ব্ল্যাক প্যান্থার: সুপারহিরো চলচ্চিত্রেরও ঊর্ধ্বে!

Black Panther
‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত

সিনেমার নাম: ব্ল্যাক প্যান্থার

পরিচালক: রায়ান কুগলার

অভিনয়: শাদভিক বোজমান, মাইকেল বি জর্ডান, লুপিতা নাইয়ং, দানাই গুরিরা

মুক্তির তারিখ: ১৬ ফেব্রুয়ারি

বর্তমান সময়টাকে সুপারহিরো সিনেমার সময় বললে অতুক্তি হবে না হয়তো। মারভেল আর ডিসি ফিল্মস যেভাবে ‘অ্যাভেঞ্জারস’, ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার’, ‘স্পাইডারম্যান: হোমকামিং’, ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’, ‘জাস্টিস লিগ’ ইত্যাদি চলচ্চিত্র তৈরি করছে, তাতে দেখা যায় যে মূলধারার দর্শকরা গত কয়েক বছরে যেন বেশ বদলে গিয়েছেন। যদিও ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ একটি বড় জোর সাধারণ সুপারহিরো সিনেমা হিসেবে প্রচার পেয়েছিলো। কিন্তু, চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, সব প্রত্যাশা অতিক্রম করে একটি দুর্দান্ত চলচ্চিত্র হিসেবে দাঁড়িয়েছে এটি।

আমি নিজেই একজন সুপারহিরো কমিক্স এবং চলচ্চিত্রের ভক্ত। কিন্তু, আমার কাছে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ অন্যসব সুপারহিরো কাহিনীর মত লাগেনি। ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’-এ একজন বীর রাজার গল্প বলা হয়েছে। এতে দেখা যায় কিভাবে সবাই একসাথে মিলে তাদের দেশকে বাঁচানোর জন্য সংগ্রাম করতে পারেন, কিভাবে দেশপ্রেমের চেতনায় একটি দেশের নাগরিকরা এ সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন। ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’-এ দেখা যায় একজন রাজার আসল কাজ কী, তাঁর দেশ এবং দেশের জনগণের জন্য তিনি নিজেকে কতোটুকু উৎসর্গ করতে পারেন।

ওয়াকান্দা একটি কল্পিত আফ্রিকান দেশ। দেশটি লুকিয়ে রেখেছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি এবং দুর্লভ ধাতু ভাইব্রেনিয়াম। সারা পৃথিবী থেকে নিজেকে আড়াল করে ওয়াকান্দা এই ভাইব্রেনিয়াম ব্যবহারের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তির কারিগর হয়ে উঠে এবং সামরিক অস্ত্র বানিয়ে রাখে নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য। ত’চালা (ব্ল্যাক প্যান্থার) ওয়াকান্দা সাম্রাজ্যের রাজকুমার। তাঁর বাবা, ত’চাকা, ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার’ এ মারা যাওয়ার পর ত’চালা সিংহাসন আরোহণ করে এই চলচ্চিত্রটিতে। কিন্তু রাজা হওয়া মোটেও সহজ ব্যাপার নয়, যা ত’চালা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারে দ্রুতই।

একজন ভাইব্রেনিয়াম চোরকে গ্রেফতার করার পথে ত’চালা নতুন শত্রুর আক্রমণের মুখে পড়ে। এই নতুন শত্রু ভাইব্রেনিয়ামের শক্তি দিয়ে পুরো দুনিয়াকে তাঁর কব্জায় আনতে চায়। অবশেষে ত’চালা এবং তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গীরা এই নতুন শত্রুকে হারানোর জন্য একটি যুদ্ধ শুরু করে যা হয়ে উঠে পৃথিবীকে বাঁচানোর লড়াই!

‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ এমন একটি চলচ্চিত্র যা ভালো না লাগার তেমন কোন কারণ নেই। এই ছবিতে রয়েছে অ্যাকশন, ড্রামা, সাসপেন্স, রোমান্স, ইতিহাস, আবেগপ্রবণ কাহিনী, চমৎকার অভিনয় এবং স্মরণীয় বেশ কয়েকটি চরিত্র।

মূল চরিত্র ছাড়াও সহযোগী চরিত্ররা কাহিনিটিকে বেশ ফুটিয়ে তুলেছেন। অনেক সময় তাঁরা নায়কের চেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সচরাচর সুপারহিরো ছবিতে সহযোগী চরিত্রদের এতো নিখুঁতভাবে দেখানো হয়না। তাছাড়াও, নারী চরিত্রগুলোকে দেখানো হয়েছে অনেক জোরালো এবং দৃঢ়ভাবে।

ছবিটিতে খলনায়কের চরিত্রটিও অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তাঁকে সাধারণ ‘সুপারভিলেন’ মনে হয় না। তাঁর ইচ্ছা এবং প্রেরণা অনেক বাস্তববাদী। তাঁকে কখনই পুরোপুরি খারাপ মানুষ বলেও মনে হয় না।

শাদভিক বোজমানকে বেশ মানিয়েছে ত’চালার চরিত্রটিতে। তিনি কমিকস বইয়ের ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’-কে সিনেমা হলের পর্দায় চমৎকারভাবে জীবন্ত করে তুলেছেন। একজন দর্শক সুপারহিরো ছবির ভক্ত হোক বা না হোক, ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ আশা করি সবার কাছেই ভালো লাগবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘ব্লাক প্যান্থার’ ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শিত হচ্ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Chhatra Dal blocks Shahbagh protesting mobs, academic disruption

JCD leaders and activists began gathering at Nayapaltan area earlier in the afternoon

56m ago