রোববার নারায়ণগঞ্জে যাত্রী অধিকার ফোরামের অর্ধদিবস হরতাল
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বাসভাড়া কমানো এবং শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী রোববার নারায়ণগঞ্জ শহরে অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করেছে নারায়ণগঞ্জ যাত্রী অধিকার ফোরাম।
আজ শুক্রবার বিকেলে শহরের চাষাঢ়া এলাকায় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে সংগঠনটির আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
যাত্রী অধিকার ফোরাম গত ২৯ অক্টোবর থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করে আসছে।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নয়টি কর্মসূচি ঘোষণা করে যাত্রী অধিকার ফোরাম।
বাসভাড়া কমানোর দাবিতে সংগঠনটি ২৯ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারণা, নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময়, মিছিল, সমাবেশ ও মশাল মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এ ছাড়া, দাবি মানা না হলে আগামী ১৭ নভেম্বর অর্ধদিবস হরতালের ডাকও দেওয়া হয়।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে নন-এসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া সর্বোচ্চ ৬৫ টাকা নির্ধারণের দাবি সংগঠনটির। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভাড়া অর্ধেক করারও দাবি জানিয়ে আসছেন সংগঠনটির নেতারা।
সমাবেশে রফিউর রাব্বি বলেন, 'এই দাবি হুট করে উত্থাপন করা হয়নি। নারায়ণগঞ্জে বাসভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে রাখার জন্য বহু বছর আমরা সংগ্রাম করছি। পরিবহনকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি দীর্ঘ দিনের প্রক্রিয়া। বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনামলে এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শেখ হাসিনার আমলে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া অযৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।'
'আরটিসির সভাপতি জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক আমাদের নিয়ে কয়েকবার বসেছেন। আমরা বলেছি, কিলোমিটার প্রতি যে ভাড়া সরকারিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে সেটি অযৌক্তিক। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের দলীয় ক্যাডারদের, মাফিয়াদের সুবিধা দেওয়ার জন্য এই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। যে স্বৈরাচারী নেত্রীকে দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে, তার প্রজ্ঞাপন কেন পালন করতে হবে,' প্রশ্ন তোলেন তিনি।
রাব্বি আরও বলেন, 'গত এপ্রিলের ওই প্রজ্ঞাপনে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে সাড়ে ১৯ কিলোমিটারে ভাড়া দেখানো হয়েছে ৫৩ টাকা। অথচ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫৪ টাকা। এদিকে ৫৫ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে বিআরটিএ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে দৈনিক ৫০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। ফলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতিদিন এক লাখ টাকা অতিরিক্ত আদায় হয়। সাধারণ মানুষের পক্ষে অবস্থান না করে এখনো মালিকদের পক্ষে অবস্থান করছে সরকার।'
যোগাযোগ করা হলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, 'আমরা বাসভাড়া নতুনভাবে নির্ধারণের বিষয়ে মালিক ও যাত্রী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে একাধিকবার বসেছি। উভয়পক্ষই তাদের মতামত দিয়েছেন কিন্তু এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে, দুএক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে।'
Comments