্রাক-মুহূর্তে আগুন দেখা যাবে। এরপর প্রচণ্ড গতিতে রকেটটি আকাশের দিকে ছুটে যাবে,” যোগ করেন প্রকল্প পরিচালক মাহমুদ। একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে যাওয়ার পর রকেটের স্টেজ-১ খসে পড়বে।

তিনি জানান, এরপর, স্টেজ-২ রকেটটিকে নিয়ে যাবে ৩৫,৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত। কক্ষপথে পৌঁছানোর আগে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে রাখা হবে স্যাটেলাইটটিকে। কয়েকদিন সময় লাগবে স্যাটেলাইটটিকে গাজীপুরের জয়দেবপুর এবং রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় গ্রাউন্ড স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে রয়েছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। এগুলোর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশ ব্যবহার করবে। বাকিগুলো বিভিন্ন দেশের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো কয়েকটি দেশের কাছে।

আরও পড়ুন:

দেশের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের দৃশ্য সরাসরি দেখাবে বিটিভি

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh's 8 mega projects cost $7.5b more for graft, delay

Taskforce report: 8 mega projects cost $7.5b more for graft, delay

The initially estimated costs of these projects were $11.2 billion in total

12h ago