মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যা: দোষীদের দ্রুত বিচার চায় পরিবার

মানববন্ধন। ছবি: স্টার

রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে পরিবার।

আজ শনিবার আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে তারা এই দাবি তুলে ধরেন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোহাগের বয়স যখন সাত মাস, তখন বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তার বাবা আইউব আলীর। এরপর তার মা আলেয়া বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকা চলে যান। ছোটবেলা থেকেই সংগ্রামের মধ্যে বেড়ে ওঠা সোহাগ পরে ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় 'মেসার্স সোহানা মেটাল' নামে একটি দোকান দেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই দোকান থেকেই জীবিকা নির্বাহ করছিলেন।

সোহাগের বড় বোন ফাতেমা বলেন, 'আমার ভাই গত ১০-১৫ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছিল। সেই ব্যবসা নিয়েই হিংসা, প্রতিহিংসা সবকিছু। ওরা দোকানটা দখল করতে চেয়েছিল। টাকা না দিলে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল বহুদিন ধরে। শেষ পর্যন্ত ওকে পাথর মেরে খুন করা হলো।'

নিহতের স্ত্রী লাকি বেগম বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরেই আমার স্বামীর দোকান থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল কয়েকজন। আমার স্বামী রাজি হননি। তারা সহ্য করতে পারছিল না যে, চাঁদা না দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই তারা আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে। তারা শুধু হত্যা করেই শান্ত হয়নি। মৃত্যুর পরে তার নিথর দেহের ওপরে পাথর দিয়েও অনেক আঘাত করেছে। আমি এ নরপশুদের বিচার চাই।'

'আমরা এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়াব?', কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিল সোহাগের ১৪ বছর বয়সী কন্যা সোহানা।

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ সকাল ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে শুধু হত্যা করেই সন্ত্রাসীরা থেমে থাকেনি। সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও লাশের ওপর চলতে থাকে চরম নৃশংসতা। সন্ত্রাসীরা সবসময়ই ক্ষমতাসীনদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকে। দলীয় পদ-পদবী দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ভাইরাল হলে বহিষ্কার করা হয়। কিছুদিন গেলেই কারো না কারো হাত ধরে পুনর্বহাল হয়। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে এমন নজির এদেশে দেখা যায়নি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, চাঁদা আনতে পারলে পুরস্কার, ধরা পড়লে বহিষ্কার।

এর আগে শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে মরদেহ নেওয়ার পর বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকায় মায়ের কবরের পাশে সোহাগকে দাফন করা হয়।

গত ৯ জুলাই মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনের সড়কে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয় সোহাগকে।

Comments

The Daily Star  | English

Sinner dethrones Alcaraz to capture maiden Wimbledon crown

Jannik Sinner downed Carlos Alcaraz 4-6, 6-4, 6-4, 6-4 on Sunday to win his first Wimbledon title, gaining sweet revenge for his painful defeat in the French Open final.

6h ago