বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন: আহত আরও এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু
গত ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সংঘর্ষ চলাকালে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলায় আহত শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদ ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তিনি বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির বিবিএর শিক্ষার্থী ছিলেন।
রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাউসার মাহমুদ মারা যান বলে জানিয়েছেন তার ছোট ভাই সুলতান মো. নাইম। আজ সোমবার বিকেলে নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন মোগলটুলী এলাকায় তার দাফন হওয়ার কথা।
কাউসার লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের আব্দুল মোতালেবের ছেলে। আব্দুল মোতালেব চট্টগ্রাম কমার্স কলেজ রোডে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে থাকেন।
এ নিয়ে চট্টগ্রামে গত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত মোট ১০ জন নিহত হলেন।
সুলতান মো. নাইম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার ভাই গত ৪ আগস্ট নিউমার্কেট এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাকে পেটায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের লোকজন। মার খেয়ে আহত হয়ে বাসায় ফিরে এলেও সে বাবার ভয়ে বিষয়টি গোপন করে যায়। সন্ধ্যার দিকে সে খারাপ লাগছে বলে বাসার মধ্যে অজ্ঞান হয়ে যায়।'
'এরপর প্রথমে তাকে নগরীর আগ্রাবাদ ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল নিলে সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় একই হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউতে থাকাকালীন তার শারীরিক অবস্থার পুনরায় অবনতি হলে কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম সেনানিবাসকে বিষয়টি জানালে তারা তাকে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তর করে।'
তিনি আরও বলেন, '১৭ দিন পর জ্ঞান ফিরে এলে সে মারধোরের ঘটনাটি খুলে বললে তখন আমরা পুরো বিষয়টি জানতে পারি। মারধরের ফলে তার দুটো কিডনি অকেজো হয়ে গিয়েছিল। এ ছাড়া অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়।'
সুরতহাল প্রতিবেদনে হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটের কথা উল্লেখ করে মৃত্যুর সম্ভব্য কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, কাউসার মাহমুদ তীব্র মূত্রনালির সংক্রমণ, তীব্র কিডনি ইঞ্জুরি, একাধিক অঙ্গের কর্মহীনতার কারণে মৃত্যু হতে পারে। ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানার এসআই শাহিনুজ্জামান এই সুরতহাল প্রতিবেদন লিখেছেন এবং পোস্টমর্টেমে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয় হবে বলে তিনি লিখেছেন।
Comments