'রদ্রি বাহ বলার মতো কিছুই করেনি'

এবার ব্যালন ডি'অর বিজয়ীর নাম ঘোষণার আগে থেকেই শুরু হয় নানা বিতর্ক। কারণ ততক্ষণে খবর পৌঁছে যায় ম্যানচেস্টার সিটির রদ্রি পাচ্ছেন এই মর্যাদার ট্রফি। অন্যদিকে এই ট্রফি জিতবেন বলে ধরেই নিয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। শেষ পর্যন্ত জিততে না পারায় বেজায় হতাশ হয়েছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

হতাশা এতোটাই বিস্তৃত ছিল যে ভিনিসিয়ুস সহ ক্লাবের কোনো খেলোয়াড় কিংবা কর্মকর্তা যাননি ব্যালন ডি'অর অনুষ্ঠানে। পরে সামাজিকমাধ্যমে আরও ক্ষুরধার হয়ে ফিরে আসার প্রত্যয় দেখান এই ফরোয়ার্ড। তবে সাবেক সতীর্থ করিম বেনজেমার কাছে হতাশা লুকাতে পারেননি তিনি।

ভিনি ব্যালন ডি'অর না পাওয়ায় তাকে কল দিয়েছিলেন বেনজেমা। তার কথোপকথনের বর্ণনা করে এই ফরাসি বলেন, 'আমি ভিনির সাথে কথা বলেছি; ও স্বাভাবিকভাবেই দুঃখিত।... রদ্রির বিরুদ্ধে আমার কিছুই নেই, সে একজন ভালো খেলোয়াড়...কিন্তু আমি এখন সোফায় বসে টিভি দেখছি এবং রদ্রি এমন কিছু দেখিনি যা দেখে তুমি বলতে পারবে, বাহ!'

নিজেও ভিনিসিয়ুসকে ব্যালন ডি'অরের প্রাপ্য বলে মন্তব্য করেন বেনজেমা, 'গত বছর, যখন রিয়াল মাদ্রিদ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন ছিল, ভিনিসিয়ুস প্রতিটি খেলায় নিষ্পত্তিমূলক ছিল। তাই আমি মনে করি না যে ভিনিসিয়ুসের চেয়ে বেশি প্রাপ্য আর কেউ ছিল।'

তবে পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। রদ্রি মূলত মিডফিল্ডার। তাও আবার একজন হোল্ডিং মিডফিল্ডার বা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। নামেই বলে দেয় তার প্রধান কাজ হচ্ছে রক্ষণে সহায়তা করা। তবে একজন আদর্শ ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে শারীরিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি ট্যাকলিংয়ে পারদর্শী ও সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন। ক্লাব ও জাতীয় দলের প্রাণভোমরাই ছিলেন তিনি।

একই সঙ্গে কাউন্টার অ্যাটাক রুখে দেয়ার ক্ষমতা থাকতে হয় ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারদের। প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামলে মিডফিল্ডে বল জিতে সেই বল সরবরাহ করতে হয় অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কিংবা ফরোয়ার্ডদের কাছে। কাজ করতে হয় আক্রমণ ও রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের সংযোগকারী হাব হিসেবে। এর সঙ্গে লং রেঞ্জে গোল করার ক্ষমতাও তাদের অন্যতম গুণ। এই সকল গুণেই গুণান্বিত রদ্রি।

আর পরিসংখ্যানই বলে দেয় রদ্রি কতোটা দক্ষ। অপ্টার পাওয়ার পয়েন্টিংয়ে গত মৌসুমে রদ্রি পেয়েছেন ৭.৮৯। যেখানে ভিনিসিয়ুস ৭.৩৬। নিজের কাজের পাশাপাশি আক্রমণেও সাহায্য করে ক্লাব ও জাতীয় দলে মোট ৬৩টি ম্যাচে অ্যাসিস্ট করেছেন ১৬টি। সঙ্গে গোলও ১২টি! ১১টি বড় সুযোগ তৈরি করে তার গোলপ্রতি গুরুত্বপূর্ণ পাস ১.৬৭। যা একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারের জন্য অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যানই বটে।

আর চারবার শিরোপা উঁচিয়ে ধরতে পেরেছেন রদ্রি। স্পেনের হয়ে জিতেছেন ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। বিশ্বকাপের পরই যে আসরকে মানা হয় সবচেয়ে মর্যাদার। সে আসরের সেরা খেলোয়াড়ও রদ্রি। আর ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ এবং উয়েফা সুপার কাপ জিতেছেন এই মিডফিল্ডার।

অন্যদিকে ভিনিসিয়ুস একজন উইঙ্গার।একজন উইঙ্গারের মূল কাজ স্ট্রাইকারদের দিয়ে গোল করানো। পাশাপাশি নিজেও গোল করা। গত মৌসুমে ব্রাজিল ও রিয়ালের হয়ে ৪৯টি ম্যাচ খেলে ভিনির অ্যাসিস্ট ১১টি। যেখানে স্পষ্টই পিছিয়ে আছেন রদ্রির থেকে। ২৬টি গোল করেছেন। জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা ও স্প্যানিশ সুপার কাপ। তবে জাতীয় দলে একেবারেই বিবর্ণ ছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান।

Comments

The Daily Star  | English

Army chief meets Khaleda Zia

Chief of Army Staff General Waker-uz-Zaman met BNP Chairperson Khaleda Zia tonight

2h ago