ঝিনাইদহে চেয়ারম্যান শহিদুলকে হত্যার ঘটনা হিন্দু হত্যা বলে অপপ্রচার
গত আগস্ট মাসে এক হিন্দু বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দাবিতে দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
কিন্তু ভিডিওটি ঝিনাইদহের এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনকে হত্যার পর পায়রা চত্বরে ঝুলিয়ে পেটানোর দৃশ্য বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম রিউমর স্ক্যানার।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রচারিত ভিডিওগুলো বাংলাদেশে কোনো হিন্দু বৃদ্ধকে হত্যা করে মূর্তির সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখার নয়। প্রকৃতপক্ষে, এগুলো গত আগস্টে ঝিনাইদহের পোড়াহাটী ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনকে হত্যার পর পায়রা চত্বরের মূর্তির সঙ্গে ঝুলিয়ে পেটানোর দৃশ্য।
অনুসন্ধানে গত ৫ আগস্ট রুকন শেহাবি রুকন এবং আরজে মুন নামক দুটি অ্যাকাউন্ট থেকে দুটি ভিডিও পাওয়া যায়। ওই ভিডিওগুলোর সঙ্গে আলোচিত ভিডিওগুলোর মিল লক্ষ্য করা যায়।
ওই পোস্ট দুটিতেই দাবি করা হয়েছে, ভিডিওতে থাকা মরদেহটি ঝিনাইদহের হিরন নামের একজন চেয়ারম্যানের।
নাম এবং স্থানের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ঢাকা পোস্টের ওয়েবসাইটে গত ৫ আগস্ট 'গুলি করেও বাঁচতে পারলেন না আলোচিত হিরণ চেয়ারম্যান' শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিকেলে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা ৯ নম্বর পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরন ও তার গাড়িচালক আক্তার হোসেনকে কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর হিরনের লাশ শহরের কেন্দ্রস্থল পায়রা চত্বরে টাঙিয়ে রাখা হয়।
একইদিন কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ৫ আগস্ট বিকেলে বিক্ষুব্ধরা হিরণের বাড়ি ঘেরাও করলে তাদের ওপর গুলি চালানো হয়, এতে কয়েকজন আহত হন। পরে জনতা বাড়িতে আগুন দিলে হিরণসহ চারজন আগুনে পুড়ে মারা যান। বিক্ষুব্ধ জনতা হিরণের মরদেহ ভ্যানে করে শহরের পায়রা চত্বরে নিয়ে যায়।
বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে রিউমর স্ক্যানার টিম গুগল ম্যাপ থেকে পায়রা চত্বরের ছবি সংগ্রহ করে এবং এর সঙ্গে ভিডিওগুলোতে দৃশ্যমান স্থাপনার তুলনা করে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওতে দৃশ্যমান স্থাপনার সঙ্গে পায়রা চত্বরের অবকাঠামোর হুবহু মিল রয়েছে।
Comments