এফটি প্রতিবেদন

লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ানের সম্পত্তি জব্দ

আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন লন্ডনের দুটি সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ পেয়েছে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি।

ফিনান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) প্রতিবেদন অনুসারে, শেখ হাসিনার শাসনামলে তহবিল আত্মসাতের অভিযোগের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

একটি হলো লন্ডনের ১৭ গ্রসভেনর স্কোয়ারে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, যা ২০১০ সালে ছয় দশমিক পাঁচ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়েছিল এবং অন্যটি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেন্সে অবস্থিত, যা পরের বছর এক দশমিক দুই মিলিয়ন পাউন্ডে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল।

যুক্তরাজ্যের নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বোন এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা গ্রেশাম গার্ডেন্সের অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করতেন, যদিও তিনি এখনো সেখানে থাকেন কি না তা স্পষ্ট নয়।

এনসিএ জানিয়েছে, 'চলমান একটি দেওয়ানি তদন্তের অংশ হিসেবে এনসিএ লন্ডনের ১৭ গ্রোভেনর স্কোয়ার এবং গ্রেশাম গার্ডেন্সে অবস্থিত সম্পত্তির বিরুদ্ধে ফ্রিজিং আদেশ সুরক্ষিত করেছে।'

এর বেশি কোনো তথ্য এনসিএ জানায়নি।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেনের উদ্ধৃতি দিয়ে এফটি জানিয়েছে, সালমান ও আহমেদ রহমান দুদকের অর্থ আত্মসাতের তদন্তে সন্দেহভাজন।

আহমেদ রহমানের একজন মুখপাত্র বলেছেন, 'আমাদের ক্লায়েন্ট যেকোনো কথিত অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন। যুক্তরাজ্যে যেকোনো তদন্ত হলে তিনি অবশ্যই তাতে সহযোগিতা করবেন।'

তারা আরও যোগ করেন: 'এটা সবাই জানে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে, যেখানে শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমরা আশা করব যে, যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এটি বিবেচনা করবে।'

শেখ রেহানা ও সালমান এফ রহমানের মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি, প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে এফটি।

শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ভারতে আশ্রয় নেন। বর্তমানে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

শেখ হাসিনা শাসনামলের পতনের পর নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং পুলিশ, গণমাধ্যম ও বিচার বিভাগের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের চেষ্টা করছেন। তার দাবি, শেখ হাসিনার আমলে আওয়ামী লীগ সেগুলো কুক্ষিগত করে রেখেছিল।

গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর ইউনূস কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আহসান মনসুরকে দায়িত্ব দেন। পাশাপাশি ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ঘনিষ্ট ব্যক্তিরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে, তা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেন মনসুরকে।

অন্তর্বর্তী সরকার এমন ব্যক্তিদের কিছু অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে এবং সম্পদ আটক করেছে এবং অর্থ পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে।

চলতি মাসে অন্তর্বর্তী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে। এফটির প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সমর্থকরা অভিযোগ করেছেন, তারা পুরনো সরকারের কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের নামে রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিচ্ছেন।

টিউলিপ সিদ্দিকও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Secretariat employees protest against 'stricter' govt service law

Secretariat employees protest against 'stricter' govt service law

From 9:30am, officers and staff started gathering in front of building no. 6 at the Secretariat's Badamtola.

59m ago