পুতুলের অপসারণ চেয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছে দুদক

সায়মা ওয়াজেদ পুতুল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালকের পদ থেকে অপসারণের অনুরোধ জানিয়ে সংস্থাটিকে আজ চিঠি পাঠাবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হবে।

দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, কমিশনের তদন্তে অভিযোগ উঠেছে যে শেখ হাসিনা তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে এই পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এই পদের জন্য তার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ছিল না।

চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে শেখ হাসিনা কোনো বৈধ কারণ ছাড়াই তার মেয়েকে একাধিকবার রাষ্ট্রীয় সফরে নিয়ে গিয়েছিলেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, তার মেয়ের অযোগ্যতা ঢাকার জন্য শেখ হাসিনা ২০২৩ সালে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় পুতুলকে ভারতে নিয়ে গিয়েছিলেন। একইভাবে, দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ৭৬তম ডব্লিউএইচও সম্মেলনে শতাধিক বাংলাদেশি কর্মকর্তা ও প্রতিনিধি পাঠানো হয়। এতে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ অপচয় হয়।

দুদকের চিঠিতে আরও বলা হয়, পুতুল তার পরিবারের প্রভাব এবং তার আত্মীয়দের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের আর্থিক ক্ষতি করেছেন এবং দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মায়ের রাজনৈতিক প্রভাবের অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও দুর্নীতিতে জড়িত ছিলেন পুতুল। উদাহরণ হিসবে, তার বিরুদ্ধে পূর্বাচল নিউটাউন প্রকল্পের কূটনৈতিক এলাকায় অবৈধভাবে ১০ কাঠা জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগে দুদক ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।

চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল 'সূচনা ফাউন্ডেশন' নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন, যার মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও ব্যবসায়িক সংস্থা থেকে অর্থ আদায় করেছেন। অভিযোগ করা হয়েছে যে তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ফাউন্ডেশনের জন্য কর ছাড় আদায় করেছেন, যার ফলে সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। দুদক বর্তমানে এসব কার্যক্রম তদন্ত করছে। এছাড়াও, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে তিনি 'অটিজম সেল' এর অপব্যবহার করে ভুয়া প্রকল্প তৈরি করেছেন এবং সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

এসব অভিযোগ থাকার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এমন অভিযোগ থাকা কোনো ব্যক্তির ডব্লিউএইচওর মতো মর্যাদাপূর্ণ পদে থাকা বাংলাদেশের সুনামের জন্য ক্ষতিকর।

এসব বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। এক্ষেত্রে স্বাধীন তদন্ত দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

10h ago