ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত

২০০৪ সালের ঘটনা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী ফাতেমাতুল বোতুল বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এক ডাক্তার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন। ওই বন্ধুর কাছ থেকে ফাতেমা জানতে পারেন ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের কষ্টের কথা।

এই শিশুদের জন্য কিছু করা যায় কী না ভেবে ফাতেমা নিজেই একদিন বিএসএমএমইউ-তে যান। সেখানে গিয়ে তিনি যা দেখেন তাতে তাঁর মন ভেঙে যায়।

ফাতেমা বলেন, “নির্বাক অভিভাবকের মুখ ও অসুস্থ শিশুদের কান্না আমার মন ভেঙে দেয়।”

এর পরই ফাতেমা ও তাঁর চার বন্ধু সুমাইয়া আলী, কানিজ নুসাইবা, খাদিজা রহমান লিজা, ও নিপু ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের আর্থিক ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য ‘ফর আ বিট অব স্মাইল’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।

সংগঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে নুসাইবা বলেন, “আমরা উপলব্ধি করি ওই শিশুদের চিকিৎসার সাথে ভালোবাসারও প্রয়োজন।” এই ভাবনা থেকে পাঁচ বন্ধুর দলটি ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতে প্রতি সপ্তাহে হাসপাতালে যেতে শুরু করেন।

“নিষ্পাপ এই শিশুগুলোর জন্য খেলনা নিয়ে যাই। সেই সঙ্গে তাদের বাবা-মাকে সাহস না হারানোর কথা বলি আমরা।”

হাসপাতালের পেডিয়াট্রিকস হেমাটোলোজি ও অনকোলোজি ওয়ার্ডে এক থেকে ১১ বছর বয়সী যেসব শিশুকে ভর্তি করা হয় তাদের বেশিরভাগই আসে গরিব ঘর থেকে। অনেক সময়ই দেখা যায় তাদের অভিভাবকরা জানেও না সময়মত চিকিৎসা করা হলে শিশুদের ক্যান্সার ভালো হতে পারে।

ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে ‘ফর আ বিট অব স্মাইল’ এর স্বেচ্ছাসেবীরা। ছবি: সংগৃহীত

এই দলের আরেকজন স্বেচ্ছাসেবী সুমাইয়া আলী ব্যাখ্যা করে বলেন কেন তিনি এই কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, “কেমোথেরাপি বা মেরুদণ্ডে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে এমন শিশুদের দিকে তাকানোও খুব সহজ কাজ নয়। অত্যন্ত কষ্টদায়ক দৃশ্য এটি। তাদের যন্ত্রণা থেকেই শক্তি সঞ্চয় করতে হয় আমাদের।”

এই কাজ করতে গিয়ে আরেকটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন তাঁরা। সেটা হলো সব পরিবারের আর্থিক সহায়তার দরকার হয় না। কিন্তু তাদের সবারই ভরসা প্রয়োজন।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

2h ago