ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পেল যেসব সিনেমা

ছবি: সংগৃহীত

পর্দা নামল ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের।

আজ রোববার এই আয়োজনের সমাপ্তি হয়।

এবার ১০টি ভিন্ন ভিন্ন বিভাগে ৭৫টি দেশের ২০৩টি চলচ্চিত্র নিয়ে ঢাকার পাঁচটি ভেন্যুতে নয় দিনব্যাপী আয়োজিত এই উৎসবে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন ৪৪ জন ভিনদেশি প্রতিনিধি। চীন ও বাংলাদেশের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের উদযাপনের লক্ষ্যে এবার উৎসবের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল সেকশনটি চীনা চলচ্চিত্রের জন্য উৎসর্গ করা হয়। একইসঙ্গে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তন করিডরে চীনা চলচ্চিত্র পোস্টার এক্সিবিশনের বিশেষ আয়োজন করা হয়।

এ ছাড়া দুই দিনব্যাপী একাদশ সিনেমায় নারী শীর্ষক সম্মেলন ছিল উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ। উৎসবের ২৩তম আসরে এবার তৃতীয় বারের মতো আয়োজন করা হয় মাস্টার ক্লাসের। বাংলাদেশসহ সার্বিয়া, চীন ও নরওয়ের চলচ্চিত্র বোদ্ধারা ওই মাস্টারক্লাসটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র সমালোচক বিধান রিবেরুর তত্ত্বাবধানে। এ ছাড়া এবার প্রখ্যাত রাশিয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক আলেক্সেই ফেদোরচেনকোর 'রেট্রোস্পেকটিভ' আয়োজন করা হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ক্ষেত্রে এবং ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্রের জন্য তিনি বেশ কিছু ভবিষ্যৎ পদক্ষেপের কথা জানান। পার্মানেন্ট ভেন্যু, নির্দিষ্ট বাজেট ও বছরব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কাজের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

সমাপনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ।

সমাপনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয় পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্রগুলোর নাম—

উৎসবে শ্রেষ্ঠ শিশু চলচ্চিত্রে 'বাদল রহমান পুরস্কার' বিজয়ী হয়েছে মাইকেল লুকাচেভস্কি পরিচালিত রাশিয়ার সিনেমা 'কিতালিকতাখ কিরদালিম' (হোয়্যার দ্য হোয়াইট ক্র্যান্স ড্যান্স)।

বিশেষ অডিয়েন্স পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র হয়েছে জোসেলিত অলতারেজোস নির্মিত ফিলিপাইনের সিনেমা 'গুয়ার্দিয়া দ্য অনর' (দ্য গার্ডিয়ান অব অনর)।

সেরা অডিয়েন্স পুরস্কার জয়ী চলচ্চিত্র হয়েছে সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত ভারতের সিনেমা 'পদাতিক'।

উইমেন ফিল্মমেকারস সেকশনে বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে ক্লাভদিয়া কোরশুনোভা পরিচালিত সিনেমা তাকোই ইমেনো ডেন (নট জাস্ট অ্যানি ডে)। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন দুটি দেশ মলডোভা ও রাশিয়া।

সেরা শর্ট ফিল্ম পুরস্কার পেয়েছে মারিয়া বোবেভা নির্মিত বুলগেরিয়ার সিনেমা 'স্কারলেট'।

সেরা ফিচার ফিল্ম পুরস্কার পেয়েছে ফ্রান্সের সিনেমা 'কুমভা' (হুইচ কাম ফ্রম সাইলেন্স), যার পরিচালক সারাহ মালেগোল।

সেরা পরিচালক পুরস্কার পেয়েছে আগুস্টিনা সানচেজ গ্যাভিয়ের। সিনেমার নাম 'নুয়েস্ত্রা সোমব্রা' (আওয়ার ওউন শেডো)। সিনেমাটি আর্জেন্টিনা ও জার্মানির যৌথ প্রযোজনা।

স্পিরিচুয়াল ফিল্ম সেকশনে সেরা শর্ট ফিল্ম পুরস্কার পেয়েছে লুইস ক্যাম্পোস পরিচালিত পর্তুগালের সিনেমা 'মন্টে ক্লেরিগো'।

স্পেশাল মেনশন পুরস্কার পেয়েছে ভারতের সিনেমা 'স্বাহা' (ইন দ্য নেম অব ফায়ার)। সিনেমার পরিচালক অভিলাষ শর্মা।

সেরা ফিচার ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড জিতেছে ইভান সোসনিন পরিচালিত রাশিয়ার সিনেমা 'প্রিশেলেক' (দ্য এলিয়েন)

বাংলাদেশ প্যানোরামা ট্যালেন্ট সেকশনে তিনটি সিনেমা পুরস্কৃত হয়েছে। সেরা চলচ্চিত্র (ফিপরেস্কি জুরি) হয়েছে মনন মুনতাকা পরিচালিত 'আ লেজি মুন' সিনেমা।

ফার্স্ট রানারআপ হয়েছে আসিফ ইউ হামিদ পরিচালিত 'ফুলেরা পোশাক পরে না' (ডিফাই) এবং সেকেন্ড রানার আপ হয়েছে মোবারক হোসেন পরিচালিত 'পৈতৃক ভিটা' (হেরেডিটারি হোমস্টেড)।

এছাড়াও বাংলাদেশ প্যানোরমা পূর্ণ দৈর্ঘ্য বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র (ফিপরেস্কি জুরি) হয়েছে মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত 'প্রিয় মালতী' সিনেমা। সিনেমার পরিচালক শঙ্খদাস গুপ্ত।

এশিয়ান ফিল্ম কম্পিটিশন সেকশনে সেরা চিত্রনাট্য পুরস্কার পেয়েছে তাকাতো নিশি ও নোরিকো ইউওসা। তাদের জাপানি সিনেমা 'পারফর্মিং কাওরু'স ফিউনারেল' সিনেমার জন্য এই পুরস্কার পেয়েছেন।

সেরা চিত্রগ্রাহক পুরস্কার পেয়েছেন দিলসাত কানন। তুরস্কের 'ডেমো কে পেলে গোজান বেনি জের' (হোয়্যান দ্য ওয়ালনাট লিভস টার্ন ইয়েলো) সিনেমার জন্য পুরস্কার পেয়েছেন।

সেরা অভিনেত্রী পুরস্কার পেয়েছেন ডিমেন জান্ডি। ইরান ও তাজিকিস্তানের যৌথ প্রযোজনার সিনেমা 'মেলডি'তে অভিনয় করে সেরার পুরস্কার পেয়েছেন।

সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন রায়ান সারলক। ইরানি সিনেমা 'তাবেস্তান-ই হামান সাল' (সামার টাইম) এর জন্য পুরস্কার পেয়েছেন। এই সিনেমার জন্য বিশেষ মেনশন পুরস্কার পেয়েছেন পরিচালক মাহমুদ কালারি।

সেরা পরিচালক পুরস্কার পেয়েছেন চীনা পরিচালক হাওফেং শু ও জুনফেং শু। তার সিনেমার নাম 'ম্যান কিয়ান বাও দি' (১০০ ইয়ার্ডস)।

সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছে শোকির খলিকভ পরিচালিত উজবেকিস্তানের সিনেমা 'ইয়াকশানবা' (সানডে)।

সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরু হয় জলতরঙ্গ নৃত্যদলের অসাধারণ নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে।

সমাপনী সিনেমা হিসেবে প্রদর্শিত হয় ইকবাল এইচ চৌধুরী পরিচালিত সিনেমা 'বলী'। এটিই ছিল সিনেমাটির বাংলাদেশের প্রিমিয়ার।

Comments

The Daily Star  | English

First phase of Ijtema ends with ‘Akheri Munajat’

The final prayer was conducted by Maulana Zubair, top spiritual leader of Shura-e-Nezami, Bangladesh

1h ago