গ্যারেজ মিস্ত্রী থেকে গীতিকার, গুলজার!

Gulzar
২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় কলকাতার নন্দনে গুলজারের লেখা “পান্তাভাতে” ও “প্লুটো” উর্দু বই দুটির বাংলা সংস্করণ প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্বয়ং লেখক, গীতিকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। ছবি: স্টার

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামের একটি গুড়ের ভাণ্ড মাথায় নিয়ে ঘুরছি, সেখান থেকে মাঝে মাঝে কিছু গুড় গড়িয়ে পড়ছে মুখে, ঠোঁটে; জিভ দিয়ে টেনে সেটাই খেয়ে নিচ্ছি। তাতেই যেন অমৃত লাগছে আমার – এই মুহূর্তের উপমহাদেশে অন্যতম স্বনামধন্য ভারতীয় গীতিকার গুলজার এভাবেই তাঁর নিজের সঙ্গে কবিগুরুর আত্মিক সম্পর্কের ব্যাখ্যা করলেন। শনিবার সন্ধ্যায় (২৬ আগস্ট) গুলজারের লেখা “পান্তাভাতে” ও “প্লুটো” উর্দু বই দুটির বাংলা সংস্করণ প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন স্বয়ং লেখক, গীতিকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা।

কলকাতার মস্তিষ্ক বলে পরিচিত “নন্দন”-এ আয়োজিত সাড়ম্বর এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত কিংবদন্তি কবি শঙ্খ ঘোষ, সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায়, সুরকার শান্তনু মৈত্র, কবি শ্রীজাত ছাড়াও সুধাংশু দে এবং সংবাদ প্রতিদিনের সম্পাদক সৃঞ্জয় বোস প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে জীবনের অনেক অব্যক্ত কথাই বলেছেন গীতিকবি গুলজার। বলেন, “মোটর গ্যারেজের মেকানিকের কাজ করতে করতেই ফিল্ম ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে পড়ার মূল কারিগর ছিলেন বাঙালি পরিচালক বিমল রায়। তাঁর হাত ধরেই বাংলার সঙ্গে সখ্যতা তৈরি হয় পাঞ্জাবের উর্দু ভাষাভাষী গুলজারের।

তিনি আরও বলেন, “তাঁকে যদি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উর্দু অনুবাদ না করতে দেওয়া হত, তবে জীবনে তাঁর কবি হওয়া হতো না।”

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, আর ডি বর্মণ, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায় থেকে লতা, আশা, ঊষা অনেকের সঙ্গে জীবনের অনেক স্মৃতির কৌটোও খুলে দিয়েছিলেন শনিবার সন্ধ্যায়, নিজের বইয়ের প্রকাশ অনুষ্ঠানে। কখনো বলতে গিয়ে চোখে ছলছল জল দেখা গিয়েছিলো গুলজারের, আবার কখনো ঠোঁটের কোণায় হাসির ঝলক; শরীরী ভাষায় প্রকাশ করে দিচ্ছিলেন গীতিকার নিজের অজ্ঞাতেই।

“পান্তাভাতে” বইটিতে শৈশব, কৈশোর, যৌবনের স্মৃতির নকশিকাঁথাই বুনেছেন গীতিকার। আর “প্লুটো”-তে নিছকই একান্ত কষ্টের কথা, পরিবারের কথা, বাবা-দাদাদের কথায় বর্ণমালা সাজিয়েছেন একের পর এক।

“প্লুটো”-র জন্মের চেয়ে মাত্র চার বছরের ছোট বলে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে এদিন প্রায় তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন গুলজার। তাঁর ভাষায়, গুলজারের জন্ম হয়েছিল ১৯৩৪ সালে। আর প্লুটো গ্রহের আবিষ্কার ১৯৩০ সালে। তাই, গুলজার মাত্র চার বছরের ছোট ওই প্লুটোর চেয়ে।

সন্ধ্যায় অনুষ্ঠানের সূচনা হলেও গুলজারের কথায় তা গড়িয়ে যায় রাত অবধি। গুলজারকে কাছে পেয়ে নিজেদের মধ্যে আড্ডায় জমে গিয়েছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন সন্দীপ রায়, শান্তনু মৈত্রীও।

নন্দনেই গুলজারকে নিয়ে একক চিত্র প্রদর্শনীটিও ঘুরে দেখেন তাঁরা।

Comments

The Daily Star  | English

Fire service & civil defence: High-risk job, low pay

Despite risking their lives constantly in the line of duty, firefighters are deprived of the pay enjoyed by employees of other departments, an analysis of their organograms shows.

8h ago