হাসান-শরিফুলের ঝড়ে বাংলাদেশের ১৬২ রানের পুঁজি

ছবি: এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ড

ইনিংসের প্রথম ওভারে আকিফ রাজাকে চারের পর ছক্কা মারলেন তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু টপাটপ উইকেট খুইয়ে এই আশার চিত্র হাওয়ায় মিলিয়ে গেল দ্রুতই। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে এক পর্যায়ে একশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কাও দেখা দিল বাংলাদেশের। তবে জাকের আলী অনিকের দৃঢ়তা এবং শেষদিকে হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলামের ঝড়ে ধাক্কা সামলে লড়াইয়ের পুঁজি পেল তারা।

বুধবার শারজাহতে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতেও টস হেরে আগে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ। তবে আগের দুই ম্যাচের মতো বড় পুঁজি গড়তে পারেনি দলটি। ৮৪ রানে ৮ উইকেট পড়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রান তুলেছে তারা।

ছয়ে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার জাকের সর্বোচ্চ ৪১ রানের ইনিংস খেলেন। ৩৪ বল মোকাবিলায় ১ চার ও ৩ ছক্কা হাঁকান তিনি। বাঁহাতি ওপেনার তানজিদ করেন বিস্ফোরক ব্যাটিং। মাত্র ১৮ বলে চারটি করে চার ও ছক্কায় ৪০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

অন্য বিশেষজ্ঞ ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে দুই টেলএন্ডার হাসান ও শরিফুল শেষদিকে খেলেন গুরুত্বপূর্ণ ক্যামিও। দশে নামা হাসান ১৫ বলে ৩ ছক্কায় ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। সবার শেষে নামা শরিফুল ৭ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেন অপরাজিত ১৬ রান। দশম উইকেটে স্রেফ ১২ বলে ৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা, যা শেষ জুটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড।

এর মধ্যে শেষ ওভার থেকেই আসে ২৬ রান। দুটি বিমার মারা আরব আমিরাতের অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম ২৩ রান দিলেও ওই ওভার শেষ করতে পারেননি। ৫ বল করে তাকে সরে দাঁড়াতে হওয়ায় শেষ বলটি করেন আলিশান শরাফু। ওই বলে দৌড়ে ৩ রান নেন দুই ব্যাটার।

বাংলাদেশের দুর্দশা শুরু হয় দ্বিতীয় ওভার থেকে। ধ্রুব পরাশরের প্রথম বলেই টাইমিংয়ে গড়বড় করে সীমানার দিকে ক্যাচ দেন পারভেজ হোসেন ইমন। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি হাঁকানো এই বাঁহাতি ওপেনার আগের ম্যাচে ছিলেন না সতর্কতার কারণে। ফিরেই পান গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ।

টিকতে পারেননি অধিনায়ক লিটন। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে প্যাডল সুইপ করতে গিয়ে হায়দার আলীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। আম্পায়ার আউটের সংকেত দিলেও বেশ কিছুক্ষণ ক্রিজে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। দুই বলের মধ্যে আরেক শিকার ধরেন হায়দার। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে তাওহিদ হৃদয়ও হন এলবিডব্লিউ। রানের খাতা খুলতে না পারা এই ডানহাতি ব্যাটার যেন বিশ্বাসই করতে পারেননি যে, তিনি আউট।

একাদশে ফিরে আবার ব্যর্থ হন শেখ মেহেদী হাসান। পাওয়ার প্লের শেষ বলে পাঁচে নেমে ৯ বলে ২ করে বিদায় নেন বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক। হায়দারের বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি। ৬ ওভার শেষে ধুঁকতে থাকা টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৪৯ রান।

অন্যপ্রান্তে সতীর্থদের আসা-যাওয়া চলতে থাকলেও একপ্রান্ত আগলে দ্রুত রান করছিলেন তানজিদ। সপ্তম ওভারের প্রথম তিন বলের মধ্যে তিনি দুটি চার মারার পর ঘটে বিপদ। আকিফের ভেতরে ঢোকা বল ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে ভেঙে দেয় স্টাম্প। ফলে সফরকারীরা পড়ে যায় মহাবিপাকে।

এমন দুরবস্থা থেকে দলকে উদ্ধারে ভূমিকা রাখতে পারেননি শামিম হোসেন পাটোয়ারি ও রিশাদ হোসেন। তারাও যোগ দেন ব্যর্থতার মিছিলে। একাদশে ওভারে মতিউল্লাহ খানের নির্বিষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন শামিম। ১২ বলে তার রান ৯। তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে শূন্য রানে আউট হন রিশাদ। ২ বলে খেলে তিনি পড়েন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে।

চতুর্দশ ওভারে তানজিম হাসান সাকিব ছক্কার চেষ্টায় সগির খানের বলে সীমানার কাছে ক্যাচ দেন। ১২ বলে তিনি করেন ৬ রান। এতে বাংলাদেশের ইনিংস আগেভাগে শেষ হওয়ার আভাস মিলছিল। তবে শেষ দুটি জুটিতে ৭৮ রান যোগ হওয়ায় আরব আমিরাতকে ১৬৩ রানের লক্ষ্য দেওয়া সম্ভব হয়।

রেকর্ড নবম উইকেট জুটিতে ২৬ বলে ৪৪ রান আনেন জাকের ও হাসান। বড় শট খেলতে গিয়ে সগিরের শিকার হন জাকের। এরপর হাসান ও শরিফুল কাড়েন নজর। অন্যদিকে, স্বাগতিকদের পক্ষে হায়দার ৪ ওভারে মাত্র ৭ রানে নেন ৩ উইকেট। মতিউল্লাহ ও সগির পান দুটি করে উইকেট।

Comments

The Daily Star  | English

Protests, road blockades trigger traffic disruptions in Dhaka

Several parts of the capital have been experiencing severe traffic congestion today due to demonstrations and road blockades by different political parties citing various reason

3h ago