ইরানের ভেতরে ঘাঁটি গেড়ে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা নিষ্ক্রিয় করে মোসাদ

শুক্রবার ইরানে শতাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরায়েল। ছবিতে তেহরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন দেখা যাচ্ছে। ছবি: এএফপি

ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ব্যস্ত রেখে গত শুক্রবার ভোররাতে দেশটির সামরিক ও পারমাণবিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় ইসরায়েল।

'অপারেশন রাইজিং লায়ন' নামের এই হামলায় ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি এবং বিপ্লবী গার্ড প্রধান হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। এদের সঙ্গে ছয় জন পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হওয়ার তথ্য দিয়েছে ইরান।

কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা এই হামলায় ইসরায়েল যেসব অস্ত্র ব্যবহার করেছে তার প্রায় সবই যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। এ সময় ইরানের দিক থেকে কোনো প্রত্যাঘাত দেখা যায়নি। একেবারে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে।

ইসরায়েলের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ওই রাতের অভিযানের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদেরকে উদ্ধৃত করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, এই অভিযানের পরিকল্পনা কয়েক বছর ধরে চলে। এর জন্য ব্যাপক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হয় এবং ইরানের ভেতরে গোপন অত্যাধুনিক অস্ত্র মোতায়েন করা হয়। অভিযানের মূলে ছিল মোসাদ। তারাই ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীদের অবস্থান চিহ্নিত করার কাজটি করে। এর পাশাপাশি, ইরানের কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য একটি গোপন অভিযান চালানো হয়।

ওই কর্মকর্তার মতে, অভিযানের প্রথম ধাপে মোসাদের কমান্ডো ইউনিটগুলো ইরানের ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাগুলোর (সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল ব্যাটারি) কাছাকাছি খোলা জায়গায় উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন গাইডেড অস্ত্র আগেই স্থাপন করে রেখেছিল। যখন বিমান হামলা শুরু হয়, তখন দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সেই অস্ত্রগুলো সক্রিয় করা হয় এবং সেগুলো একযোগে নিখুঁতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে, গোপনে ইরানের ভেতরে নিয়ে যাওয়া যানবাহন থেকে দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়। এর ফলে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো বিনা বাধায় ইরানের আকাশসীমায় গিয়ে হামলা চালাতে পারে।

তৃতীয় ধাপে, অভিযানের আগে মোসাদের এজেন্টরা তেহরানের কাছে একটি ড্রোন ঘাঁটি স্থাপন করেছিলেন। সেখান থেকে বিস্ফোরকবাহী ড্রোন উড়িয়ে আসফাজাবাদ ঘাঁটিতে ইসরায়েলের দিকে তাক করে রাখা ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

5h ago