ঢাকায় প্রথম বাঁশের তৈরি মোবাইল টাওয়ার
মোবাইল ফোনের টাওয়ার ব্যবস্থাপনা কোম্পানি ইডটকো প্রথমবারের মত বাঁশের তৈরি একটি মোবাইল টাওয়ার স্থাপন করেছে। গতকাল ঢাকার উত্তরায় একটি বাড়ির ছাদে এই টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে এই টাওয়ারটি তৈরি করা হয়েছে। এর আগে ঢাকার ওয়স্টিন হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এটি প্রদর্শন করা হয়েছিল।
এর মধ্য দিয়ে কোম্পানিটি স্টিলের বিকল্প পদার্থ দিয়ে টেলিযোগাযোগ টাওয়ার নির্মাণের দিকে অগ্রসর হলো।
এডকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুরেশ সিধু জানান, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ গবেষণার পর এই টাওয়ারটি নকশা করেছেন।
সিধু বলেন, চলতি বছরে ঢাকার অন্যান্য বেশ কিছু জায়গায় এমন টাওয়ার স্থাপনের কথা ভাবছে ইডটকো। ২০১৮ সালের মধ্যে বাঁশ সহজলভ্যর কথা মাথায় রেখে প্রযুক্তিটি ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
“বাঁশের টাওয়ার আমাদের সর্বশেষ উদ্ভাবন। প্রাকৃতিক ও টেকসই জিনিসপত্র ব্যবহার করায় পরিবেশের ওপর এর খারাপ প্রভাব কম হবে,” যোগ করেন সিধু।
টাওয়ারটি প্রতি ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়ায় টিকে থাকতে সক্ষম। ঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করলে প্রায় ১০ বছর টিকবে বাঁশের টাওয়ারগুলো। অধ্যাপক আহমেদ বলেন, সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে দেখা গেছে টেলিকম টাওয়ারের জন্য বাঁশ একটি ভালো উপকরণ। “দেশ বিনির্মাণ ও পরিবেশ রক্ষায় আমাদের উদ্যোগে আস্থা রাখায় ইডটকোকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।”
গবেষণায় দেখা গেছে অপ্রক্রিয়াজাত বাঁশে কনক্রিটের ওজন বহনের সক্ষমতা রয়েছে। আর বাঁশের হালকা ওজন দেয় বাড়তি সুবিধা। এর ফলে এটি খুব সহজেই পরিবহন ও স্থাপন করা যায়। এতে ভবনের ওপরও বাড়তি কোন চাপ তৈরি হয় না।
ঘুণ, ছত্রাক ও আবহাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে উত্তরায় স্থাপন করা টাওয়ারটির বাঁশগুলো রাসায়নিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে। এই অঞ্চলে টেলিকম অবকাঠামোয় উদ্ভাবনী ছোঁয়া দিতে এর আগে কার্বন ফাইবার দিয়ে টাওয়ার বানিয়েছিল কোম্পানিটি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শাহজাহান মণ্ডল বলেন, টেলিকম টাওয়ার শেয়ারিং এর জন্য পৃথক নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। তিনি জানান, বাঁশের টাওয়ারে সফলতা পাওয়া গেলে এরকম দেশীয় প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রণোদনা দেওয়া হবে।
টেলিকম অবকাঠামো নির্মাণ কোম্পানি ইডটকো ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কোম্পানিটি ২০১৫ সালের জুন থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে।
Comments