বগুড়ায় র্যাবের পোশাকে শিক্ষার্থীকে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়কারী ২ নারী আটক
শুক্রবার রাতে বগুড়া জহুরুল নগরের একটি ছাত্রাবাস থেকে শাহ সুলতান কলেজের এক শিক্ষার্থীকে র্যাবের পোশাকে থাকা একদল লোক অপহরণ করে নিয়ে যায়। তার মুক্তিপণ আদায়ের সময় দুইজন নারীকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আটক করেছে পুলিশ।
এই দুই নারী আটকের পরে অপহৃত ফেরদাউস সরকারকে (২৫) অপহরণকারীরা ছেড়ে দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
আটক দুই নারীকে নারায়ণগঞ্জ থেকে এবং অপহৃত শিক্ষার্থীকে নরসিংদী মাধবদী থেকে বগুড়ায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঈন উদ্দীন।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনার পরে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায় অপহরণের সময় ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে টেনে হিঁচড় ছাত্রাবাস থেকে নিয়ে যাচ্ছেন র্যাবের পোশাকে থাকা তিন জন।
র্যাব তার স্বামীকে নিয়ে যায়নি নিশ্চিত হওয়ার পর ভিকটিমের স্ত্রী মাহবুবা বেগম শনিবার সকালে বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায় শনিবার ভিকটিমের মোবাইল থেকে ফোন করেন অপহরণকারীরা। তারা ভিকটিমের পরিবারের কাছে সাত লাখ টাকা দাবি করেন। সেদিনই ফেরদৌসের পরিবার বিকাশের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ ৭৫ হাজার দিলেও ভিকটিমকে ছাড়েনি অপহরণকারীরা।
এর পরে আরও এক লাখ টাকা পাঠানোর পর সেই টাকা তুলতে গেলে গতকাল সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশ দুই নারীকে আটক করে।
এই দুই নারীকে আটকের পরে অপহরণকারীরা ফেরদৌসকে ছেড়ে দেন। নরসিংদী মাধবদী উপজেলার একটি ফার্মেসি থেকে স্থানীয় লোকজন এবং সাংবাদিকরা ফেরদৌসের হাতে হাতকড়ার দাগ দেখে শনাক্ত করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ সকালে ভিকটিমের বাবা ফোনে জানান তারা বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এই সময় ফেরদৌসের সঙ্গেও কথা হয়।
ফেরদৌস দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপহরণকারীরা র্যাবের কেউ ছিলেন না। র্যাবের পোশাক পরে তারা আমাকে অপহরণ করে।'
কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে ফেরদৌস বলেন, 'আমার চোখ বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল। আমি বুঝতে পারিনি কোথায় নিয়ে গেছে। তবে অপহরণের সময় ও পরে তারা আমাকে নির্যাতন করেছে। তারা নাকি আমাকে তিন মাস ধরে টার্গেট করেছিল। এটুকু জানতে পেরেছি।'
বগুড়া র্যাব-১২-এর কোম্পানি কমান্ডার এম আবুল হাশেম সবুজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'র্যাবের কোনো সদস্য এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। একটি প্রতারক চক্রের সদস্যরা এই কাজ করেছেন। পুলিশের পাশাপাশি আমরাও এই চক্রটিকে ধরতে কাজ করছি।'
Comments