অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে এক লড়াকু নারীর জয়

আলি ফ্রান্স। ছবি: সংগৃহীত

গতকাল শনিবার ছিল অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করেছে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি। এত বিপুল ব্যবধানে বিরোধী দলকে পরাজিত করার নজির অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে নেই। ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি পেয়েছে ৮৫টি আসন। অন্যদিকে বিরোধীদল পেয়েছে মাত্র ৩৭টি আসন।

আজ অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রধান খবর ছিল জাতীয় নির্বাচন। সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়ে উঠেছেন লড়াকু এক নারী। পুরো অস্ট্রেলিয়াতে এখন আলি ফ্রান্সকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

তিনিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম নারী, যিনি একটি নির্বাচনে বিরোধী দলীয় নেতাকে হারিয়েছেন। আলি ফ্রান্স একজন আইনজীবী, সাংবাদিক ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন প্যারা-অ্যাথলেট। ব্রিসবেনের পশ্চিমে ডিকসনের আসনে লিবারেল নেতা পিটার ডাটনকে পরাজিত করেছেন তিনি।

ওই আসনটি গত ২৪ বছর ধরে লিবারেল দলের হাতে ছিল। ২০০৪ সাল থেকে বিরোধী দলের নেতা ডাটন আসনটি ধরে রেখেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ ফ্রান্সকে একজন 'অসাধারণ অস্ট্রেলিয়ান' হিসেবে প্রশংসা করেছেন।

২০১১ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার পর ফ্রান্সের পা কেটে ফেলা হয়েছিল। চার বছর বয়সী পুত্র জ্যাকের সঙ্গে শপিং সেন্টারে কার পার্কে ছিলেন। তখন একজন চালক গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মা ও ছেলে। জ্যাক আঘাত থেকে রক্ষা পেলেও ফ্রান্স গুরুতর আহত হন। পরে দুটি অস্ত্রোপচারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তার পা কেটে ফেলা হয়েছিল।

আলি ফ্রান্স গত বছর লিউকেমিয়ায় রোগে আক্রান্ত বড় ছেলে হেনরিকে হারিয়েছেন।

এত প্রতিকূলতার পরও আলি ফ্রান্স অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী একজন প্রার্থীর সঙ্গে ভোটযু্দ্ধে লড়াই করেছেন।

নির্বাচনের প্রচারাভিযানে লিবারেল নেতা পিটার ডাটন আলি ফ্রান্সকে নিয়ে বলেছিলেন, 'হুইলচেয়ারে বসে ভোটারদের দরোজায় কড়া নাড়া সম্ভব নয়।'

উত্তরে ফ্রান্স বলেছিলেন, ইতিবাচক বিষয় হলো, আমি অনেক দরজায় কড়া নাড়তে পেরেছি, ভোটারদের মধ্যে অনেককে সত্যিই জানতে পেরেছি। অনেকের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। মানুষ জেনেছে, আমি কে এবং তাদের জন্য কী করতে পারব।

এদিকে নির্বাচনে হারের পর লিবারেল নেতা পিটার ডাটন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আলি ও আমি বেশ কয়েকটি নির্বাচনে লড়েছি। তিনি এবার সফল হয়েছেন। তিনি ছেলে হেনরিকে হারিয়েছেন, কোনো বাবা-মাকে যেন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়। ডিকসনের স্থানীয় সদস্য হিসেবে তিনি ভালো কাজ করবেন। আমি তার সফলতা কামনা করি।

আকিদুল ইসলাম: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী লেখক, সাংবাদিক

Comments

The Daily Star  | English

Those speaking against Tarique Rahman are enemies of democracy: Fakhrul

"Those who are doing this are carrying out activities to destroy Bangladesh"

1h ago