মাশরাফির চার নাকি সাকিবের দুই?
মাস দেড়েকে ৪৫টি ম্যাচ শেষে বিপিএলের পঞ্চম আসরের শিরোপার রেসে এখন কেবল দুদল। অধিনায়ক মাশরাফির হাতে এর আগে বিপিএলের ট্রফি উঠেছে তিনবার। আগেরবারের শিরোপা জেতা অধিনায়ক সাকিব আছেন টানা দুই ট্রফি জেতার দ্বারপ্রান্তে। এই দুজন ছাড়া আর কোন অধিনায়কই পারেননি শিরোপা জিততে। এবার কে পাচ্ছেন আরেকটি বিজয় মালা?
বিপিএলের প্রথম দুই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। সে দলটির অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। তবে ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে দলটির ফ্র্যাঞ্চাইজি বাতিল হয়ে যায়। নতুন মালিকানায় নাম বদলে ঢাকা ডায়নামাইটস হয়ে বিপিএলে ফেরে তারা। ২০১৫ সালে তৃতীয় আসরে ব্যর্থ হলেও গেল আসরের শিরোপা সাকিবের হাত ধরে ফের উঠে ঢাকার ঘরে।
আগের চার আসরের তিন বারই শিরোপা জেতায় নাম আছেন ঢাকার ফ্রেঞ্চাইজির। একবারই হয়েছিল ব্যতিক্রম। ২০১৫ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি। আগের আসরও কুমিল্লার হয়ে খেলা মাশরাফি এবার দল বদলে চলে আসেন রংপুরের ডেরায়। তারকায় ঠাসা দল নিয়ে পৌঁছে গেছেন আরেক শিরোপা জেতার সামনে।
এবার না জিতলেও বিপিএলে সবচেয়ে সফল অধিনায়কের রেকর্ড মাশরাফিরই থাকবে। আর জিতলে তিনি সবাইকে ছাড়িয়ে এগিয়ে থাকবে যোজন যোজন দূরে।
ফাইনালে আসার পথে কোন দলই টগবগিয়ে ছুটেনি। শক্তিশালী দল গড়া ঢাকা শুরু থেকেই অবশ্যই খেলেছে দাপটের সঙ্গে। তবে ধাক্কাও খেয়েছে মাঝপথে। তবু শেষ চারে উঠা নিয়ে তেমন কোন শঙ্কা ছিল না সাকিব আল হাসানের দলের। পয়েন্ট টেবিলে তৃতীয় দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করে, কুমিল্লাকে প্রথম কোয়ালিফায়ারে হারিয়ে ফাইনালেও পা রাখে আগেভাগে।
ওদিকে রংপুর রাইডার্স এগিয়েছে ধুঁকতে ধুঁকতে। প্রথম ম্যাচ জেতার পর টানা তিন হার। একসময় শেষ চারে উঠা নিয়ে দেখা দেয় সংশয়। ক্রিস গেইল, ব্র্যান্ডন ম্যাককালামদের মতো বাঘা বাঘা নাম জুটিয়ে বিপুল হাইপ তৈরি করা দলটি উপহার দেয় বেশ কয়েকটি রোমাঞ্চকর ম্যাচের। সবচেয়ে দামি দুজনই রংপুরের সবচেয়ে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। কোনভাবেই জুতসই রান পাচ্ছিলেন না গেইল-ম্যাককালাম। তবু ভরসা হারায়নি মাশরাফিরা। এরা দুজন এমন দুই ম্যাচে রান করেছেন যখন দলের প্রয়োজন ছিল সবচেয়ে বেশি। এলিমিনেটর ম্যাচে বিপিএলের সবচেয়ে বড় ইনিংস খেলে গেইল বিদায় করে দেন খুলনাকে। আর কোয়ালিফায়ার ম্যাচ তেতে উঠেন ম্যাককালাম। টুর্নামেন্টে তেমন কিছু করতে না পারা জনসন চার্লসও হাঁকিয়ে ফেলেন সেঞ্চুরি। এবারের আসরে দুই সেঞ্চুরিই রংপুরের।
প্রাথমিক পর্বে মুখোমুখি দেখায় দুদলের পাল্লাই সমানে সমান। প্রথমবার শেষ ওভারের উত্তেজনায় রংপুর জেতে ৩ রানে। পরেরবার ঢাকার জয় ৪৩ রানের। টুর্নামেন্টে ফাইনালের আগে ১৩ ম্যাচ খেলে ঢাকার জয় ৮টি, হেরেছে ৪টিতে, বৃষ্টিতে ভেসে গেছে অন্যটি। ওদিকে ১৪ ম্যাচ খেলে রংপুরও জিতেছে ৮টি, তবে হেরেছে ৬টি ম্যাচ।
দুদিন আগেই মুশফিকুর রহিমকে সরিয়ে বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। মাশরাফির অবসরে আগেই টি-টোয়েন্টি দলের লাগাম পেয়েছিলেন তিনি। আর বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক আগের মতই আছেন মাশরাফি মর্তুজ। এই ম্যাচ তাই বাংলাদেশের দুই অধিনায়কেরও লড়াই।
Comments