মৈত্রীতে যাত্রার সময় কমছে ৪ ঘণ্টা

৯ নভেম্বর থেকে ঢাকা ও কলকাতার স্টেশনেই হবে শুল্ক ও অভিবাসনের সব আনুষ্ঠানিকতা
ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস
ঢাকা ও কলকাতার স্টেশনে শুল্ক, অভিবাসনের কাজ হলে মৈত্রী এক্সপ্রেসের ১২ ঘণ্টার যাত্রা সময় কমে ৮ ঘণ্টায় দাঁড়াবে। ছবি: স্টার

মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রীদের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণ হতে চলেছে। আগামী ৯ নভেম্বর থেকে কলকাতা ও ঢাকা মধ্যে চলাচলকারী আন্তর্জাতিক এক্সপ্রেসের যাত্রীদের অভিবাসন ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন হবে ঢাকা ও কলকাতার দুটি প্রান্তিক স্টেশনে।

এর ফলে ভারতের গেদে ও বাংলাদেশের দর্শনা সীমান্তে দুই ঘণ্টা করে মোট ‘চার ঘণ্টা’ অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হবে না। যাত্রীদের ১২ ঘণ্টার ক্লান্তিকর যাত্রা সময় কমে দাঁড়াবে মাত্র ৮ ঘণ্টায়। দীর্ঘ দিন ধরেই যাত্রীরা এই দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সময় কমলে এই রুটের যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরাও। 

আগামী ৯ নভেম্বর থেকে গেদে ও দর্শনাতে আর কোনো শুল্ক ও অভিবাসনের কাজ হবে না। এই কাজ হবে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট ও কলকাতার চিৎপুর স্টেশনে।

৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার ভারতীয় পূর্ব-রেলের প্রধান কার্যালয় কলকাতার ফেয়ালি প্লেসে দুই দেশের রেল, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র বিভাগের সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র।

বর্তমানে ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে যাত্রীরা শুধু তাদের মালামাল এক্স-রে করে পাসপোর্ট দেখিয়ে ট্রেনে চড়ে বসেন। এরপর বাংলাদেশের চুয়াডাঙার দর্শনা সীমান্তে পৌঁছে কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশনের কাজ সম্পন্ন করেন। সেখানে ব্যয় হয় কমপক্ষে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময়।

Moitree immigration
সম্প্রতি গেদে স্টেশনে ঢাকার এক প্রতিবন্ধী শিশু যাত্রীকে হুইল চেয়ারে নেমে কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের কাজ করতে হয়েছে। আশা করা যায়, আগামী ৯ নভেম্বর থেকে এমন দৃশ্য দেখা যাবে না আর। ছবি: স্টার

একইভাবে মাত্র পাঁচ মিনিটের পথ অতিক্রম করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গেদে সীমান্তে পৌঁছে একই যাত্রীর আবারও ভারতীয় অংশের শুল্ক ও অভিবাসনের কাজ সম্পন্ন করতে হয়। সেখানেও একইভাবে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় দিতে হয় যাত্রীদের।

ভারতের স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে ভারতীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ৭টা থেকে ৭টায় ঢাকার প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছান যাত্রীরা। একইভাবে ঢাকার যাত্রীরা স্থানীয় সময় পৌনে ৮টায় কলকাতার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে ভারতীয় সময় সাড়ে ৭টা থেকে পৌনে ৮টার মধ্যে কলকাতায় পৌঁছান।

ফলে বর্তমান শুল্ক-অভিবাসন ব্যবস্থাপনায় কলকাতা-ঢাকার মধ্যে ৩৭৫ কিলোমিটার পথ যেতেই প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।

নতুন ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের উড়োজাহাজের মতো গন্তব্যের দুই প্রান্তে সব ব্যবস্থা শেষ হবে। যেমন ঢাকার যাত্রীরা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে তাদের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন শেষ করে উঠবেন কলকাতাগামী ট্রেনে। ভারতের প্রান্তিক স্টেশন চিৎপুরের ‘কলকাতা স্টেশন’-এ নেমে একইভাবে ভারতের অংশে তাদের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে সহজেই বেরিয়ে পড়তে পারবেন।

নতুন এই ব্যবস্থাপনার ফলে যাত্রীদের কমপক্ষে দুই দিকের সাড়ে তিন ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা সময় বেঁচে যাবে। এতে যাত্রা পথের সময় ১২ ঘণ্টার স্থলে আগামীতে এসে দাঁড়াবে সাড়ে ৮ ঘণ্টা কিংবা ৮ ঘণ্টায়।

কলকাতা-ঢাকার মতো নতুন এই ব্যবস্থাপনা একইভাবে কলকাতা-খুলনা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’-এও চালু হবে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় পূর্ব রেলের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র।

প্রসঙ্গত, আগামী ৯ তারিখ পরীক্ষামূলকভাবে বন্ধনের যাত্রা পরিচালনা করবেন দুই দেশের রেল কর্তৃপক্ষ। আর সেদিনের সব ঠিক থাকলে আগামী ১৬ তারিখ থেকে বাণিজ্যিকভাবে দুই শহরের মধ্যে চলবে প্রতীক্ষিত এই আন্তর্জাতিক ট্রেন বন্ধন এক্সপ্রেস।

Comments

The Daily Star  | English

Fire service & civil defence: High-risk job, low pay

Despite risking their lives constantly in the line of duty, firefighters are deprived of the pay enjoyed by employees of other departments, an analysis of their organograms shows.

6h ago