বান্দরবানে বন্ধুর গুলিতে পর্যটক নিহত

স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ম্রো জনগোষ্ঠীর ফাঁকা জুমঘরে বন্ধুর গুলিতে ত্বহা বিন আমিন (২২) নামে এক তরুণ পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নতুন ধান ও ফসল রক্ষা এবং বনে হিংস্র জীবজন্তু থেকে রক্ষার জন্য জুমঘরে রাখা গাদাবন্দুক দিয়ে বন্ধুরা খেলছিলেন। এ সময় 'অসাবধানতাবশত' গাদাবন্দুক থেকে গুলি বের হয়ে নিহত হন ত্বহা।

গত ১৯ জুলাই ত্বহা তার চার বন্ধু সাইফুল ইসলাম তামিম, মিরাজ, মীর মাহাদী হাসান নাবিল ও মিনহাজকে নিয়ে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার মাতামুহুরি রিজার্ভ এলাকার কুরুকপাতা ইউনিয়নের দরি পাড়া, ইন্দু-সিন্দু, চাল্লাতলী পাড়া হয়ে তরনী পাড়ার স্মরণী-মরণী এলাকায় ঘুরতে যান। সেখানে তারা ম্রো জনগোষ্ঠীর একটি ফাঁকা জুমঘরে রাত কাটান।

পুলিশ জানায়, গতকাল সোমবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ওই পাঁচ বন্ধু জুমঘরে থাকা ম্রোদের শিকারের জন্য ব্যবহৃত একটি একনলা গাদাবন্দুক নিয়ে ছবি তুলছিলেন। এ সময় ত্বহার বন্ধু মীর মাহাদী হাসান নাবিল 'অসাবধানতাবশত' বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দিলে গুলি ছুটে ত্বহার বুকে লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয়দের সহায়তায় ত্বহার মরদেহ মাতামুহুরি নদীর চর দিয়ে নিচে নামিয়ে আনা হয়। খবর পেয়ে আলীকদম থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

আলীকদম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন জানান, কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রোর মাধ্যমে তারা খবর পান। মরদেহটি বান্দরবান সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, নিহত ত্বহা ঢাকার ডেমরা থানার শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তার বাবা মো. আল-আমিন। তার মৃত্যুর ঘটনায় সঙ্গে থাকা চার বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এবং ঘটনার সময় ব্যবহৃত গাদাবন্দুকটি জব্দ করা হয়েছে।

আলীকদম থানার এসআই রমেশ জানান, দুর্ঘটনাস্থলটি মাতামুহুরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবস্থিত, যা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে। ম্রো জনগোষ্ঠীর সদস্যরা সাধারণত দিনে জুমচাষে গিয়ে বিকেলে পাড়ায় ফিরে আসেন। তাদের খালি জুমঘরেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।

কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো জানিয়েছেন, 'উপজেলা সদরের বাইরে যেকোনো পর্যটক গেলে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করে ট্যুরিস্ট গাইড সঙ্গে নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এই পাঁচ তরুণ প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই দুর্গম এলাকায় গিয়ে খালি জুমঘরে রাত কাটিয়েছেন।'

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম বলেন, 'বন্ধুদের সঙ্গে থাকা অবস্থায় গাদাবন্দুক হাতে নিয়ে অসতর্কভাবে খেলতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আটক চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

1d ago