ফেনী

ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা চলছে খোলা আকাশের নিচে

বন্যা পরবর্তী সময়ে ফেনী জেলায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ।
ফেনী সদর হাসপাতালের মাঠে খোলা আকাশের নিচে ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা চলছে। ছবি: স্টার

ডায়রিয়া আক্রান্ত মেয়েকে নিয়ে রোববার সকাল ৮টার দিকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে আসেন নাছিমা আকতার। 

শয্যা না থাকায় সন্তানকে হাসপাতালের মাঠে খোলা আকাশের নিচে একটি তোষকে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আজ রোববার বিকেল ৩টার দিকে কথা হয় লালপোল এলাকার বাসিন্দা নাছিমার সঙ্গে। তার দুই বছর বয়সী মেয়ে রাবিয়া সুলতানার হাতে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল।

নাছিমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ডায়রিয়া ওয়ার্ড রোগীতে ভরে গেছে। ওয়ার্ডের ভেতরে মেঝেতেও জায়গা নেই। তাই এখানেই মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছি।'

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেছেন নার্সরা। ছবি: স্টার

নাছিমার স্বামী সেলিম বলেন, 'ঘরে পানি ওঠায় ৭ দিন এক বাড়ির ছাদে ছিলাম। সেখান মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজ ১২ দিন ঘর ছাড়া।'

দুপুরে ফেনী সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন খোলা মাঠে অন্তত ২০ জন রোগীকে অস্থায়ী বেডগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

সদর উপজেলার কাশিমপুর থেকে ছেলে ফাহিমকে নিয়ে আজ সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালে আসেন রোকসানা আকতার।

তিনি বলেন, 'ওয়ার্ডে গিয়ে কাকুতি মিনতি করলে নার্সরা একটু দেখে। খোলা মাঠে পড়ে আছি। মাঠে কেউ দেখতে আসে না।'

হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৯ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।

বন্যা পরবর্তী সময়ে ফেনী জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের ষষ্ঠতলায় ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার দুপুর পর্যন্ত সেখানে ১০৯ জন রোগী ভর্তির পাশাপাশি মাঠ, পুরোনো ডায়রিয়া ওয়ার্ড মিলে হাসপাতালে অন্তত ২৫০ জন রোগী ভর্তি আছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সামনে গোলাকৃতির একটি বেঞ্চে বসিয়ে সিরিয়াল অনুযায়ী স্যালাইন দিচ্ছিলেন নার্সরা।

হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ সবিতা রায় ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা সাধ্য অনুযায়ী রোগীদের সেবার করার চেষ্টা করছি। তবে লোকবল সংকটের কারণে তারা যথাযথ সেবা দিতে পারছি না।'

জানতে চাইলে ফেনী সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মো. জালাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্বাভাবিকের তুলনায় ৭-৮ গুণ বেশি রোগী আসছে। আমরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। স্যালাইন, ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

3h ago