সানা বিমানবন্দরে ইসরায়েলি হামলা, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। ফাইল ছবি: এএফপি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। ফাইল ছবি: এএফপি

ইয়েমেনের রাজধানী সানা ও হোদেইদা শহরের বিমানবন্দরে বড় আকারে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলার সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান।

গতকাল বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

ইসরায়েলের দাবি, হুতি বিদ্রোহীদের সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের জন্যই এই হামলা।

আটক থাকা জাতিসংঘের কর্মীদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করার জন্য ইয়েমেনে গিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাস। সংস্থার এক কর্মী আহত হলেও অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন গেব্রিয়েসাস।

সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া বার্তায় তিনি জানান, তাদের কয়েকজন কর্মী ইয়েমেনে আটকে পড়েছিলেন। তাদের উদ্ধার করে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু জাতিসংঘের বিমান সানা বিমানবন্দর থেকে উড়তেই পারেনি। তার আগেই ইসরায়েল সেখানে আক্রমণ চালায়।

ঘটনায় একজন জাতিসংঘের কর্মীও আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আপাতত বিমানটি আটকে পড়েছে কারণ, হামলায় রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে তা ঠিক না হওয়া পর্যন্ত জাতিসংঘের মিশন বন্ধ রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

হামলায় সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মূল রানওয়ে, কন্ট্রোল টাওয়ার ও বেশ কয়েকটি উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার পর কয়েকটি উড়োজাহাজে আগুন ধরে যায়।

ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হুতিদের টিভি চ্যানেল আল-মাশিরাহ।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ নিশ্চিত করেছে, তারা সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হেজিয়াজ ও রাস কানাতিব বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র ও পশ্চিম উপকূলের আল-হোদেইদাহ, সালিফ ও রাস কানাতিব বন্দরে হুতিদের

ইসরায়েলের দাবি, এসব অবকাঠামোর মাধ্যমে ইরান ও তার মিত্রদের কাছ থেকে চোরাকারবারের মাধ্যমে ইয়েমেনে অস্ত্র প্রবেশ করানো হোত।

সানায় সাত দফা ও হোদেইদায়ে তিন দফা হামলা চালানো হয়। এ সময়য় বেশ কয়েক ডজন ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান দেখা যায় আকাশে।

সানা বিমানবন্দর। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে
সানা বিমানবন্দর। ফাইল ছবি: ডয়চে ভেলে

হুতি মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদেল সালাম এই হামলাকে 'ইয়েমেনের জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ' হিসেবে অভিহিত করেন।

এর আগে তেল আবিবে বেশ কয়েক দফা হামলা চালায় ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুতি। একটি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যে আঘাত হানলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত অহ্ন ৩০ জনেরও বেশি মানুষ।

গাজার যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই হামাসের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এডেন উপসাগর ও লোহিত সাগরে নৌচলাচল বিঘ্নিত করার অভিযানে নামে হুতিরা।

হুতিরা বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা শুরু করে। লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে হুতিদের বিরুদ্ধে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। সঙ্গে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও।

আইডিএফের দাবি, এখন পর্যন্ত হুতিরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলায় ২০০ ব্যালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৭০টি ড্রোন ব্যবহার করেছে।

এ নিয়ে মোট চারবার ইয়েমেনের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালাল ইসরায়েল।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হুতি বিদ্রোহীদের আক্রমণ বন্ধ করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ইরানকেও জবাব দেওয়া হলো বলে জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।

Comments

The Daily Star  | English
government action against rising crime

Nationwide combing operation launched to curb rising crime: home adviser

The adviser announced the decision after a meeting on law and order following a series of alarming incidents

1h ago