কেউই জানলেন না কীভাবে অমিতাভ বচ্চন বিদ্বেষের বিষ ছড়িয়েছিলেন!
১৯৮৪ সালের কথা মনে রয়েছে কি? ভারতের ইতিহাসে জঘন্যতম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাগুলোর একটি সংগঠিত হয়েছিলো সে বছর। তিন দশকেরও বেশি আগে ভারতে সংগঠিত শিখ-বিরোধী দাঙ্গার একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, সেসময় যারা দূরদর্শনে চোখ রেখেছিলেন তারা দেখেছেন বলিউডের সুপারস্টার অমিতাভ বচ্চন কেমন করে দাঙ্গাকারীদের উসকে দিয়েছিলেন।
গত সপ্তাহে টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সময় সেই প্রত্যক্ষদর্শী জগদীশ কাউর বলেন, “আমি অবাক হই, ভারতে শিখ নিধনে মদদ দেওয়া অমিতাভ বচ্চনের বিরুদ্ধে কেউ কোন মামলা দায়ের করলেন না।”
১৯৮৪ সালে শিখ দেহরক্ষী সতবন্ত সিং এবং বিয়ন্ত সিং-এর গুলিতে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর শুরু হয় শিখ-বিরোধী দাঙ্গা। সেদিনের দুঃখময় স্মৃতি চারণ করে কাউর বলেন, “আমি দূরদর্শনে দেখি অমিতাভ বচ্চন হাত উঁচু করে দুবার স্লোগান দিলেন- ‘খুন কা বদলা খুন সে লায়েঙ্গি’- অর্থাৎ রক্তের বদলে রক্ত নেব।”
প্রত্যক্ষদর্শী সেই নারী এরপর থেকে অমিতাভের কোন সিনেমা বা টেলিভিশন শো দেখেননি বলে উল্লেখ করেন। তাঁর ভাষায়, “অমিতাভের কথা কেউ বললে বা তাঁর কোন কাজের কথা বললে আমার মনে ১৯৮৪ সালের দাঙ্গায় সেই ব্যক্তির ভূমিকার কথা মনে পড়ে যায়।”
সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক একটি শিখ মানবাধিকার সংগঠন শিখ-নিধনে অমিতাভ বচ্চনের নেতিবাচক ভূমিকা রাখায় তাঁর বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ায় একটি ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করেছে। অস্ট্রেলিয়ার ‘ক্রিমিনাল কোড অ্যাক্ট ১৯৯৫’-এ রয়েছে অস্ট্রেলিয়ায় বা এর বাইরের কোনো দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ হলে অস্ট্রেলিয়ার আদালত তার বিচার করতে পারবে।
১৯৮৪ সালে জগদীশ কাউরের বয়স ছিলো ৪২ বছর। সে বছরের ১ নভেম্বর উন্মত্ত জনতা পশ্চিম দিল্লির পালাম কলোনিতে তাঁর স্বামী ও ছেলেকে ঠান্ডা মাথায় খুন করে। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন ভাই নরেন্দ্র পাল সিং (৩৫), রঘভিন্দর সিং (২৮) এবং কুলদীপ সিং (২১)-কেও দাঙ্গাকারীরা পুড়িয়ে হত্যা করে।
Comments