জিআই সনদ পেল কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি

ছবি: বাসস

কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদিসহ ২৪টি পণ্যকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ দিয়েছে সরকার।

বুধবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫ এর আলোচনা সভায় সংশ্লিষ্টদের এসব সনদ হস্তান্তর করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, এই পণ্যের বাজারজাতকারীদের ন্যায্য স্বীকৃতি এবং পারিশ্রমিক নিশ্চিত করতে হবে। যার ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তা বা উৎপাদনকারীদের ক্ষমতায়ন হবে। এই জন্য সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণ জরুরি। জামদানি শাড়ি দেশের প্রথম পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে। আজ পর্যন্ত ৫৫টি পণ্য জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের তালিকা সমৃদ্ধ করার পর সেগুলো বাণিজ্যিকভাবে বিকশিত করতে হবে। জিআই পণ্য আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে লালন করে।

ওয়ার্ল্ড ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডব্লিউআইপিও) ঘোষিত 'বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫' এর বৈশ্বিক প্রতিপাদ্য ছিল 'আইপি অ্যান্ড মিউজিক: ফিল দ্য বিট অব আইপি'।

এ বছর সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকারসহ সংগীতায়তনের সংশ্লিষ্ট সবার সৃজনশীলতা সংরক্ষণ এবং নতুন উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে মেধাসম্পদের অধিকার সুরক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত ২৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (ব্রাকেটে সনদ নম্বর): নরসিংদীর লটকন (৩২), মধুপুরের আনারস (৩৩), ভোলার মহিষের দুধের কাঁচাদই (৩৪), মাগুরার হাজরাপুরী লিচু (৩৫), সিরাজগঞ্জের গামছা (৩৬), সিলেটের মনিপুরি শাড়ি (৩৭), মিরপুরের কাতান শাড়ি (৩৮), ঢাকাই ফুটি কার্পাস তুলা (৩৯), কুমিল্লার খাদি (৪০), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি (৪১), গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা (৪২), সুন্দরবনের মধু (৪৩), শেরপুরের ছানার পায়েস (৪৪), সিরাজগঞ্জের লুঙ্গি (৪৫), গাজীপুরের কাঁঠাল (৪৬), কিশোরগঞ্জের রাতাবোরো ধান (৪৭), অষ্টগ্রামের পনির (৪৮), বরিশালের আমড়া (৪৯), কুমারখালীর বেডশিট (৫০), দিনাজপুরের বেদানা লিচু (৫১), মুন্সীগঞ্জের পাতক্ষীর (৫২), নওগাঁর নাকফজলি আম (৫৩), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের জামুর্কির সন্দেশ (৫৪) ও ঢাকাই ফুটিকার্পাস তুলার বীজ ও গাছ (৫৫)।

কুমিল্লার প্রবীণ ব্যবসায়ী খাদিঘরের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, পৃথিবীর যেখানে বাঙালি কমিউনিটি আছে, সেখানে খাদি কাপড়ের প্রসার ঘটেছে। কুমিল্লায় যেসব বিদেশি আসেন, তারাও খাদির কাপড় কিনছেন। এটা হাতে তৈরি কাপড় হওয়ায় পরে ন্যাচরাল ফিল পাওয়া যায়।

খাদি কাপড়ের বিশেষত্ব হলো এটি হাতে তৈরি, পরিবেশবান্ধব এবং আরামদায়ক। কুমিল্লার কারিগররা তাদের অনন্য দক্ষতার মাধ্যমে খাদিকে একটি শিল্পে রূপান্তরিত করেছেন।

এ স্বীকৃতির ফলে কুমিল্লার খাদি পণ্যের বিপণন ও রপ্তানির সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও কুমিল্লার খাদি পণ্য নতুন মাত্রা পাবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারিগরদের জীবনমান উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধির সম্ভাবনাও তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh intensifies Covid-19 screening at Benapole amid surge in India

The move comes following an alert issued by the Directorate General of Health Services (DGHS) on June 6

1h ago