হামলায় পরমাণু স্থাপনায় ‘গুরুতর’ ক্ষতি হয়েছে: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আব্বাস আরাকচি। ছবি: এএফপি

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বোমা হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে 'গুরুতর' ক্ষতি হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।

বৃহস্পতিবার দেওয়া এ সাক্ষাৎকারের বরাতে বিবিসি জানায়, ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করছে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থা।

তবে তার এ বক্তব্যের আগেই ভাষণ দিয়েছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি দাবি করেছিলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ব্যাহত হয়নি।

খামেনি বলেন, 'মার্কিন হামলা কোনো গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জন করতে পারেনি।'

তিনি আরও বলেন, ট্রাম্প বোমা হামলার প্রভাবকে 'অতিরঞ্জিত' করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'বিজয়' অর্জন করায় ইরানি জাতিকে অভিনন্দন জানান।

কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকচির দেওয়া বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র তুলে ধরে।

যদিও তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক বিষয়ে আলোচনা আবার শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

গত ১২ জুন ইসরায়েল হামলা শুরু করার পরেই ইরান নির্ধারিত ষষ্ঠ দফা আলোচনা বাতিল করে।

আরাকচি বলেন, 'আমি স্পষ্ট করে জানাতে চাই, নতুন কোনো আলোচনা শুরু করার বিষয়ে কোনো চুক্তি, বন্দোবস্ত বা আলোচনা হয়নি।'

তিনি বলেন, সরকার এখন 'ইরানের জনগণের স্বার্থে' বিষয়টি বিবেচনা করছে এবং কূটনৈতিক নীতি 'নতুন রূপ' পাবে।

তবে তিনি এই 'নতুন রূপের' ব্যাখ্যা দেননি।

সিএনএন জানায়, ইরানকে আবার আলোচনার টেবিলে আনতে ট্রাম্প প্রশাসন ৩০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচির প্রস্তাবসহ নিষেধাজ্ঞা শিথিল ও আটকে থাকা ইরানি সম্পদ মুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা করছে।

তবে ইরানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলী এই উদ্যোগে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

গত বুধবার ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইইএই) সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধের বিষয়ে একটি বিল অনুমোদন করেছে। এ বিল কার্যকর হলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে জাতিসংঘের পরিদর্শকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যাবে।

ইসরায়েল বলেছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি পরিকল্পনা প্রতিহত করতেই তারা এই সামরিক অভিযান চালিয়েছে।

তবে ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুই বেসামরিক ব্যবহারের জন্য।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এ সংঘাতে জড়ায় এবং ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসপাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করে। এরপর দ্রুত ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলায় ইরানের 'পারমাণবিক কর্মসূচির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। ইরান কয়েক বছর পিছিয়ে গিয়েছে।'

তবে পেন্টাগনের ফাঁস হওয়া প্রাথমিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, হামলার প্রভাব অতটা বেশি নয়, হামলার কারণে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে।

যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন পেন্টাগনের এই মূল্যায়নকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের ১২ দিনের বিমান হামলায় ৬১০ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরানের হামলায় ২৮ জন নিহত হয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Kudos for consensus in some vital areas

Kudos for consensus in some vital areas

If our political culture is to change, the functioning of our political parties must change dramatically.

4h ago