‘চোর সন্দেহে’ ২ যুবককে গাছে বেঁধে পিটিয়ে ক্ষতস্থানে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যাতন
গাজীপুরের শ্রীপুরে চোর সন্দেহে দুই যুবককে গাছে বেঁধে পিটিয়ে ক্ষতস্থানে মরিচ গুঁড়া দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলাও রুজু হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার মাইনুদ্দিন সোহেল ও আলমগীর হোসেন শ্রীপুরের ইরেক্টস্ পুলস অ্যান্ড স্টাকচারস্ লিমিটেডের শ্রমিক।
তাদের নির্যাতনের ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু হয়েছে বলে আজ শুক্রবার বিকেলে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন।
তবে, আসামিদের নাম-ঠিকানা জানাননি ওসি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। দুই মিনিট ১৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিতে দুই যুবককে আর্তনাদ শোনা যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাইনুদ্দিন ও আলমগীরকে গত মঙ্গলবার সকালে শ্রীপুরের আবদার গ্রামের সাইলাপাড়া এলাকার ফাইজুদ্দিনের বাড়ির পাশে আটকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়।
আহত মাইনুদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতের শিফটে কাজ শেষে ভোর ৬টার দিকে কারখানার মূল ফটকের বাইরে চা খেতে যাই। সেসময় কয়েকজন আমাদের চোর সন্দেহে জোর করে ধরে নিয়ে যান। পরে একটি বাড়ির পাশে নিয়ে গাছে বেঁধে রাখা হয়। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চুরির অপবাদ দিয়ে আমাদের পেটানো হয়।'
'সাইলাপাড়া এলাকার ফাইজুদ্দিন ও তার বাড়ির লোকজন আমাদের নির্যাতন করেছেন। তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে প্রথমে জখম করেন। পরে সেই ক্ষতস্থানে ও চোখে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে দেন,' বলেন তিনি।
মাইনুদ্দিনের ভাই মহিউদ্দিন বলেন, 'অনেকের হাতে-পায়ে ধরলেও কেউ তাদের ছাড়তে রাজি হয়নি। এক লাখ টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে নির্যাতনকারীরা জানায়। বাধ্য হয়ে বাড়িতে ফোন দিয়ে স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা এনেছি। সেই টাকা নির্যাতনকারীদের দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।'
যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত ফাইজুদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত শুক্রবার দুই যুবককে আমার অটোরিকশা ভাড়া দেই। তাদের কাছ থেকে অটোরিকশা ছিনতাই হয়। আমি ওই অটোরিকশা উদ্ধারে চালককে নিয়ে বিভিন্ন জায়গাতে যাই। একপর্যায়ে চালকই ওই দুই যুবককে শনাক্ত করে। পরে তাদের ধরে এনে এলাকার মানুষ মারধর করেছে। আমার কিছুই করার ছিল না।'
Comments