আদালতে সাংবাদিক দম্পতি রুপা-শাকিল: ‘আমাদের জামিন দিন, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই’

শাকিল আহমেদ ও ফারাজানা রুপা। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাংবাদিক ফারজানা রুপাকে যখন আনা হলো, তখন তার উদ্বিগ্ন দৃষ্টি খুঁজে বেড়াচ্ছিল স্বামী শাকিল আহমেদকে।

আজ সোমবার সকালে আদালতে রুপাকে যখন আসামিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয় তখনও তার সঙ্গে ছিল দুই নারী পুলিশ সদস্য।

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে পুলিশ ভ্যানে করে ঢাকার আদালতে রুপাকে যখন আনা হয়, তখনো সকালের কুয়াশা কাটেনি। একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক এই প্রধান প্রতিবেদককে আদালতে নারীদের সেলে রাখা হয়।

তার স্বামী একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদকেও গাজীপুরের আরেকটি কারাগার থেকে পৃথক পুলিশ ভ্যানে আদালতে আনা হয় এবং রাখা হয় পুরুষদের সেলে।

আলাদা সেলে রাখার ফলে তারা একে অপরের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।

রুপা ও শাকিল ছাড়াও আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আজ আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসান।

সকাল সোয়া ১০টার দিকে অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে আদালতে আনা হয় শাকিলকে। তার মুখে ছিল হাসি। শাকিলকে দেখে যেন স্বস্তি পান রুপা। তারা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কিছু কথা বলেন।

এর প্রায় মিনিট দশেক পর এজলাসে বসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান।

শুনানির সময় রুপা ও শাকিল নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতা চালিয়ে যান। তবে, মিরপুর মডেল থানায় দায়েরকৃত একটি হত্যা মামলার শুনানির সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলার জন্য আবেদন করেন রুপা।

বিচারক তাকে অনুমতি দেন এবং বলেন, দর্শনের কথা বলবেন না।

রুপা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে আদালতকে বলেন, 'আমার ছোট একটা বাচ্চা আছে। আমি এবং আমার স্বামী ছয় মাস ধরে কারাগারে। আমাদের জামিন দিন, যাতে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি।'

যদিও শেষ পর্যন্ত আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে রাখার আদেশ দেন।

শুনানি শেষে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তায় এই সাংবাদিক দম্পতিকে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পাঠিয়ে দেওয়া হয় কারাগারে।

২০২৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন রুপা ও শাকিল। তারপর থেকে তারা কারাগারে রয়েছেন।

Comments