কলকাতার স্ট্রিট ফুডে মারাত্মক সীসা দূষণ
বাসায় যাদের তেল-চর্বি-মশলাহীন খাওয়ার অভ্যাস, তারাও কলকাতার রাস্তার খোলা খাবার পছন্দ করেন। ফুচকা হোক, হোক ভেলপুরি অথবা চাউমিন, রসনা বিলাসী বাঙালির পক্ষে এমন সস্তা ও সুস্বাদু খাবারের আকর্ষণ এড়ানো অনেক সময়ই সম্ভব হয় না।
কিন্তু নিশ্চিন্ত মনে স্ট্রিট ফুডের স্বাদ নেওয়ার দিন শেষ। কলকাতার বাতাসের মাত্রাতিরিক্ত সীসা ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তার খোলা খাবারেও। জিওলোজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া কলকাতার খাবার নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীসায় দূষিত খাবার খেলে ক্যান্সারের পাশাপাশি হতে পারে দুরারোগ্য ব্যাধি।
কলকাতার স্ট্রিট ফুডে মাত্রাতিরিক্ত সীসা থাকার এমন তথ্য সোমবার কলকাতার কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কলকাতার মানুষের পাশাপাশি বাংলাদেশি পর্যটকরাও এই খাবার খাচ্ছেন দেদারসে। তাদের জন্যও একই ভাবে সতর্ক করা হয় সমীক্ষায়।
সেই সূত্র ধরে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, কলকাতার বড় রাস্তার পাশের খোলা খাবারে প্রতি কেজিতে ২৩.৫৬ মিলিগ্রাম সীসার অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে যেখানে পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে সীসার সহনীয় মাত্রা ০.২৫ মিলিগ্রাম। খাবার তৈরির উপকরণ যেমন মসলাতেও ৩.৭৮ মিলিগ্রাম সীসা পাওয়া গেছে। জিওলোজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা জিএসআইয়ের সমীক্ষার ফলাফলে এই কথা বলা হয়েছে।
বাতাসে সীসার বাড়াবাড়ি, খাবারের সঙ্গে এর মাখামাখির তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর কলকাতার স্ট্রিট ফুড ভক্তদের চোখে এখন আতঙ্কের ছায়া। উত্তর কলকাতা থেকে কলকাতার দক্ষিণ অংশ, মধ্য কলকাতা থেকে শহরের সব প্রান্তিক অংশে জিওলোজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার গবেষকরা সমীক্ষা চালিয়েছেন। ওই দলে ছিলেন কে ভি এস কৃষ্ণা, রাজীব কুমার, অনিন্দিতা দাস, শিলাদিত্য সেনগুপ্ত ও জয়গোপাল ঘোষ। টিমের নেতৃত্ব দিয়েছেন গবেষক অভিজিৎ দাস।
অভিজিৎ দাস জানিয়েছেন, সমীক্ষায় মধ্য কলকাতার মাটিতে সীসার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ২৬৯৭.২৪ মিলিগ্রাম। বাইপাস এলাকার সেটা ১৯৭.০৯ মিলিগ্রাম এবং আরুপোতার মাটিতে ৮০০.২৯ মিলিগ্রাম সীসা পাওয়া গিয়েছে।
মধ্য-কলকাতার মধ্যেই পড়েছে ধর্মতলা, নিউমার্কেট এলাকা। সেখানেই সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি পর্যটকরা অবস্থান করেন। নিউমার্কেট এলাকার বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ছোটবড় শতাধিক স্ট্রিট ফুডের দোকান এবং রেস্টুরেন্টও। এই সব খোলা খাবারের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়েন পর্যটকরা।
Comments